Amrita Gon: নিজের রক্ত দিয়ে আর অপারেশন করে আহত ব্যক্তিকে প্রাণে বাঁচালেন চিকিৎসক অমৃতা

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: এই চিত্র যেন এক সিনেমার প্লট! সাজানো, গোছানো তবুও আসল। ঠিক মনে হবে কোনও ওভাররেটেড বাংলা সিরিয়াল চলছে। অথবা বেশ গুছিয়ে লেখা…

Amrita Gon pic by kolkata 24x7 Bengali News Portal

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: এই চিত্র যেন এক সিনেমার প্লট! সাজানো, গোছানো তবুও আসল। ঠিক মনে হবে কোনও ওভাররেটেড বাংলা সিরিয়াল চলছে। অথবা বেশ গুছিয়ে লেখা কোনও বাংলা সিনেমার গদগদে ক্লাইম্যাক্স। কিন্তু এই গল্প একদম সত্য। একদম বাস্তব। একটুকুও জল মেশানো নয় । ঘটনাস্থান বাঁকুড়া। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার। তবুও এই ঘটনা বাসি হয়নি এখনও। এক পেশেন্টকে নিজের রক্ত দিয়ে অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করলেন এক ডাক্তার! এই ঘটনা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের। ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার সকালের। একটি ম্যাটাডোরের সঙ্গে মুখোমুখি দুর্ঘটনা ঘটে একটি লড়ির। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় ম্যাটাডোরের চালক। সেই ম্যাটাডোরের চালকের অপারেশন টেবিলে রক্তের প্রয়োজন হয়! সেই রক্ত দেন খোদ ডাক্তার অমৃতা গন (Amrita Gon)। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি) অমৃতা ত্রাতা না হলে সেদিন কী হতো ?

এই ঘটনা খুবই বিরল! যে রাজ্যে ডাক্তার নিগৃহীত হয় সেইখানে এই ঘটনা অনেকটা গান্ধীবাদের মতো। তবুও ডাক্তার তো ডাক্তারের ধর্ম পালন করবে। অমৃতা kolkata 24×7-কে ফোনে জানালেন, “তখন অতসব ভাবার সময় ছিল না। আমি চাইছিলাম যে কত তাড়াতাড়ি অপারেশনটা করা যাবে। কারণ যত সময় এগোবে, তত বিষয়টা জটিল হয়ে যাবে।” অমৃতার থেকে আরও জানা যায় যে, পেশেন্টের বয়স ২৭ বছর। বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ পেশেন্টকে হাসপাতালে আনা হয়। বারোটার মধ্যে আমরা তাঁকে অপারেশন টেবিলে নিয়ে যায়। তাঁকে যখন প্রথম হাসপাতালে আনা হয় তখন প্রাথমিক পরীক্ষার পরে তাঁর ইউএসজি করে দেখা যায় পেটের মধ্যে রক্ত জমে আছে যা তৎক্ষণাৎ অপারেশন করতে হবে।

অমৃতার কথায়,” পেশেন্টের বাড়ির লোককে রক্ত জোগাড় করার কথা বলা হয়। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল তারা সেটা জোগাড় করতে পারবে না। ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে এক ইউনিট রক্ত জোগাড় করা গেলেও আরও এক ইউনিট রক্ত জোগাড় করতে হবে। পেশেন্টের ব্লাড গ্রুপ বি পজেটিভ। ঘটনাচক্রে আমিও সেই গ্রুপের একজন। তাই আমি সাতপাঁচ না ভেবেই ব্লাড দিই এবং তারপরে অপারেশন থিয়েটারের বাকি কাজ সম্পূর্ণ করি।” মানস গুমটা, ধ্রুবজ্যোতি মৌলিকের তত্ত্বাবধানে সফল অপারেশন করা হয়।

জিজ্ঞাসা করলাম, ” তুমিই কেন রক্ত দিলে? আর অন্য কোনও উপায় ছিল না?” অমৃতা ভাবল। ভেবে বলল, “তখন আমার মাথার মধ্যে শুরু ঘুরছিল কীভাবে কত তাড়াতাড়ি কাজটা করতে পারব।” আসলে তিনি তাঁর ধর্ম পালন করেছে। হয়ত রাজধর্ম! এই যুগে এক ইউনিট রক্তের জন্য যেখানে মারামারি, যেখানে অসাধু চক্র। সেখানে অমৃতার এই কাজ হয়ত মহৎ, হয়ত সত্যিই ডাক্তার কেন ভগবান তুল্য তারই উত্তর লেখা আছে। জানা গিয়েছে পেশেন্টের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। কয়েক দিনের মধ্যে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এই ঘটনা না ছাড়ার মতো। এই ঘটনা অনন্য। কুর্নিশ অমৃতা।