Ramya R: কৃষক-কন্যার আকাশে ওড়ার স্বপ্ন হল সত্যি, বর্তমান আয় ৬৪ লক্ষ!

কৃষক পরিবারের সন্তান! তা বলে কি স্বপ্ন দেখা মানা? ছোটবেলা থেকেই চাষবাস দেখতে দেখতে বড় হওয়া। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় প্রথম থেকেই অর্থ কষ্ট কি, তা স্বচক্ষে দেখেছেন।

From Farm to Sky: Farmer's Daughter's Dream Soars to 64 Lakhs

কৃষক পরিবারের সন্তান! তা বলে কি স্বপ্ন দেখা মানা? ছোটবেলা থেকেই চাষবাস দেখতে দেখতে বড় হওয়া। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় প্রথম থেকেই অর্থ কষ্ট কি, তা স্বচক্ষে দেখেছেন। তবুও তরুণীর চোখে ছিল হাজারো রঙিন স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখতেন, একদিন তিনিও আকাশে উড়বেন। স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টাও করে গিয়েছেন অনবরত। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। এবার আর স্বপ্ন নয়, সত্যি সত্যিই বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সুযোগ হলো তামিলনাড়ুর কৃষক-কন্যার।

তামিলনাড়ুর সালেমের সক্করাচেত্তিপত্তি গ্রামের বাসিন্দা রাম্যা আর। বয়স ২২ বছর । বা-মা দু’জনেই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ফলে পরিবারে লেখাপড়ার প্রচলন তেমন একটা নেই বললেই চলে। রাম্যা যে গ্রামে থাকতেন সেখানকার অধিকাংশ মেয়েরাই উচ্চশিক্ষিত নন। স্নাতক স্তরের গণ্ডিও পার করেছেন এমন হাতেগোনা কয়েক জন আছে। তবে নারীশিক্ষার গুরুত্ব প্রথম থেকেই বুঝতেন রাম্যা। তাই তামিলনাড়ুর গ্রামের অদৃশ্য বেড়াজালে নিজেকে বেশি দিন আবদ্ধ রাখতে পারেননি।

স্কুলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, সাহিত্য নিয়ে তামিলনাড়ুর নামাক্কালের একটি কলেজে ভর্তি হন রাম্যা। তার পাশাপাশি মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট নিয়েও পড়েন তিনি। ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে আগ্রহ তৈরি হওয়ায়,খোঁজ খবর নিয়ে তিনি এমবিএ-র জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

সংবাদমাধ্যমিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে, রাম্যা জানায়, যে, অঙ্ক তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল বটে, কিন্তু সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য সুবিধাই হয়েছে। এমনকি নিয়মিত উপন্যাস পড়ার শখ ছিল তার।

রাম্যা আরো বলেন, “আমার বাবা-মা আখ এবং হলুদের চাষ করে সংসার চালায়। পড়াশোনার চালানোর জন্য টাকা জোগাড় করতে মুশকিলেই পড়ত ওরা। তাই আমি শিক্ষাঋণ নিয়ে নিই। কয়েক বছর পর যে আমি ঋণ শোধ করে দিতে পারব, সেই ভরসা নিজের উপর ছিল।’’

তামিলনাড়ু থেকে উড়িষ্যায় এমবিএ পড়তে যান তিনি। এরপর থেকেই ভাগ্য ফেরে তার। সেখানে পড়াশোনা শেষ করতে না করতেই বিদেশ যাওয়ায় সুযোগ পেয়ে যান। সিঙ্গাপুরের একটি আন্তর্জাতিক ভোগ্য পণ্য সংস্থায় চাকরির সুযোগ পান রাম্যা। তার সহপাঠীদের মধ্যে সবথেকে বেশি প্যাকেজের চাকরি পেয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বর্তমানে তার মাসিক আয় ৫ লক্ষ টাকারও বেশি। তার বার্ষিক আয় হিসেবে করলে টাকার অঙ্কটা গিয়ে দাঁড়ায় ৬১.১৫ লক্ষ টাকা।

রাম্যা বলেন, ‘‘আমার গ্রামের কোনও মেয়েই পড়াশোনা করার জন্য গ্রামের বাইরে পা রাখেনি। আমার যাত্রা দেখে যদি এক জনও পড়াশোনা নিয়ে এগিয়ে যায়, তাতেই আমার স্বপ্ন সার্থক।’’ এই মে মাসেই কাজের সুত্রে নাইজেরিয়া পাড়ি দিয়েছেন তিনি।