Biofuel: রান্নার পোড়া তেলেই তৈরি ডিজেল! যোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ

পোড়া তেলেই কামাল। তৈরি হচ্ছে বায়োফুয়েল (Biofuel) ডিজেল। ইউরোপে বিরাট চাহিদা। এই পোড়া তেলের যোগান দিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। কালো রঙের পোড়া তেল থেকে এই বায়োডিজেল…

পোড়া তেলেই কামাল। তৈরি হচ্ছে বায়োফুয়েল (Biofuel) ডিজেল। ইউরোপে বিরাট চাহিদা। এই পোড়া তেলের যোগান দিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। কালো রঙের পোড়া তেল থেকে এই বায়োডিজেল পাওয়ায় এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্ল্যাক গোল্ড’ বা ‘কালো সোনা’। এতে ঘুরছে গাড়ির চাকা। এই তেল বাজারের প্রচলিত ডিজেলের চেয়ে গুণেমানে অনেক উৎকৃষ্ট। বায়োডিজেলের পাশাপাশি পোড়া তেল থেকে গ্লিসারিন তৈরি করা হচ্ছে। 

সস্তায় ভালো ভাবে সকালের খাবার খাওয়ার কারণে যুগের পর যুগ ধরে টিকে আছে যেকোনও শহরের রাস্তার পাশে গড়ে ওঠা কচুরি, সিঙ্গাড়ার দোকান। মুড়ি সিঙ্গাড়ার সঙ্গে রাস্তাঘাটে নিয়মিত যুক্ত হচ্ছে নিত্য নতুন আইটেম। সবাই যে শুধু সস্তা খোঁজে এমন ব্যাপার নয় অনেকেই শখ করে খায় এসব দোকানে। কিন্তু তারা সকলেই জানেন যে এসব দোকানের খাবার অস্বাস্থ্যকর।

চিকিৎসকের মতে এই সমস্ত খাবার খেলে ব্লাডপ্রেসার ও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির অন্যতম কারণ দোকানের পোড়া তেল। রাস্তার পাশের এই দোকানে একই তেলে বারবার ভাজা হয় খাবার জিনিস। এই সমস্যা শুধু তাদেরই নয়। বরং অনেকের বাড়িতেও তেলের খরচা বাঁচাতে রান্না করা তেল উঠিয়ে রাখে পরের দিন ফের সেই তেলে রান্না করার জন্য। বড় বড় হেটেল রেস্তোরার বিরুদ্ধেও আছে এমন অভিযোগ।

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে এই পোড়া তেল কী করা দরকার? পোড়া তেলের একমাত্র সমাধান ছিল রাস্তায় ফেলে দেওয়া তবে তাতে হয় পরিবেশের ক্ষতি। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো এই পোড়া তেলের জন্য একটি সমাধান নিয়ে এসেছে। তারা পোড়া তেল ব্যবহার করে তৈরি করে চলেছে বায়োফুয়েল। ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে অস্ট্রিয়া। বছরে মোট ব্যবহৃত ডিজেলের একটি অংশ এখন ব্যবহার হচ্ছে এই খাত থেকে।

সেখানেই রয়েছে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ মানুষের বাড়ি বাড়ি থেকে এই তেল সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারপর তা বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে অস্ট্রিয়াতে। বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের প্রতিটি হোটেল রেস্তোরায় বছরে কয়েক হাজার কোটি স্তর পোড়া তেল জমে।

সরকারি সহযোগিতায় অস্ট্রিয়া ভিত্তিক ডিজেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মোয়েঞ্জার বাংলা প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করতে শুরু করেছে এই তেল। এক্ষেত্রে লিস্টে রয়েছে ঢাকার ১৫০০ থেকে ২০০০ রেস্তোরাঁ। সেখান থেকে তারা মাসের সংগ্রহ করছে একশো টন পোড়া তেল। মোয়েঞ্জার প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থের বিনিময়ে এই তেল কিনে নিয়ে যাওয়া হয়। তেল কতটুকু পরিস্কার তার উপর ভিত্তি করে মূলত সংগ্রহ করা হয়।

বর্তমানে এই রেস্তোরাঁ গুলো থেকে তেল সংগ্রহ করা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। এই তেল সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয় নির্দিষ্ট শোধনাগারে। সেখানে তেল থেকে আলাদা করা হয় ভাজাপোড়া। সেগুলো আবার ব্যারেলে করে পৌঁছে দেওয়া হয় অস্ট্রিয়ায়। তারা চেষ্টা করছে প্রত্যেক বাড়ি থেকেই এই তেল সংগ্রহ করা। বিভিন্ন বোতলে লেবেল লাগিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় সাবস্ক্রাইবারকে। বিভিন্ন এলাকায় আছে এদের হাব তেল জমা হলে বোতল পৌঁছে দেয় বাড়িতে বাড়িতে। হিসেব রাখা হয় প্রত্যেক মাসে তারা কত তেল জমা করেছেন। তার উপর ভিত্তি করে ব্যবহারকারীদের দেওয়া হয় উপহার।