DA না‌ দিতে পেরে বাঁচতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে তৃণমূল; বিস্ফোরক দিলীপ

চলতি বছরের মে মাসেই রায়ে তিন মাসের মধ্যে রাজ্যের সরকারি কর্মচারিদের বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার…

চলতি বছরের মে মাসেই রায়ে তিন মাসের মধ্যে রাজ্যের সরকারি কর্মচারিদের বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপরই রাজ্যে সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ রাজ্য। DA মেটানো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় রাজ্যকে তুলোধনা করে, তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। 

এই প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, “এই সরকারের আর কোনও কাজ নেই! লোয়ার কোট, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এই করতে থাকে! মানুষের করের টাকা খরচা করে নেতাদের বাঁচাবার জন্য নিজেদের মুখ বাঁচানোর জন্য কোটি কোটি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখন সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে নিজেরা বাঁচবার চেষ্টা করছে। তাই দেখুন, চারদিকে বোমা, বন্দুক, খুনোখুনি আর দুর্নীতি চলছে! সরকার এখন অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই করছে”।

নিজেদের নেতাদের মামলা লড়ার জন্য মানুষের করের টাকা খরচ করছে তৃণমূল সরকার এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে বিজেপি সাংসদ শাসকদের দিকে তোপ দেগে বলেন, সরকারের আর কোনো কাজ নেই। শুধু কোর্টে কোর্টে মুখ বাঁচাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উন্নয়ন নেই, আইন শৃঙ্খলা নেই। চারিদিকে বোমা বন্দুক আর স্ক্যাম চলছে। টাকা নেই কেন? এই বলেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তিনি আরো প্রশ্ন করেছেন, কেন্দ্রের হারে যদি বাকি রাজ্যগুলো ডিএ দিতে পারে তাহলে পশ্চিমবঙ্গ বাদ যায় কীভাবে?

 রাজ্য সরকারের একাধিক নেতার দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে খোঁচা মেরে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সাড়ে ১৪ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ডের ১৬০০ কোটি টাকা বছরে লুঠ হচ্ছে। ৬২ লক্ষ বাতিল রেশন কার্ডের রেশন লুঠ হচ্ছে”। দুর্নীতিগ্রস্তদের কটাক্ষ করে তাঁর প্রশ্ন,’বছরে কোটি কোটি টাকা লুটেই যাচ্ছে, তবুও পেট ভরছে না। কত বড় পেট নেতাদের একবার ভাবুন।’

২০১৬ সালে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে মামলা শুরু হয়েছিল স্যাটে। স্যাটের বক্তব্য ছিল, মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মীদের আইনত অধিকার । স্যাটের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় ২০১৮ সালের অগস্টে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণও ছিল, ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই রায় মানতে চায়নি। আবার হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে পাল্টা হাইকোর্টের সেই রায়ের রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয় রাজ্য। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলার পরেও, সরকারি কর্মচারিদের পক্ষেই রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। 

১২ অগাস্ট ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে, হাইকোর্টে যায় রাজ্য। ৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দেয়। রাজ্যের দাবি,’রাজ্যের সরকারি কর্মীদের কোনও ডিএ বকেয়া নেই’। এরপর রাজ্য সরকারের রিভিটিশনের রায়ে ২২ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে। পুরনো রায় বহাল রাখে দেয় আদালত। আর এই রায়ের বিরোধিতা করে রীতিমতো কলকাতা হাইকোর্টকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার।