কলকাতার ঐতিহ্যে আরও ধাক্কা, মহানগরের মাত্র একটি রুটেই ট্রাম চালাতে আগ্রহী রাজ্য

আরও সঙ্কুচিত হওয়ার পথে কলকাতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ ট্রাম রুট। ২০২৩ সালেই সার্ধশত বছর পূর্ণ করেছে কলকতার ট্রাম। আর ঠিক তার পরের বছরেই চরম…

West Bengal Government is interested in running the only Esplanade-Khidirpur route tram in Kolkata, মহানগরের মাত্র একটি রুটেই ট্রাম চালাতে আগ্রহী রাজ্য

আরও সঙ্কুচিত হওয়ার পথে কলকাতার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ ট্রাম রুট। ২০২৩ সালেই সার্ধশত বছর পূর্ণ করেছে কলকতার ট্রাম। আর ঠিক তার পরের বছরেই চরম অস্তিত্ব সঙ্কটে ঐতিহ্যবাহী এই পরিবহণ পরিষেবা। বর্তমানে শহরের তিনটি রুটে যাত্রীরা ট্রাম পরিষেবা পেয়ে থাকেন। এবার তা কমিয়ে একটি মাত্র রুটেই ট্রাম চালাতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা হাইকোর্টকে এই সিদ্ধান্তই জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার।

   

শহরে ট্রাম পরিষেবা চালু রাখার দাবিতে সরব ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলাও করেছে সংগঠনটি। সেই প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছিল উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই একটি রুটের ট্রাম চালানোর কথা জানাতে চলেছে পরিবহণ দফতর।

কলকাতায় এখন টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-ধর্মতলা এবং ধর্মতলা-শ্যামবাজার রুটে ট্রাম চলাচল করে। তবে, রাজ্য সরকার চাইছে, এইসব রুট বন্ধ করে এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুরের রুট সঙ্কুচিত করে ট্রাম চলুক। গণপরিবহণ পরিষেবার বদলে জয়-রাইড হিসাবেই তিলোত্তমার বুকে ট্রাম চালাতে আগ্রহী রাজ্য।

তবে, বিগত বছর চারেক ধরে বন্ধ রয়েছে এসপ্ল্যানেড-খিদিরপুর রুটের ট্রাম চলাচল। করোনার সময় আমফান দুর্যোগের ফলে ওই লাইনে বিপর্যয় ঘটে। কিন্তু, সেই লাইনটিকেই ফের চালু করতে চাইছে পরিবহণ দফতর।

কেন এমন সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের?

কলকাতায় রাস্তার তুলনায় জনসংখ্যা ও গাড়ির চাপ অনেক বেশি। প্রতি দিন যান নিয়ন্ত্রণে নাভিশ্বাস অবস্থা হয় কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের। তাই ট্রাম তুলে দিয়ে শহরকে আরও গতিশীল করে তোলার কথা রাজ্য প্রশাসনকে আগেই লালবাজার জানিয়েছিল বলে খবর। পুলিশের সেই দাবিকেই মান্যতা দিতে মরিয়া রাজ্য সরকার।

রাজ্যে মহার্ঘ সুরা, কোন কোন মদের উপর কী হারে বাড়ছে দাম?

আনন্দবাজার ডিজিটালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন যুগ্ম সম্পাদক সাগ্নিক গুপ্তের কথায়, ‘পৃথিবীর ৪৩০টি দেশে নতুন করে ট্রাম পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। কারণ, এত কম খরচে পরিবেশবান্ধব ও দূষণহীন যান মেলা সম্ভব নয়। অথচ আমাদের রাজ্য সরকার ট্রাম পরিষেবাটাই তুলে দিতে চাইছে। বলা হচ্ছে, মন্থর গতির ট্রাম শহরের ট্র্যাফিক জ্যামের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটি ট্রামের দু’টি কামরা ১২০ জন মানুষকে পরিবহণ পরিষেবা দিতে পারে। অথচ সেই ট্রাম তুলে দিয়ে কুড়িটি অটো রাস্তায় নামিয়ে ১২০ জন মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। একটি ট্রাম রাস্তায় বেশি যানজট করে, না কি কুড়িটি অটো যানজট করে? এমন প্রশ্ন প্রশাসন না বুঝুক, কলকাতার বাসিন্দারা নিশ্চয়ই জানেন।’

কলকাতার জন্যে আরও এক বিমানবন্দর! জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ, কোথায় হবে?

পাল্টা পরিবহণ দফতরের যুক্তি, ট্রাম তুলে দিয়ে পরিবেশ বান্ধব ই-বাস চালানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। যার জবাবে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রশ্ন, যেখানে নামমাত্র খরচে ট্রাম পরিষেবা বহাল রেখে পরিবেশ রক্ষা করার সুযোগ রয়েছে। সেখানে কেন কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ই-বাস এনে সরকারি খরচ বাড়ানো হচ্ছে?