ওড়িশা থেকে এসে বাংলায় শিল্পের গ্রাম তৈরি করেছেন ১৩৩ কারুশিল্পী

গুসকরা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার এবং বর্ধমান রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি অদ্ভুত গ্রাম যা বাংলার (Bengal) মানচিত্রে কম পরিচিত। এটি দরিয়াপুর…

art village in Bengal

গুসকরা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার এবং বর্ধমান রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি অদ্ভুত গ্রাম যা বাংলার (Bengal) মানচিত্রে কম পরিচিত। এটি দরিয়াপুর যেখানে প্রায় সবসময়ই গ্রামের পরিবার ডোকরা শিল্পের সূক্ষ্ম টুকরো তৈরি করে। এই পরিবারগুলি নিকটবর্তী ওড়িশা (Orissa) থেকে প্রায় ১২০ বছর আগে বাংলায় চলে এসেছিল। বর্তমানে দারিয়াপুরের ১৩৩ জন কারিগর পেশা হিসেবে ডোকরা কারুশিল্প চর্চা করেন।

গ্রামে একটি কমিউনিটি জাদুঘরও রয়েছে যেখানে ডোকরা ঐতিহ্য প্রদর্শন করা হয়েছে।দরিয়াপুর সারা বছর একটি আকর্ষণীয় দিনের সফর। শান্তিনিকেতন বা বাঁকুড়ার দর্শনার্থীরা প্রাচীন ডোকরা শিল্পের অভিজ্ঞতার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত পথ ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন। শিল্পীদের সমষ্টি প্রতি অক্টোবরে তাদের বাৎসরিক গ্রাম মেলা উদযাপন করে।

ডোকরা তৈরি একটি শিল্প কর্ম। এটি একটি প্রাচীন শিল্পকর্ম। এই শিল্পের ইতিহাস প্রায় ৪০০০ হাজার বছরের পুরানো। সিন্ধু সভ্যতার শহর মহেঞ্জদাড়োতে প্রাপ্ত “ড্যান্সসিং গার্ল” বা “নৃত্যরত নারী মূর্তি” হল ডোকরা শিল্পের নিদর্শন। ভারত ছাড়াও চীন,মালয়েশিয়া,জাপান প্রভৃতি দেশে এই শিল্প কর্ম পাওয়া যায়।

মনে করা হয় মধ্যপ্রদেশ এর বাস্তর ও ছত্তিসগড়ে এই শিল্পের উদ্ভব হয়। পরে ঝাড়খণ্ড ও বিহার-এ ছড়িয়ে পড়ে। আরও পরে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা রাজ্যে এর প্রসার ঘটে। বর্তমানে ডোকরা শিল্পে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম নাম।

পশ্চিমবঙ্গে ডোকরা শিল্পের প্রসার ঘটে আজ থেকে কয়েকশো বছর পূর্বে। প্রধানত ঝাড়খণ্ড থেকে এই শিল্প পুরুলিয়া হয়ে এই শিল্প রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম জেলাগুলো হল- বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর।

পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলা-বিকনা, খাতডার লক্ষীসাগর, লাদনা,ছাতনা, শববেড়িয়া। বর্ধমান-গুসকরার দরিয়াপুর ও পুরুলিয়ার নাডিহায় ডোকার শিল্পের প্রধান কেন্দ্রগুলি অবস্থিত।

এর মধ্যে বাঁকুড়ার বিকনা যা বর্তমানে ডোকরা গ্রাম নামে পরিচিত ও বর্ধমানের দরিয়াপুর উল্লেখযোগ্য। এই দুই জায়গার ডোকরা শিল্পের প্রসিদ্ধি জগৎজোড়া।