দুনিয়ার বিখ্যাত সব স্কুল সম্পর্কে অনেকেই খোঁজখবর রাখেন। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্কুল কোনটি জানেন? উত্তর হয়তো অনেকেরই অজানা। অবাক করা বিষয় হল যে, ভারতেই রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম স্কুলটি! উত্তর প্রদেশের রাজধানী শহর লখনউয়ে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম স্কুল সিটি মন্টেসরি স্কুল (সিএমএস)। লখনউ শহরেই রয়েছে সিটি মন্টেসরি স্কুলের ২১টি ক্যাম্পাস। পড়ুয়ার সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশি। আর শিক্ষক-কর্মচারী ও কর্তৃপক্ষ মিলিয়ে সংখ্যাটা সাড়ে চার হাজার।
সিটি মন্টেসরি স্কুল (সিএমএস) হল একটি উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুল। ১৯৫৯ সালে ড. জগদীশ গান্ধী এবং ড. ভারতী গান্ধী, মাত্র ৫ জন পড়ুয়া নিয়ে এই স্কুল চালু করেছিলেন। সিটি মন্টেসরি স্কুল (সিএমএস) কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনের অনুমোদিত। এই স্কুলের রয়েছে মোট চারটি বিভাগ- প্রি-প্রাইমারি, প্রাইমারি, জুনিয়র এবং সিনিয়র।
প্রায় রোজই বিমানে চড়েন? বলুন তো কত বছর পর্যন্ত শিশুর টিকিট লাগে না?
একটি স্কুলের একটাই ভবনে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পড়ানো মোটেই সহজ কাজ নয়। তবে সিএমএস এটা করে রীতিমতো নজির গড়েছে। সেই সঙ্গে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্কুল’ হিসেবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ঠাঁই পেয়েছে। সিএমএস-এ শিশুদের বিকাশ, নৈতিক চরিত্র গঠন, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির উপর খুবই জোর দেওয়া হয়।
সিটি মন্টেসরি স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি শিল্প, সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক, খেলাধুলা, বিতর্ক, এমইউএন, বিদেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিনিময়, জুনিয়র ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট প্রোগ্রাম ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুদের সর্বাত্মক বিকাশের উপর জোর দেওয়া হয়। এই স্কুলের প্রি-প্রাইমারি বিভাগে শিশুরা মজাদার, নিরাপদ এবং আনন্দময় পরিবেশে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। ফলে তাদের মধ্যে শিক্ষার প্রতি ভালবাসা, সামাজিক দক্ষতা, নৈতিক মূল্যবোধ এবং আত্মবিশ্বাসের বিকাশ ঘটে। শিক্ষকরাও পড়ুয়াদের নিজস্ব ধারণাগুলিকে অন্বেষণ করতে, শিখতে এবং বুঝতে সহায়তা করে।
বাড়ি থেকে অফিসের বিশাল দূরত্ব কাটিয়ে কীভাবে কাজে পৌঁছচ্ছেন স্টারবাক্সের নতুন কর্ণধার?
আবার প্রাইমারি বিভাগে প্রাথমিক বয়সের শিশুদের ক্ষমতায়ন করা এবং মূল বিষয়গুলিতে তাদের আত্মবিশ্বাস এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ দিয়ে থাকে। বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা কঠোর পরিশ্রমী হয়। ভাল আচরণ এবং আত্ম-শৃঙ্খলার গুণাবলীও তাদের মধ্যে বেড়ে ওঠে।
সিটি মন্টেসরি স্কুলে ১০০০ টিরও বেশি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে। পড়ুয়াদের জন্য এই স্কুলে প্রায় ৩,৭০০ টি কম্পিউটার রয়েছে। বলিউড অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি, মডেল জিতেশ সিং-র মতো বিখ্যাত তারকারা সিটি মন্টেসরি স্কুলে পড়েছেন।
২০০৫ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকেও নামও তুলে নিয়েছে সিটি মন্টেসারি স্কুলটি। এছাড়াও স্কুলটি ২০০২ সালে ইউনেস্কো-র ‘শান্তি শিক্ষা’ পুরস্কারে ভূষিত হয়। সিটি মন্টেসরি স্কুলের ঝুলিতে রয়েছে তিব্বতের ধর্মীয় নেতা দালাই লামা-র দেওয়া ‘হোপ অফ হিউম্যানিটি’ পুরস্কারও।