Mythology: কঙ্কালীতলা-লাল মাটিতেই অবস্থিত তন্ত্রমন্ত্রের আভিচারিক ক্ষেত্র

লাল মাটির আদর আর প্রশান্ত বনময় পরিবেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে আমাদের ছোট নদী কোপাই। রাঙামাটির দেশে মাঠ ঘাট বনবাদাড় পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় শক্তিপীঠ…

kankalitala

লাল মাটির আদর আর প্রশান্ত বনময় পরিবেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে আমাদের ছোট নদী কোপাই। রাঙামাটির দেশে মাঠ ঘাট বনবাদাড় পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় শক্তিপীঠ কঙ্কালীতলায়।

বীরভূমের কঙ্কালীতলা , ৫১ সতীপীঠের অন্যতম প্রধান এই স্থান। কথিত আছে এখানে সতীর কাঁকাল বা কোমর পড়েছিল। তার থেকেই এই নামকরণ।তন্ত্রচূড়ামণিতে একান্নপীঠের তালিকায় কাঞ্চী নামের জায়গাকে আঠাশতম সতীপীঠ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কঙ্কালীতলা আজকের নাম। প্রাচীন তীর্থ হিসেবে এর নাম ছিল কাঞ্চীদেশ। এখানে দেবী হলেন দেবগর্ভা। তাঁর ভৈরব হলেন রুরু। এছাড়াও এই সতীপীঠ ঘিরে রয়েছে আরও বহু কাহিনী ও বিশ্বাস। যা এই স্থানকে ভক্তদের মনে এক বিশেষ জায়গা করে দিয়েছে। সাধারণ সময় মায়ের টানে এখানে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা।

এই মন্দিরের সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ঠ হল, এখানে কোনও মাতৃ বিগ্রহ বা প্রতিমা নেই। এখানে পুজো হয় মায়ের ছবিতে। জানা যায়, সতীর কাঁকাল রয়েছে একটি কুণ্ডের মধ্যে। কথিত আছে ওই কুণ্ড ৩টি সুড়ঙ্গের মাধ্যমে যুক্ত রয়েছে কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সঙ্গে। তার মধ্যে একটি দিয়ে বছরভর জল আসে ওই কুণ্ডে। আর সে কারণেই কখনও শুকোয় না কঙ্কালীতলার কুণ্ড। তবে মায়ের ইচ্ছা অনুসারে প্রতি ১৯-২০ বছর অন্তর একবার করে শুকিয়ে যায় কুণ্ডটি। আর ঠিক সেই সময় যেকোনও কারণেই হোক বন্ধ হয়ে যায় মণিকর্ণিকা ঘাটও। আবার পুজো পাঠের পরে রাতারাতি জলে ভরে যায় কুণ্ড”।

ওই কুণ্ডের মধ্যে রয়েছে পঞ্চশিব। প্রতিবছর একবার করে সেই পঞ্চশিবকে তুলে আনা হয়। পুজোর পর পয়লা বৈশাখে দিন ফের কুণ্ডে রাখা হয় পঞ্চশিবকে”।মন্দির চত্বরে রয়েছে ৫ ধরনের পাতা বিশিষ্ঠ একটি গাছ বা পঞ্চবৃক্ষ। সেই গাছে মনস্কামনা জানিয়ে ঢেলা বাঁধেন ভক্তরা। আর মনস্কামনা পূর্ণ হলে খুলে ফেলা হয় সেই ঢেলা। আবার ওই গাছেরই একটি অংশ প্রাকৃতিক ভাবেই শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করেছে।

গুপ্ত তন্ত্র সাধনার জন্য প্রসিদ্ধ কঙ্কালীতলা। কথিত আছে, এককালে ঋষি কনখলের আশ্রমও ছিল এখানে। এমনকি একথাও শোনা যায় যে, অজয় উপত্যকার এই তীর্থভূমিতে পা রেখেছিলেন জৈন ধর্মগুরু মহাবীর। আজও লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী আসেন কঙ্কালীতলায় পূণ্যলাভের আসায় আর সন্ধে হতেই বদলে যায় পরিবেশ। তন্ত্রমন্ত্রের আভিচারিক ক্ষেত্র হিসেবে প্রকাশ পেতে থাকে কঙ্কালীতলা।