Health Tips: ঠাণ্ডা-গরমে কানের ব্যাথা, কান ফুলে লাল! রইল বিশিষ্ট ইএনটি সার্জনের টিপস

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: এই ঠান্ডা গরমে একটু সর্দি কাশি এখন বাঙালির দোসর হয়ে উঠেছে। সঙ্গে গলা ব্যথা জ্বর তো আছেই। আবার ইদানীং কানের সমস্যায় ভুগছেন…

Abhik Das, Eminent ENT Surgeon

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: এই ঠান্ডা গরমে একটু সর্দি কাশি এখন বাঙালির দোসর হয়ে উঠেছে। সঙ্গে গলা ব্যথা জ্বর তো আছেই। আবার ইদানীং কানের সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। কান ফুলে লাল হয়ে উঠছে। অনেক সময় তীব্র যন্ত্রনায় ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। আবার কান থেকে রসও গড়াচ্ছে। তাহলে এখুনি সাবধান হোন।  kolkata24x7 -এর এই প্রতিবেদন আপনাকে সতর্ক করার জন্যই লেখা হচ্ছে, অযথা ভয় পাওয়ানোর জন্য নয়। বিশিষ্ট নাক-কান-গলার  চিকিৎসক ডাক্তার অভীক দাস kolkata24x7-এর মুখোমুখি হয়ে জানালেন এই মরশুমে কানের যত্ন নেবেন কীভাবে। আবার কখনই বা দৌড়াতে হবে ডাক্তারের কাছে।

কী করবেন-
১) এই ঠান্ডা গরমের মরশুমে যদি পারেন একটু কম ঠান্ডা লাগানোর চেষ্টা করুন। সেটাই চিকিৎসার প্রাথমিক নিয়ম। বারবার এসি থেকে ঢোকা বেরোনো করবেন না। গরম থেকে এসেই হুট করে ঠান্ডার মধ্যে ঢুকে যাবেন না। সময় নিন। শরীরকে স্বাভাবিক উষ্ণতায় আসতে সময় দিন। এই সময় রাস্তায় বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করুন।

২) এই সময়ে প্রচুর পেশেন্ট আসছে কানের ব্যথার সমস্যা নিয়ে। বাচ্চাদের মধ্যেও এই সমস্যা প্রবল। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কানে ব্যথার সমস্যা বেশী আর বড়দের ক্ষেত্রে কানের ভারী ভাব বেশী।

৩) তাঁর কথায়, ” বড়দের ক্ষেত্রে ওএমই অর্থাৎ ওটিটিস মিডিয়া উইথ ইনফেকশান। যার বাংলা অর্থ মধ্য কর্ণে জল জমা। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এওএম অর্থাৎ একুউট ওটিটিস মিডিয়া। যার বাংলা মানে মধ্য কর্ণে ইনফেকশন। এটি কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।”

৪) শিশুরা যদি রাতে হঠাৎ করে কেঁদে ওঠে। অনেক সময় বাড়ির লোকেরা বুঝতে পারেন না এই কাঁদার কারণ। এই কাঁদার কারণ কিন্তু কান থেকে আসতে পারে। বিশেষত এই ব্যথা রাতের দিকে কিংবা ভোররাতের দিকে বেশী হয়। দীর্ঘদিন এই ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। দীর্ঘদিন কান ফুলে থাকলে, কান লাল হয়ে গেলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান। নয়ত দীর্ঘদিন এরকম হয়ে থাকলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে রস গড়াতে থাকলে সেটা জটিল দিকে চলে যাবে।

৫) বড়দের ক্ষেত্রে এই একই সমস্যা হয়। তবে ব্যথা অতটা না থাকলেও কান ভারী হওয়ার সমস্যা থাকে। কান ফুলে লালও হয়ে যায়। আসলে এইসময় মধ্যকর্ণে সর্দি জমে থাকে যার থেকে সমস্যার তৈরি হচ্ছে। আর ডাক্তারবাবুর কথায়, ” ইদানীং যে সমস্যাগুলো পাচ্ছি সেখানে সর্দির পরিমাণ এত গাঢ় যার থেকে সমস্যা হচ্ছে। সেটা জমেই যাচ্ছে।”

৬) একটু কান কটকট করা, কান ভারী হওয়া, মনে হয় কানে জল জমে আছে, কিংবা কান থেকে কিছু বেরিয়ে আসতে চাইছে ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাড়িতে গরম জলে ভেপার নিতে পারেন। গার্গেল করতে পারেন। তবে যদি দেখেন দিন পাঁচেকেও কমছে না তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান। কানের ভেতর ভোঁ  ভোঁ শব্দ হওয়া কিংবা ভারী হয়ে থাকা ভাল লক্ষণ নয়। অনেক এই সমস্যা গুলো থেকেই কানের পর্দা ফুঁটো হয়ে সেখান থেকে রস বেরোয়। যা পরবর্তী কালে কানে শোনার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে।

৭) সবার আগে নাককে বাঁচান। কারণ নাকের থেকেই সবটা জুড়ে আছে। নাকের ক্ষেত্রে স্যালাইনের ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন। বাচ্চা এবং বড় উভয় ক্ষেত্রেই এই পরামর্শ দিলেন ডাক্তারবাবু। কানে ব্যথা হলে ব্যথার ওষুধ না জিজ্ঞাসা করে খাওয়া উচিত নয়।

৮) কানের ব্যথা হলে সেঁক দিতে পারেন তবে সেটাও ডাক্তারের পরামর্শে। কারণ কান খুব সেনসেটিভ অর্গ্যান।

৯) ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া কানে ড্রপ দেবেন না। কোনও কিছু দিয়ে কান খোঁচাবেন না। আর নাকের ক্ষেত্রে স্যালাইনের ড্রপ সাতদিনের বেশী ব্যবহার করবেন না।

১০) কানের মধ্যেকর্ণে সর্দি জমে থাকলে বিশেষ পদ্ধতিতে তা পরিষ্কার করার নিয়ম আছে। একমাত্র ডাক্তারি সহযোগিতায় সেই নিয়ম মানুন।

( বিশেষ বার্তা- এই লেখাটি জনসাধারণের জন্য লেখা। এই লেখাটির উপর ভিত্তি করে কিছু করবেন না। ডাক্তারি পরামর্শ নিন। )
(ডাক্তার অভীক দাস, বিশিষ্ট ইএনটি সার্জেন)