Waterwheel: উদ্ভিদ কুলের ঠগী এরা! মাংসাশী মল্লিকা ঝাঁঝির ফাঁদে পড়লেই গপ করে গিলে নেয়

ভয়ঙ্কর নীরব ঘাতক! নিরীহ দেখতে। এর ফাঁদে পড়লেই জীবন শেষ। মনুষ্যকুলে যেমন ছিল মধ্যভারতের ভয়ানক ঠগীরা। বন্ধু হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করত। ঠিক তেমনি…

ভয়ঙ্কর নীরব ঘাতক! নিরীহ দেখতে। এর ফাঁদে পড়লেই জীবন শেষ। মনুষ্যকুলে যেমন ছিল মধ্যভারতের ভয়ানক ঠগীরা। বন্ধু হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করত। ঠিক তেমনি উদ্ভিদ কুলের ঠগী হিসেবে চিহ্নিত মাংসাশী খুনি উদ্ভিদ সূর্য শিশির। তবে আরও একজন আছে-মল্লিকা ঝাঁঝি বা Waterwheel, এরা তেমন চর্চিত নয়। লিখলেন সহেলী দে

মাংসাশী উদ্ভিদ (carnivorous plants)সংগত কারণেই প্রকৃতির সবচেয়ে অদ্ভুত উদ্ভিদগুলোর মধ্যে একটি। এসব উদ্ভিদ সাধারণত পোকামাকড়, মাকড়সা ইত্যাদি প্রাণীকে ফাঁদে ফেলে। তবে কোনও কোনও সময় ইঁদুর বা ব্যাঙ জাতীয় ছোট ছোট প্রাণীরাও এদের শিকারে পরিণত হয়।

   

পৃথিবীতে প্রায় ৪৫০ প্রজাতির মাংসাশী উদ্ভিদ রয়েছে যার মধ্যে একটি হল ওয়াটারহুইল (Waterwheel)। মল্লিকা ঝাঁঝি বা ওয়াটারহুইল বাংলাদেশের একটি বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Aldrovanda vesiculosa Linn এবং এর গোত্র Droseraceae। ওয়াটারহুইল একটি জলজ ও পতঙ্গভুক উদ্ভিদ। ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও আফ্রিকাতে এ উদ্ভিদটি পাওয়া যায়। আকারে ছোট, শিকড়হীন এ উদ্ভিদটি পুকুর বা জলাশয়ের উপরে ভাসতে দেখা যায়।

এ উদ্ভিদটি সম্পূর্ণ ৪-১২ ইঞ্চি (১০-৩০ সে.মি.) লম্বা হয়। বসন্তকালে এতে ছোট্ট সাদা ফুল ফোটে। উদ্ভিদটির শিকার ধরার ফাঁদ জলের নিচে থাকে। প্রত্যেকটি উদ্ভিদের কতগুলো স্বচ্ছ পাতাসহ একটি সরু কাণ্ড থাকে। কাণ্ডের চারদিকে ৮ টি পাতা চাকা স্পোকের মত সাজানো থাকে বলে উদ্ভিদটিকে ওয়াটারহুইল বলা হয়।

এই উদ্ভিদের পাতাগুলোই ফাঁদ হিসেবে কাজ করে। পাতাগুলো আকারে বেশ ছোট, দৈর্ঘ্যে মাত্র এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ (৬ মিলিমিটার)। আকারে খুব ছোট এদের শিকার গুলোও খুব ছোট হয়ে থাকে।

ওয়াটার হুইলের পাতাগুলো কাজ করে জলের নিচের ভেনাস ফাইট্র্যাপের (Venus flytrap) মত। এদের পাতা দুটি খণ্ডে বিভক্ত। এখানে সারিবদ্ধভাবে শুঙ্গ সাজানো থাকে। আর খন্ডগুলোর মধ্যে থাকে ট্রিগার হেয়ার। একটি পোকা ফাঁদে প্রবেশ করলে পাতার খন্ড দুটি এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। ওয়াটারহুইল তখন শিকারকে পরিপাক করে ফেলে এবং পরবর্তী শিকার ধরার জন্য ফাঁদ আবারো প্রস্তুত হয়ে যায়।