কিষেনজির মতো মুখ ঢেকে নয়, খোলাখুলি রক্তগঙ্গার হুঁশিয়ারি জীবন সিংহের

নিউজ ডেস্ক: কোথায় লুকিয়ে জঙ্গি নেতা জীবন সিংহ? এই প্রশ্নে তোলপাড় গোয়েন্দা বিভাগ। যেভাবে ভিডিও প্রকাশ করে নির্বাচনের পর থেকে হুমকি দিচ্ছে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন…

নিউজ ডেস্ক: কোথায় লুকিয়ে জঙ্গি নেতা জীবন সিংহ? এই প্রশ্নে তোলপাড় গোয়েন্দা বিভাগ। যেভাবে ভিডিও প্রকাশ করে নির্বাচনের পর থেকে হুমকি দিচ্ছে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও) প্রধান তাতে চিন্তিত রাজ্য সরকার।

গোয়েন্দাদের কাছে জীবন সিংহের এটাই সাম্প্রতিক চেহারা। আশ্চর্যের বিষয়, কোনওভাবেই নিজেকে আড়াল করতে চায়নি জীবন সিংহ। ২০১১ সালে বাম জমানা পতনের আগে পশ্চিম মেদিনীপুর ভিত্তিক মাওবাদীদের তৈরি করা রক্তাক্ত সময়ে সংগঠনটির তৎকালীন মিলিটারি কমিশন প্রধান কিষেনজি(কোটেশ্বর রাও) বহুবার মুখ ঢেকে ক্যামেরার দিকে পিছন ফিরে নিজের বক্তব্য দিয়েছিলেন। আর কেএলও প্রধান জীবন সিংহ দিচ্ছে মুখ খোলা অবস্থায় রক্তাক্ত পরিস্থিতির হুঁশিয়ারি।

বিধানসভা ভোটের পরেই জীবন সিংহের একটার পর একটা ভিডিও এসেছে। প্রতিবারই এই জঙ্গি নেতা খোলা মুখে ক্যামেরার সামনে এসে রক্তাক্ত হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। তার দাবি, কামতাপুর স্বশাসিত এলাকা।

উত্তরবঙ্গে নাশকতার হুঁশিয়ারি দেওয়া কেএলও প্রধান জীবন সিংহ (তামির দাস) কোথায়?সে কি ভুটানের জঙ্গলে ফের ডেরা বেঁধেছে? প্রশ্ন উঠছে গোয়েন্দাদের মধ্যে। পশ্চিমবঙ্গের সংলগ্ন দক্ষিণ ও পূর্ব ভুটানের জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চলগুলিতে দীর্ঘ সময় কেএলও, আলফা সহ সাতটি ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ঘাঁটি ছিল। ২০০৩ সালে “অপারেশন অলক্লিয়ার” অভিযানে ভুটান সরকার এই ঘাঁটিগুলো ধংস করে। সেই অভিযানের পর থেকে নিখোঁজ জীবন সিংহ।

গোয়েন্দা বিভাগের কাছে বারবার জীবন সিংহের মৃত্যুর সংবাদ এসেছে। কখনও জানা গিয়েছিল আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের একদা বাসিন্দা এই মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা সেনা অভিযানে মায়ানমারে মারা গিয়েছে। কখনও খবর আসে জীবন সিংহ নেপালের সীমান্তে আত্মগোপন করে আছে। পরে সেসব তথ্য ভুয়ো বলে জানা যায়।

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে জঙ্গি শিবির পরিচালনা করছে কেএলও। বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়া জঙ্গি সংগঠনটির লিংকম্যানদের দেওয়া তথ্য থেকে গোয়েন্দা বিভাগ নিশ্চিত হয় জীবন সিংহ বেঁচে আছে।

ভুটান সরকারের জঙ্গি বিরোধী সামরিক অভিযানের পর থেকে কেএলও জঙ্গিদের একাধিক চাঁই ধরা পড়ে। বিশেষ করে ২০০২ সালে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে স্থানীয় সিপিআইএম দফতরে ঢুকে ৫ জনকে গুলি করে খুনের মামলায় ধৃতরা পরে তৃণমূল সরকারের আমলে জামিন পায়। তাদের অনেকেই নিখোঁজ এখন। গোয়েন্দা বিভাগের ধারণা, পুরনো চাঁইদের নিয়ে নতুন করে আগ্রাসী সংগঠন তৈরি করতে চলেছে প্রায় নিষ্ক্রিয় কেএলও প্রধান জীবন সিংহ।

ভারত? ভুটান ? নেপাল ? মায়ানমার ? বাংলাদেশ ? কোন দেশের জঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে জীবন সিংহের ভিডিও, কোনও সূত্র এখনও নেই।উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ গিয়েছে নবান্ন থেকে।