Jatin Das: ইংরেজ হঠাতে প্রাণ দিলেন যতীন, শেষ যাত্রায় কাঁধ খাটলেন সুভাষ

Special Correspondent: সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর দেহ কাঁধে করে শ্মশানে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যতীন হলো এযুগের দধীচি, অত্যাচারী ইংরেজ সরকারকে পরাজিত করবার জন্য নিজের অস্থি…

Special report on freedom fighter Jatin Das

Special Correspondent: সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর দেহ কাঁধে করে শ্মশানে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যতীন হলো এযুগের দধীচি, অত্যাচারী ইংরেজ সরকারকে পরাজিত করবার জন্য নিজের অস্থি দিয়ে গেল।’

১৯২১, মাত্র ১৭ বছর বয়স তখন, তখনই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ তাঁর হাতে দক্ষিণ কলকাতা কংগ্রেস কমিটি গঠন ও পরিচালনার ভার দিয়েছিলেন – তিনি যতীন্দ্রনাথ দাস, সকলের যতীন দাস, কলেজের পড়া বন্ধ করে যোগ দিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনে। ১৯২৩ সালে তাঁর সাথে কাশীর শচীন সান‍্যালের পরিচয় হয়। ১৯২৪ সালে স্বদেশী ডাকাতির অভিযোগে শচীন সান‍্যালের সাথে গ্রেপ্তার হন যতীন দাস। ঢাকা জেলে থাকাকালীন জেল সুপারের সাথে একদিন তাঁর তর্ক-ঝগড়া হতে হতে হাতাহাতি শুরু হয়। এই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলে যতীন দাস অনশন শুরু করেন, যা চলে ২২ দিন ধরে। শেষে জেল সুপার ক্ষমা চাইলে তিনি অনশন তুলে নেন।

   

১৯২৮ সালের কলকাতা কংগ্রেসের দু-তিন মাস আগে যতীন দাসের জেল মুক্তি হয়। ১৯২৮ সালে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সর্বাধিনায়ক সুভাষচন্দ্র বসু বি.ভি দলে যতীন দাসকে বিশেষ দায়িত্ব দেন। কলকাতা সম্মেলনের শেষে যতীন দাস ও ভগৎ সিং এলাহাবাদ ও লাহোর যান নতুন ধরনের বোমা তৈরি করতে। কাজ হয়ে যাবার পরে যতীন দাস বাংলায় ফিরে আসেন। ১৯২৯ সালের মে মাসে ডায়মণ্ড হারবারের কাউন্সিল নির্বাচনের সময় সুভাষচন্দ্র বসু বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি হিসাবে প্রচারে সমস্ত গ্রাম ঘুরতে থাকেন। মগরাহাট, মন্দিরবাজার, সরিষা, ডায়মণ্ড হারবার সদর, কুলপী, করঞ্জলি প্রভৃতি জায়গায়ে প্রচারে সুভাষচন্দ্র বসুর সাথে সারাক্ষণ থাকতেন তাঁর প্রিয় যতীন দাস।

১৯২৯ সালের ৬ জুন দিল্লীর এ‍্যাসেমব্লি হলে ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত বোমা ফেলে ব্রিটিশ শাসন আইনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার হন। সেইসূত্রে ১৯২৯ সালের ১৪ জুন কলকাতার বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন যতীন দাস, ১৬ জুন তিনি লাহোর জেলে আসেন। শুরু হয় ভগৎ সিং, রাজগুরু, শুকদেব সহ যতীন দাসের মামলা। এই মামলাই পরে ‘থার্ড লাহোর কন্সপিরেসি কেস’-এ পরিণত হয়।

যতীন দাস তখন ব্রিটিশ আইন আদালতকে পা দিয়ে চূর্ণ করে চলে গেছেন অনেক দূরে। ১৩ জুলাই থেকে ইংরেজ বিরোধী যে বিস্ময়কর অনশনের শুরু ১৩ সেপ্টেম্বর ৬৩ দিনের মাথায় বেলা ১:০৫ মিনিটে হ’ল তার চির সমাপ্তি। যতীন দাসের অমরদেহ এল কলকাতায় নেতাজীর কাঁধে চড়ে।