মেঘ চুরি! বিশ্বে হই হই পড়ে গেল

রোজ আমরা কতশত চুরির অদ্ভুত সব ঘটনা শুনে থাকি। তবে সব কিছুকে হার মানিয়ে এইবার ব্যতিক্রমী এক চুরির অভিযোগ এসেছে। তা হল মেঘ চুরির। সম্প্রতি…

Clouds

রোজ আমরা কতশত চুরির অদ্ভুত সব ঘটনা শুনে থাকি। তবে সব কিছুকে হার মানিয়ে এইবার ব্যতিক্রমী এক চুরির অভিযোগ এসেছে। তা হল মেঘ চুরির। সম্প্রতি তুরস্কের বিরুদ্ধে মেঘ চুরির এনেছে ইরান।

গত দু-মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পরে। এইসব ছবিতে একই সময়ে ইরান ও তুরস্কের সীমান্তবর্তী এলাকার দৃশ্য আবহাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। ছবিতে দেখা যায় তুরস্কের আকাশে মেঘ এবং পাহাড়ের চূড়ায় বরফ থাকলেও সীমান্তের অপর প্রান্তে ইরানের আকাশ শুষ্ক এবং পাহাড়ের চূড়ায় বরফ বলতে কিছুই নেই। এরপরই আলোচনায় আসতে থাকে তুরস্কের মেঘ চুরির ঘটনা।

মধ্য প্রাচ্যের প্রভাবশালী দুই প্রতিবেশি দেশের আকাশে আবহাওয়ার এমন বড় কাণ্ড চোখে পড়ার পর বিভিন্ন প্রশ্ন জাগে ইরানীদের মনে। তুরস্কের বিরুদ্ধে তারা অভিযোগ তোলে, প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারী মেঘ তারিয়ে নিজেদের এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন তারা। তুর্কীদের বিরুদ্ধে আগেও এই অভিযোগ বেশ কয়েকবার এনেছেন খরা কবলিত ইরানীরা।

ইরানীরা প্রশ্ন তুলছে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে জলবায়ুর ধরণে এত পার্থক্য কেন। পাশাপাশি দুটি দেশ হলেও একপাশে তুরস্কের আকাশে মেঘের ঘনঘটা এবং পর্বতশৃঙ্গ তুষার বেষ্টিত। অপর পাশে ইরানের আকাশে মেঘের ছিটেফোটাও নেই। দেশজুড়ে চলছে খরা। তাদের দাবি তুর্কীরা কোনও ভাবেই ইরানের মেঘ চুরি করছে। মেঘ চুরি বলতে এমন বিশ্বাস বা অভিযোগকে বোঝায় যে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে ভারী মেঘ তারিয়ে নিজেদের এলাকায় নিতে প্রযুক্তির ব্যবহার।

অবিশ্বাস্য হলেও ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে চুরি সম্ভব। ক্লাউড সিডিং হল একটি কৃত্রিম ভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তন কৌশল। যেভাবে হাল্কা মেঘের ভিতরে এমন কিছু উপাদান ছড়িয়ে দেওয়া হয় যাতে মেঘ ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি বা তুষার হয়ে ঝড়ার উপযোগী হয়। মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র খরা ও কম বৃষ্টিপাতের কারণে কম দেশগুলিতে তাদের আকাশের মেঘগুলি থেকে যত বেশি সম্ভব বৃষ্টি নামানোর বিকল্প ব্যবস্থা যাচাই করে দেখছে।

ইরান, তুরস্ক, সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশগুলো আবহাওয়া পরিবর্তন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। একারণে, চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে পরিবেশগত শত্রুতার দুয়ার আরও উন্মোচিত হতে পারে। ইরানে মেঘ চুরির বিষয়টি আগেও কয়েকবার শিরোনাম হ্যেছে। ইরানে খরার জন্য দেশটির সরকার বেশ কয়েকটি দেশকে আবহাওয়ার নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী বলে সন্দেহ করে আসছে।

এর আগে ২০১৮ সালে ইরানের স্বসস্ত্র বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দেশটির জলবায়ুতে পরিবর্তন এবং মেঘ ও তুষারের জন্য ইজরায়েল এবং UAE –কে দোষারোপ করেছিল।