Red lipped batfish: সাগর সুন্দরী, লিপস্টিক মাখে মাছ !

আমেরিকা মহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের এক মাছ রেডলিপ ব্যাট ফিশ (Red lipped batfish)। এদের ঠোঁট দেখতে অনেকটা মানুষের ঠোঁটের মত। সেটিও আবার রক্তরঙে রাঙানো। প্রথম দেখায়…

Red lipped batfish

আমেরিকা মহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের এক মাছ রেডলিপ ব্যাট ফিশ (Red lipped batfish)। এদের ঠোঁট দেখতে অনেকটা মানুষের ঠোঁটের মত। সেটিও আবার রক্তরঙে রাঙানো। প্রথম দেখায় মনে হবে কোনও রাগী চেহারার মহিলার ঠোঁটে লিপস্টিক পরে বসে আছে। সামনে কাউকে পেলেই তাকে যেন আলতো করে চুমু বসিয়ে দেবে। লাল ঠোঁট ছাড়াও এদের দেহে রয়েছে আরও বেশ কিছু রঙের মিশ্রণ।

এদের পিঠের দিকে হালকা খয়েরী থেকে ধূসর পেটের দিকে সাদাটে। মাথা থেকে উপর দিকে চলে গেছে ঘন খয়েরী দাগ। মৎস্য প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত হয়েও সাঁতার কাটতে পারে না এই প্রাণী। তারা অভিযোজিত পেট্রোরল পেলভিক এবং অ্যনল পাখনা দিয়ে হেঁটে বেড়াতে অধিক পারদর্শী।

এরা সাধারণত সমুদ্রের তলা দিয়ে হেঁটে বেড়ায় এবং চিংড়ি সহ ছোটখাটো মাছ খায়। এছাড়াও খাদ্য তালিকায় আছে শামুক গোত্রীয় প্রাণী, কাঁকড়া এবং কেঁচোর মত সামুদ্রিক প্রাণী। পরিণত বয়সে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের পেছনের পাখনাটি মজবুত হতে থাকে। ব্যাটফিস পরিপক্কতায় পৌঁছে গেলে এর ডর্শন ফিন একক মেরুদন্ডের মতো হয়ে যায়। শারীরিক গঠনের কারণে এদের শিকার ধরতে সুবিধা হয়।

এদের মাথার সামনে দিকে শিংয়ের মত একটি ইলিসিয়াম থাকে। এটি তাদের শিকার ধরতে সাহায্য করে। সমুদ্রের ৬০ থেকে ৭০ মিটার গভীরে বসবাসকারী এই প্রাণীটি বাঁচে মাত্র দুই থেকে তিন বছর। সমুদ্রের তলার বাসিন্দা হলেও খাবারের খোঁজে এরা মাঝে মধ্যেই উপরে উঠে আসে। তবে এরা সব জায়গায় বসবাস করে না এদের বিরল প্রজাতির প্রাণী বলে অভিহিত করা হয়।

১৯৫৮ সালে প্রথম এই লাল ঠোঁটের মাছটিকে আবিষ্কার করা হয়েছিল গালাপাগোস থেকে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার ইকুইডরের সমুদ্রে বেশ কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। ওয়াইল্ড লাইফ পর্যবেক্ষণের জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ডারউইন এখানে এসেছিলেন জীব বৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ করতে।

গালাপাগোস ছাড়াও এই মাছটি পাওয়া যায় পেরু ও গালাপাগোসের আশেপাশের সমুদ্র এলাকায়। ক্যালিফোর্নিয়া সহ আরো কয়েকটি জায়গায় তারা ধরা পড়লেও এটি খুবই দুর্লভ। এই মাছের আকার হয়ে থাকে ৪০ সেন্টিমিটারের মতো। এদের বিশেষ শারীরিক রং তাদের সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে। তাই বড় বড় সামুদ্রিক প্রাণীর শিকারে পরিণত হয় না তারা।

তবে দিন দিন বেড়ে চলা বিশ্ব উষ্ণায়ন এই প্রাণীদের বেঁচে থাকার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এটি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি খাবারের দুর্ভোগের কারণ হতে পারে। এই মাছেরা সাধারণত সমুদ্রের গভীরে থাকে যেখানে আলো পৌঁছাতে পারে না।