Panda Ant: পান্ডার পিঁপড়ে ভার্সন ! মিষ্টি দেখতে হলেও মারাত্মক

অদ্ভুত এক প্রাণীর নাম পান্ডা অ্যান্ট(Panda Ant) বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় পান্ডা পিঁপড়ে। এর মত আজব প্রাণী কমই আছে পৃথিবীতে। দেখতে ঠিক যেন পান্ডার পিঁপড়ে…

অদ্ভুত এক প্রাণীর নাম পান্ডা অ্যান্ট(Panda Ant) বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় পান্ডা পিঁপড়ে। এর মত আজব প্রাণী কমই আছে পৃথিবীতে। দেখতে ঠিক যেন পান্ডার পিঁপড়ে ভার্সন। শরীরে আছে পান্ডার মত সাদা কালো বাহার, সাদামাথায় চোখটা কালো রঙের। দেহের মাঝের অংশে রয়েছে কালোর ওপর সাদা ছোপ আর পিছনের দিকে সাদার ওপর কালো রঙের দাগ। পিঁপড়ে নামে পরিচিত হলেও এই পতঙ্গগুলি এক ধরনের বোলতা। এরা পিঁপড়াদের মতো কলোনি তৈরি করে না সাধারণত বোলতার মত একা থাকে। সাধারণত উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের শুকনো মরুভূমি বা বালুকাময় পরিবেশ তাদের বাসস্থানের উপযুক্ত।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলির বনে এদের সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। ১৯৩৮ সালে দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলে প্রথম দেখা মেলে পাণ্ডা পিপড়ার। এছাড়াও বসবাস রয়েছে মেক্সিকো এবং আর্জেন্টিনার বন জঙ্গলে। ঘুরতে গেলে হয়তো আপনারও চোখের সামনে চলে আসতে পারে। দেখতে সুন্দর ও মায়াবী বলে একটু ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছা হওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু সাবধান এটি কোন ভাবেই করা যাবে না কারণ এরা যদি হুল ফুটিয়ে দেয় তাহলে আর রক্ষা নেই। এদের কামড় বিড়াল বা কুকুরের মত প্রাণীর জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।

পান্ডা পিপড়ার আরেক নাম কাউকিলার। বলা হয় এরা হুল ফুটিয়ে গরু কিংবা তার চেয়ে বড় আকারের প্রাণীর বারোটা বাজাতে পারে। এরা স্বভাবে আক্রমণাত্মক নয় । এদের দেহে সাদাকালো রং প্রাকৃতিক অভিযোজনের কারণে হয়। এর মাধ্যমে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে শিকারি প্রাণীকে দূর থেকে সতর্ক করে দেয়। পাণ্ডা পিঁপড়ে মাটির গর্তে বাস করে। মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে খুব পছন্দ করে। মূলত খাদ্য তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ফুলের নির্যাস। পুরুষ এবং স্ত্রীদের রয়েছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। পুরুষেরা দিনের বেলা চলাফেরা করলেও স্ত্রী পিঁপড়া রাতের বেলায় হাঁটাচলা করে। দেহের বাহ্যিক গঠন দেখেও পৃথক করা যায়।

স্ত্রী পান্ডা পিপড়া পুরুষের তুলনায় বেশি হৃষ্টপুষ্ট, লোমশ হলেও এদের কোনো পাখা নেই। তাই তারা উড়তে পারেনা। ডানার বদলে তাদের রয়েছে এক ভয়ঙ্কর হুল। পুরুষদের হুল থাকে না কারণ এটি পরবর্তীতে ডিম পাড়ার অঙ্গ। যৌন মিলনের সময় পুরুষ স্ত্রীকে পিঠে করে উড়ে বেড়ায়। মিলন শেষে স্ত্রীকে মাটিতে নামিয়ে দেয়। প্রতিবারে স্ত্রী পিঁপড়া দু হাজার ডিম পাড়ে। মজার বিষয় হল স্ত্রী পিঁপড়া ডিম পাড়ার সময় ভিন্ন প্রজাতির পিঁপড়া বা কীটের বাসা বেছে নেয় যাতে সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চা কীট খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে।

পতঙ্গটি বেশি বড় হয় না হুলসহ একটি পিঁপড়ার দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে মাত্র ৮ মিলিমিটার। জীবন কাল খুব কম মাত্র ২ বছর বেঁচে থাকতে পারে এই পান্ডা পিঁপড়ে। সাধারণ পিঁপড়া দলবদ্ধ অবস্থায় থাকলেও এ ক্ষেত্রে এই পিঁপড়া ব্যতিক্রম। এটা একা থাকতেই পছন্দ করে শুধুমাত্র প্রজনন মৌসুমে সঙ্গীর প্রয়োজন হয়। প্রচুর সংখ্যক ডিম দিলেও জীবনকাল মাত্র দু’বছর হওয়ার কারণে দিন দিন এই মায়াবী প্রাণীর সংখ্যা পৃথিবী থেকে কমে যাচ্ছে। বন জঙ্গল ধ্বংস হয়ে যাওয়া আরেকটি কারণ। তাই এসব ব্যাপারে আমাদের আরো বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।