Haridas Pal: শুধু কথার কথা নয়, কে ছিলেন হরিদাস পাল

হরিদাস পাল” (Haridas Pal) বাংলায় প্রচলিত একটি প্রবাদ কথন। সাধারণত কোন অযোগ্য ও তুচ্ছ ব্যক্তি কে অবহেলার্থে বলা হয়ে থাকে “তুমি কোন হরিদাস পাল হে?”কিন্তু হরিদাস পাল।

haridas-pal

বিশেষ প্রতিবেদন: “হরিদাস পাল” (Haridas Pal) বাংলায় প্রচলিত একটি প্রবাদ কথন। সাধারণত কোন অযোগ্য ও তুচ্ছ ব্যক্তি কে অবহেলার্থে বলা হয়ে থাকে “তুমি কোন হরিদাস পাল হে?”কিন্তু হরিদাস পাল। শুধু কথার কথা নয় তিনি বাস্তব। তৎকালীন বাঙালি সমাজের এক বিশেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। নামে রয়েছে রাস্তাও।

জানা যায়, ১৮৭৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের রিষড়ার এক অতি দরিদ্র গন্ধবণিক পরিবারে হরিদাস পালের জন্ম। তার পিতা নিতাইচরণ পাল। পিতার মৃত্যুর পর জীবিকার সন্ধানে হরিদাস ১৮৯২ সালে কলকাতায় চলে যান ।সেখানে এক সোনার দোকানে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ শুরু করেন ।

১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে হরিদাসের কলকাতা নিবাসী একমাত্র ধনী নিঃসন্তান মামা মারা যাওয়ায়- হরিদাস উত্তরাধিকারসূত্রে মামার সব সম্পত্তি মালিক হয়ে রাতারাতি ধনী হয়ে যান।তিনি বড়বাজারে কাঁচ ও লণ্ঠনের ব্যবসা শুরু করেন ।অত্যন্ত পরিশ্রমী, সৎ ও বুদ্ধিমান হরিদাস কয়েক বছরের মধ্যে তার ব্যবসা অনেক বাড়িয়ে তোলেন। এক দশকের মধ্যে তার ব্যবসা কলকাতার নানা জায়গায় ও গৌহাটিতে ছড়িয়ে পড়ে ।হরিদাস অত্যন্ত সৎ ও দয়ালু ছিলেন। বিপুল অর্থ তাকে কলকাতার বাবু সমাজে স্থান করে দেয়।তাঁর দান ধ্যান ও পরোপকারের জন্য জনসাধারন তাকে ভালোবাসতো। দাতা হরিদাসের উদার মনোভাব, মার্জিত ব্যবহার, সহানুভূতিশীল ব্যবহারে তার সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে । সাধারণের কল্যাণে তিনি নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ।সমাজে তিনি অত্যন্ত উঁচু সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হন । প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান।

এমনকি তিনি কাউকে কিছু করার কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে তা পালিত হতো। কারণ সকলে জানতো হরিদাস যা করেন সবার মঙ্গলের জন্যই করেন।

১৯৩৩ সালে হরিদাস কিডনির অসুখে মারা যান ।১৯৬৫ সালে কলকাতা কর্পোরেশন তাঁর সম্মানার্থে একটি রাস্তার নাম রাখেন “হরিদাস পাল লেন ” । “হরিদাস পাল” প্রবাদটি ব্যবহার হয়ে থাকে কারণ অতিরিক্ত দান খয়রাত করে তার টাকা পয়সা ফুরিয়ে যায়, তার অসুখে শরীর ভেঙে যায়।

তখন তিনি টাকার দরকারে তার এক কর্মচারীর কাছে টাকা ধার করতে যান। তার চেহারা দেখে সেই কর্মচারী তাকে চিনতে পারে নি, এবং বলে তুমি কোন হরিদাস পাল হে তে তোমাকে টাকা চাইলে দিতে হবে। মনে করা হয় এখান থেকে শুরু হয় কেউ টাকা চাইলে বলা হয় তুমি কোন হরিদাস পাল হে যে টাকা চাইলে দিতে হবে।