ভারতের দুনিয়াকে বোকাবাক্সে বন্দি করা শুরু দূরদর্শনের মাধ্যমেই

বিশেষ প্রতিবেদন: ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ধাক্কায় সিনেমার পাশাপাশি টিভি দেখার প্রবণতা কমেছে। পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের মতো সর্বত্রই এখন নেটফ্লিক্স, হটস্টার-এর রমরমা। আর দূরদর্শন? এমন বলে টিভিতেও…

Sarla Maheshwari, Salma Sultan, Sheila Chaman, Minu Talwar

বিশেষ প্রতিবেদন: ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ধাক্কায় সিনেমার পাশাপাশি টিভি দেখার প্রবণতা কমেছে। পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের মতো সর্বত্রই এখন নেটফ্লিক্স, হটস্টার-এর রমরমা। আর দূরদর্শন? এমন বলে টিভিতেও কোনও চ্যানেল আছে জানেই না আজকের জেনারেশন। অথচ সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল ভারতের মানুষের পৃথিবীকে ঘরবন্দি করার প্রথম পদক্ষেপ। আজ সেই দূরদর্শনের জন্মদিন। 

১৯৫৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লীতে একটি অস্থায়ী স্টুডিও বানিয়ে প্রথম পথ চলা শুরু হয়েছিল দূরদর্শনের। তখন এটি পরীক্ষার পর্যায়ে ছিল। এটির নামকরণ করা হয়েছিল টেলিভিশন ইন্ডিয়া। সেখান থেকে দিল্লিস্থিত টাওয়ারের মাত্র কয়েক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে খুব স্বল্প সময়ের জন্য আরম্ভ হয় প্রথম সম্প্রচার। পরে ১৯৭৫ সালে টেলিভিশন ইন্ডিয়ার নাম পরিবর্তন করে হয়েছিল দূরদর্শন।

১৯৬৫ সালে, দৈনিক প্রোগ্রামগুলি দূরদর্শন নিয়মিত প্রচার করতে শুরু করে। পাঁচ মিনিটের একটি নিউজ বুলেটিনও শুরু হয়েছিল। তবে প্রাথমিকভাবে টিভি সম্প্রচারের বৃদ্ধি খুব ধীর ছিল। ১৯৭৫ সালের মধ্যে কেবল সাতটি শহরেই সম্প্রচার শুরু করা সম্ভব হয়েছিল। ১৯৮২ সালে রঙিন টিভি বের হয় এবং এশিয়ান গেমসের সম্প্রচার তার জনপ্রিয়তা বহুগুণ বৃদ্ধি করে। এখানেই টিভির রূপান্তর ঘটেছিল।

নতুন প্রোগ্রাম শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে প্রোগ্রামগুলি সকালে এবং তারপরে বিকেলে সম্প্রচার শুরু হয়। সপ্তাহে দু’বার চিত্রহার এবং রবিবার সন্ধায় রঙ্গোলি ও কৃষি দর্শনের জনপ্রিয়তার সাথে আজকের প্রোগ্রামগুলির কোনও মিল পাওয়া যায় না। ১৯৬৬ সালে শুরু হওয়া কৃষি দর্শন দেশে সবুজ বিপ্লব আনতেও ভূমিকা রেখেছে। আজ ২ টি জাতীয় এবং ১১ টি আঞ্চলিক চ্যানেল সহ দূরদর্শনের মোট ২১ টি চ্যানেল সম্প্রচারিত হয়। এটি ১৪ হাজার গ্রাউন্ড ট্রান্সমিটার এবং ৪৬ স্টুডিও সহ দেশের বৃহত্তম সম্প্রচারক। ঘটনা হল, যতই অন্যান্য মাধ্যমের রমরমা হোক এখনও ১৫ আগস্ট কিংবা ২৬ জানুয়ারির প্রোগ্রাম দেখতে গেলে ভরসা ডিডি।

১৯৫৯ সালে প্রারম্ভিক পর্যায়ে প্রথম সম্প্রচার শুরু হওয়ার পরে ১৯৬৫ সালে আকাশবাণীর একটি অংশ হিসেবে আরম্ভ হয় দূরদর্শনের নিয়মিত সম্প্রচার এবং ১৯৭২ সালে ভারতের টেলিভিশন পরিষেবা মুম্বই (তদানীন্তন “বম্বে”) এবং অমৃতসর পর্যন্ত পরিবর্ধিত হয়। এরপর ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি শহর দূরদর্শন পরিষেবার আওতাভুক্ত হয়। ১৯৭৫ সালের ৯ অগস্ট কলকাতায় প্রথমবারের জন্য স্থাপিত হয় “দূরদর্শন কেন্দ্র”। ১৯৭৬ সালে দূরদর্শনকে আকাশবাণী থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি স্বতন্ত্র এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিষেবায় রূপান্তরিত করা হয়। নয়াদিল্লিতে আকাশবাণী এবং দূরদর্শনের নিজস্ব কার্যালয়ে দু’জন পৃথক অধিকর্তা নিযুক্ত হন।

১৯৫৯ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওর স্টুডিওতে একটি ছোট ট্রান্সমিটার ও অস্থায়ী স্টুডিও নিয়ে কাজ শুরু করে দূরদর্শন। ৬ বছর পর, ১৯৬৫ সালে প্রতিমা পুরী প্রথম পাঁচ মিনিটের সংবাদ পাঠ করেন দূরদর্শনে।দূরদর্শন শুরু হয়েছিল গোটা পরিবারকে একসঙ্গে ধরে রাখার ভাবনা থেকে- সে সমাচার হোক অথবা সান্ধ্য শো, আঞ্চলিক এন্টারটেনমনেন্ট হোক কি জাতীয় প্রোগ্রাম অথবা স্পোর্টস।

<

p style=”text-align: justify;”>দুরদর্শনে সম্প্রচারিত বহু শো ক্লাসিকে পরিণত বয়েছে। ৮-এর দশকের শেষ থেকে ৯ এর দশের গোড়া পর্যন্ত মানুষের মন জয় করে নিয়েছিল তু তু ম্যাঁয় ম্যাঁয়, মহাভারত, দেখ ভাই দেখ, উড়ান, ফৌজি, মালগুডি ডেজ-এর মত শো গুলি।