Devil Dragon: মরুভূমির ড্রাগন, আসল-নকল দুটো মাথা আছে

অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমির অধিবাসী দারুন এক প্রাণী কাঁটাযুক্ত গিরগিটি (Devil Dragon)। প্রায় ৮ ইঞ্চি লম্বায় এই প্রাণীর সাড়া দেহ শক্ত কাঁটা দিয়ে ঢাকা থাকে। শরীরে দেখা…

Devil Dragon

অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমির অধিবাসী দারুন এক প্রাণী কাঁটাযুক্ত গিরগিটি (Devil Dragon)। প্রায় ৮ ইঞ্চি লম্বায় এই প্রাণীর সাড়া দেহ শক্ত কাঁটা দিয়ে ঢাকা থাকে। শরীরে দেখা যায় হলুদ, বাদামি এবং ধূসর রঙের মিশ্রন। ক্যামেলিয়নদের মত এরাও নিজেদের শরীরের রং পরিবর্তন করতে পারে। মাথার উপরের দিকে আছে শিংয়ের মতো দুটি কাটা। সব মিলিয়ে যেন এক ভয়ঙ্কর চেহারা। দেহের এমন ভিন্ন গঠনের কারণে কাঁটাযুক্ত শয়তান, কাঁটাযুক্ত ড্রাগন বলে পরিচিত। মূলত মরুভূমিতে টিকে থাকার জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়েছে এই কাঁটাযুক্ত ড্রাগনের দেহ। তা না হলে মরুভূমির মতো প্রতিকূল পরিবেশে তাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যেত।

শরীরে কাঁটা থাকায় অন্যান্য শিকারী প্রাণীরা এদের ধারে কাছেও আসে না। তবে মাথার খুলি ছাড়া স্পাইক গুলো বেশিরভাগই হাড় বিহীন। শিকারিকে মিথ্যা ভয় দেখানো এইসব স্পাইকের কাজ। এদের ঘরের পেছনে একটি নকল মাথা রয়েছে যা শিকারীদের বোকা বানানোর বিষয় কাজ করে। এছাড়া শিকারের সামনে পড়ে গেলে এরা বুক ফুলিয়ে নিজেদের আকার বৃদ্ধি করতে পারে। এটি তাদের আত্ম প্রতিরক্ষার একটি অংশ।

তাদের অনন্য একটি বৈশিষ্ট্য হলো বাসস্থান এবং দিনের পরিবর্তনের সঙ্গে রং পাল্টানো। সকালে তাপমাত্রা ঠান্ডা থাকলে দেহ বাদামি বা জলপাই রংয়ের হয়ে যায়। আবার বিকেলে এদের গায়ের রং হলুদ হয়। তবে মরুভূমিতে থাকার কারণে এদের গায়ের বর্ণ বাদামী হিসেবেই নজরে আসে। এই রং তাদের দ্রুত বালিতে লুকিয়ে যেতে সাহায্য করে। এরা শরীরের যেকোনো অংশ দিয়ে জল শুষে নিতে পারে। এটি তাদের মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশে টিকে থাকতে সাহায্য করে। এমন ক্ষমতা না থাকলে হয়তো টিকে থাকা সম্ভব হতো না।

বিচিত্র প্রাণীটির খাদ্য তালিকায় থাকা একমাত্র খাবার হলো পিঁপড়ে। এদের দাঁতের গঠনের জন্য শক্ত খোলস ওয়ালা পিঁপড়েদের এরা এক নিমিষে খেয়ে নিতে পারে। এই প্রাণেরা ঘাপটি মেরে তাদের শিকারের আশায় বসে। সামনে থেকে পিঁপড়ে হেঁটে গেলে তাদের লম্বা ও আঠালো জিব বের করে শিকার করে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭৫০ টি পিপড়ে খায় এই প্রাণী। তবে একদিনে এরা তিন হাজারটি পিঁপড়ে খাওয়ার ক্ষমতা রাখে।

খুবই ধীরগতিতে চলাফেরা করে এই কাঁটাযুক্ত ড্রাগন। দিনের বেলাতেই এরা বেশি সক্রিয় থাকে। খাবারের সন্ধানও করে সূর্যের আলোতে। রাতের সময় বরাদ্দ রাখে বিশ্রামের জন্য। তবে সূর্যের আলোর উপর নির্ভর করে থাকে প্রাণীর সক্রিয়তা। পুরো বছর জুড়ে এরা মরুভূমিতে চড়িয়ে বেড়ায় না। এরা শীতের মরশুমে নিজেদের লুকিয়ে রাখে। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এরা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

আবার জুন জুলাই মাসে তাপমাত্রা অনেকটা নিচে থাকে তখন এরা মাটিতে গর্ত করে লুকিয়ে পড়ে। মার্চ থেকে মে ও আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে শয়তান ড্রাগন। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে এরা প্রজননের জন্য সঙ্গী খোঁজেন। একবারে এরা তিন থেকে দশটি ডিম দিতে পারে। এরপর প্রায় তিন থেকে চার মাস লাগে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোতে।