Molossia: সে এক দারুণ দেশ, কুকুর পায় নাগরিকত্ব

বিশ্বে এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে মানুষ তো বটেই, কুকুরদেরও দেওয়া হয় নাগরিকত্ব। অবাক শোনালেও বিষয়টি সত্যি। এই দেশে কুকুরেরা মানুষের মতোই সমান অধিকার ভোগ…

Republic of Molossia

বিশ্বে এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে মানুষ তো বটেই, কুকুরদেরও দেওয়া হয় নাগরিকত্ব। অবাক শোনালেও বিষয়টি সত্যি। এই দেশে কুকুরেরা মানুষের মতোই সমান অধিকার ভোগ করে থাকে। অনেকের কাছে বিষয়টি আজব লাগলেও এমনই নিয়ম আছে একটি দেশে, যার নাম মোলোশিয়া রিপাব্লিক (Republic of Molossia)। এটি একটি মাইক্রো-নেশন যা আমেরিকার মধ্যে অবস্থিত। এটি কেভিনবার্গ নামে এর শাসকের রাজত্বে চলে। তিনি সর্বদাই সামরিক ইউনিফর্মে থাকেন এবং তার গায়ে পদক ঝোলানো থাকে। তিনি নিজেকে অনেক উপাধিতে ভূষিত করেছে।

প্রতি বছর বহু পর্যটক এই দেশ ভ্রমণ করেন। স্বঘোষিত ১১ একরের এই ছোট্ট দেশটির অবস্থান নেভাদা অঙ্গরাজ্যে। এর নাগরিক সংখ্যা মাত্র ৩৮ জন। এটি রাষ্ট্রসংঘ স্বীকৃত রাষ্ট্র নয়। কিন্তু স্বীকৃত না হলেও কী হবে? তথাকথিত অনেক উন্নত দেশ যেখানে পশু-পাখিদের অধিকার নিয়ে এতটা উচ্চ-কণ্ঠ নয়, সেখানে ছোট্ট এই দেশটি প্রাণীদের নাগরিকত্ব দিয়ে নজির তৈরি করেছে।

মোলোশিয়ায় বসবাসকারী দুই ব্যক্তি প্রথম নতুন দেশ তৈরির কথা ভেবেছিলেন। সেই দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন হলেন কেভিনবার্গ এবং তার বন্ধু। তারা আমেরিকা থেকে আলাদা একটি নতুন দেশ বানান। প্রথম দিকে মোলোশিয়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছিল। কিন্তু ১৯৯৫ সালে যখন কেভিনবার্গ সিংহাসনে বসেন তখন তিনি সামরিক একনায়কতন্ত্র ঘোষণা করেন। দেশটিতে তিনি নিজেকে স্বৈরশাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
কেভিনের স্ত্রী মোলোশিয়ার ফার্স্ট লেডির মর্যাদা পেয়েছেন। এই দেশে বসবাসকারী বেশিরভাগ নাগরিককে কেভিনের আত্মীয় বলেই মনে করা হয়। যদিও বিশ্বের অন্য কোনও সরকার এই দেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে অন্যান্য দেশের মতো এই দেশের দোকান, লাইব্রেরি ও শ্মশান সবকিছুই রয়েছে। তাছাড়াও এই দেশে নিজস্ব মুদ্রা রয়েছে। এর সাথে নিজস্ব আইন-ঐতিহ্য সব কিছুই আছে।

মোলোশিয়ার ওয়েবসাইটে উল্ল্যেখ করা হয়েছে দেশের মোট জনসংখ্যা ৩৮ জন, যার মধ্যে ৩ টি কুকুর রয়েছে যাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩৫ জনের মধ্যে কেবল ৩ জন কেভিনবার্গ, তার স্ত্রী ও কন্যা বসবাস করেন। মোলোশিয়াকে পর্যটন কেন্দ্রও বলা হয়ে থাকে। প্রতি বছর বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটক প্রায় এখানে ঘুরতে আসে। এখানে পর্যটকদের যাওয়া-আসার জন্য পাসপোর্টের স্ট্যাম্প নিতে হবে। এটা এখানকার সরকারী নিয়ম। এই দেশটিতে আসতে আমেরিকা থেকে মাত্র ২ ঘণ্টা সময় লাগে। দেশের বিভিন্ন ভবন ও রাস্তাতে পর্যটকদের সাথে দেখা যায় এই দেশের রাষ্ট্রপতি অর্থাৎ কেভিনকে।

কেভিন দেশের উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছেন। এই দেশের নিজস্ব মুদ্রাও রয়েছে যার নাম ভেলোরা (Vallora)। ব্যাঙ্কও নিজস্ব মুদ্রাও আছে। এখানে ঘুরতে এলে পাসপোর্টের প্রয়োজন হয়না। শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলেই হবে। তবে এখানে অনুমোতি ছাড়া তিন ঘণ্টার বেশি অবস্থান করা যায়না। অবাক করা ব্যাপার হল আয়তনে ছোট হলেও দেশটির সংগ্রামী ইতিহাস রয়েছে। মোলোশিয়া আরেকটি মাইক্রো-নেশন মোস্তা-চেস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে এবং জয়লাভও করেছে। এই দেশটি এখন পর্যন্ত এদের জাতীয় সংগীতকে দু-বার পরিবর্তন করেছে এর পতাকা নীল, সাদা এবং সবুজ রঙ-এ রঞ্জিত।