World Snake Day: কাল কেউটের বাংলায় ভয়ঙ্কর ব্ল্যাক মাম্বার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত উইল করেছেন বিভূতিভূষণ

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। একেবারে পাকাপোক্ত উইল। যে উইলের বলে আফ্রিকা তথা বিশ্বের সর্বাধিক ভয়ঙ্কর সাপেদের জাতভাই ব্ল্যাক মাম্বা পেয়েছে বঙ্গভূমিতে জায়গা! এ এমন সত্ব…

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। একেবারে পাকাপোক্ত উইল। যে উইলের বলে আফ্রিকা তথা বিশ্বের সর্বাধিক ভয়ঙ্কর সাপেদের জাতভাই ব্ল্যাক মাম্বা পেয়েছে বঙ্গভূমিতে জায়গা! এ এমন সত্ব যার বলে ভিনদেশি হয়েও ব্ল্যাক মাম্বা বাঙালির ঘরে ঘরে ঢুকে গেছে। দশকের পর দশক থেকেছে স্বমহিমায়। এমন ভয়ঙ্কর প্রাণীকে বঙ্গ দেশে এনেছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই প্রথম ভারতীয় বাঙালি লেখক যাঁর আশ্চর্য কলমে ব্ল্যাক মাম্বা ঢুকে পড়েছিল কাল কেউটের জমিদারি এলাকা জলে-জঙ্গলের বাংলাভূমিতে। সেই যে এসেছিল ১৯৩৭ সালে, তারপর আর যায়নি। আশি বছরের বেশি সময় ধরে থেকে গিয়েছে ক্রূর এই উভচর প্রাণী।

১৯৩৭ সালে বিভূতিভূষণ লিখেছিলেন তাঁর কালজয়ী রোমাঞ্চকর কাহিনী ‘চাঁদের পাহাড়’। সেই কাহিনীতে ডানপিটে বঙ্গ যুবক শংকরের আফ্রিকা অভিযানে ভয়াল অভিজ্ঞতার বর্ণনায় বাঙালি পাঠকরা জেনেছিলেন কাল কেউটেরও বাপ আছে। সে বাপ কেমন? তার কত ক্ষমতা?সব সরল বাংলায় লিখেছিলেন বিভূতিভূষণ। যা আজও গায়ে কাঁটা দিয়ে যায় পাঠক বাঙালির।

   

বিভূতিভূষণের কলমে ভয়ঙ্কর সেই মুহূর্ত- “দেয়াল ও তার বিছানার মাঝামাঝি জায়গায় মাথা উঁচু করে তুলে ও টর্চের আলো পড়ার দরুন সাময়িক ভাবে আলো-আঁধারি লেগে থ-খেয়ে আছে আফ্রিকার ক্রূর ও হিংস্রতম সাপ-ব্ল্যাক মাম্বা! ঘরের মেঝে থেকে সাপটা প্রায় আড়াই হাত উঁচু হয়ে উঠেছে-সেটা এমন কিছু আশ্চর্য নয় যখন ব্ল্যাক মাম্বা সাধারণত মানুষকে তাড়া করে তার ঘাড়ে ছোবল মারে। ব্ল্যাক মাম্বার হাত থেকে রেহাই পাওয়া একরকম পুনর্জন্ম তাও শঙ্কর শুনেছে! …সত্য কেবল ওই মহাহিংস্র উদ্যত-ফণা মাম্বা, যেটা প্রত্যেক ছোবলে ১৫০০ মিলিগ্রাম তীব্র বিষ ক্ষতস্থানে ঢুকিয়ে দিতে পারে এবং দেবার জন্য ওৎ পেতে রয়েছে।” সৌ: চাঁদের পাহাড়

Advertisements

ইছামতির মাঝি বিভূতিভূষণ। তাঁর কলমে বাংলার মাঠ ঘাট নদী গাছ প্রাণীর যত বর্ণনা আছে উদ্ভিদ ও জীব বিজ্ঞানীদের কাছে যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো কিছু একটা। বহু বিলুপ্ত উদ্ভিদ প্রাণী আজও নাম নিয়ে বেঁচে আছে বিভূতিভূষণের বিভিন্ন বইতে। আর শংকরের সেই চাঁদের পাহাড়? সে যেন মহাকাব্যের সমতুল।

ব্ল্যাক মাম্বাকে বাংলায় আনা বিভূতিভূষণ আফ্রিকা যাননি। তাঁর লেখা নিয়ে গবেষণায় কিছু অসঙ্গতি আধুনিক নেটিজেনরা বের করে শ্লাঘা বোধ করেন। তবে ব্ল্যাক মাম্বার বিষয়ে সেই সময়ে বিভূতিভূষণের গবেষণা কত এগিয়ে তার জবাব এই নেটিজেনদের কাছে নেই।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News