মেয়েদের থাপ্পড় ধূমপানের ক্ষতি অনেক কমায়, খাবেন নাকি ?

মেয়েদের নরম হাতে থাপ্পর খাওয়ার জন্য টাকা খরচ করে রেস্তোরাঁয় আসেন অতিথিরা। এমনই অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে জাপানের নাগোয়া শহরে অবস্থিত সাচি হো কো…

Woman slapping man

মেয়েদের নরম হাতে থাপ্পর খাওয়ার জন্য টাকা খরচ করে রেস্তোরাঁয় আসেন অতিথিরা। এমনই অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে জাপানের নাগোয়া শহরে অবস্থিত সাচি হো কো ইয়া নামে রেস্তোরাঁয়। সেখানে প্রবেশ করলে দেখা যাবে ভেতরে রাখা রয়েছে সারি সারি চেয়ার। অতিথিরা এসে চেয়ারে বসেছেন এবং ওয়েটার এসে সপাটে কষিয়ে থাপ্পর মারছেন অতিথিদের গালে। উল্টে অতিথিও রেখে না গিয়ে থ্যাংক ইউ বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। কোন অপরাধের জন্য কিন্তু এই থাপ্পড় মারা হচ্ছে না বরং ইচ্ছা করেই মোটা অংকের টাকা খরচা করে মেয়ে ওয়েটারদের এই নরম হাতের থাপ্পড় খেতে এসেছেন ।

সেই রেস্তোরাঁর মেনু কার্ডে বিভিন্ন খাবারের তালিকা করা হয়েছে। সেই খাবারের তালিকার সাথে এক জায়গায় লেখা রয়েছে নাগোয়া লেডিস স্ল্যাপ বা নাগোয়া মেয়েদের থাপ্পড়। যারাই থাপ্পর খেতে চান তাদের মেনু থেকে সিলেক্ট করে অর্ডার দিতে হয়। মেয়েদের হাতের এই লোভনীয় থাপ্পড় খাওয়ার জন্য জাপানীয় মুদ্রায় গুনতে হয় প্রায় ৩০০ ইএন বা ২২৮ টাকা। এই রেস্তোরায় এসে মাত্র ৩০০ ইয়েন খরচা করলে মনের খুশিতে চাইলে সারাদিন ধরে থাপ্পড় খেতে পারবেন যে কেউ। আবার রেস্তোরাঁ থাকা মেয়ে ওয়েটারদের পছন্দের কারোর কোমল হাতের থাপ্পর খেতে চায় তাহলে তাকে খরচা করতে হবে এক্সট্রা টাকা। তখন ৩০০ ইয়েন-এর পরিবর্তে অতিরিক্ত ৫০০ ইয়েন। পরিচিত মেয়ের হাতের থাপ্পর খাওয়া যাবে মোট ৮০০ ইয়েন খরচা করে। এটি ভারতের মুদ্রায় প্রায় ৪৬০ টাকা।

অনেকের কাছে এত টাকা খরচা করে থাপ্পড় খাওয়াটা অযৌক্তিক মনে হতেই পারে কিন্তু বেশ কিছু কারণে টাকা খরচা করে অনেকে থাপ্পর খেতে আসেন এখানে। মূলত রেস্তোরায় থাকা মেয়ে ওয়েটাররা বিশেষ কায়দায় নরম হাত দিয়ে থাপ্পড় মেরে থাকে অতিথির মুখে। ফলে থাপ্পর খাওয়া অতিথির সারা শরীর জুড়ে জেগে উঠে শিহরণ। কেউ কেউ তো এ থাপ্পরের মধ্যে পিনিক খুঁজে পান। তাই কেউ কেউ পিনিক নিতে ধূমপান ছেড়ে দিয়ে এই রেস্তোরায় আসেন টাকা খরচা করে মেয়েদের হাতে থাপ্পড় খেতে। ধূমপান করলে একদিকে যেমন অর্থের ওপর অন্যদিকে শরীরের ক্ষতি। রেস্তোরাঁয় এসে মেয়েদের হাতে থাপ্পর খেতে গেলে টাকা খরচা হলেও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তেমন থাকে না। তাই ধূমপান করার থেকে এখানে এসে থাপ্পড় খাওয়া অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং স্বাস্থ্যের দিক থেকে নিরাপদ।

জাপানি রেস্তোরাঁ জাপানিদের পাশাপাশি বিদেশীরাও আসেন থাপ্পড় খেতে। বিদেশি পর্যটকদের কাছে এই বিষয়টি বেশ উপভোগ্য। রেস্টুরেন্ট মেয়ে বেটাররা যত জোরে কষিয়ে থাপ্পড় মারেন অতিথিরা ততই বেশি আনন্দ পান। অনেকে থাপ্পর খাওয়ার পর আগের থেকে বেশি সতেজ ও চাঙ্গা মনে হয়। কেউ কেউ কষিয়ে থাপ্পর মারার জন্য ওয়েটারকে ধন্যবাদও জানায়।

যারা এই রেস্তোরাঁয় থাপ্পড় খাওয়ার চিন্তা করছেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ এই রেস্তোরাঁটি আর খোলা নেই। ২০১২ সালে এই থাপ্পড় সেবা চালু করেছিলেন সাচি হোকো ইয়া। তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। থাপ্পড় খাওয়ার জন্য সে সময় মানুষ রেস্তোরাঁ ভীড় করতেন। প্রথম দিকে একজন মহিলা থাপ্পড় মারার কাজ করতেন পরের দিকে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে আরও কয়েকজন তরুণীকে নিয়োগ করে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। এই রেস্তোরাঁয় থাপ্পড় খাওয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার তৈরি হয়। পরে এই আয়োজন বন্ধ করতে বাধ্য হয় রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ।