নিউজ ডেস্ক: আফগানিস্তান দখলের পর এবার কি তালিবান সহযোগী পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গিদের লক্ষ্য ভারতের ভূ-স্বর্গ? গত কয়েকদিন তালিবানের বন্ধু জঙ্গি সংগঠনগুলির গতিবিধি কিন্তু সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে৷ দু’দিন আগেই জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান সৈয়দ সালাহউদ্দিন ভারতকে হুমকি দিয়ে একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে৷
তার পরেই সোমবার কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জইশ-ই-মহম্মদ পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) বেশ কয়েকটি সমাবেশ করেছে। এই দুই জঙ্গিগোষ্টীর সদস্যরা আফগানিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে তালিবানদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়েছিল৷ কাবুল দখলের পরে পাকিস্তানের মদতে তারা পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ফিরে এসেছে।
কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠীর পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সমাবেশ করার বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে৷ সেই ভিডিওতে জঙ্গি সদস্যরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে বাতাসে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। ভিজ্যুয়ালগুলি আব্বাসপুর, হাজিরা এবং সেন্সা এলাকার৷ এই এলাকাগুলি নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) খুব কাছে৷
তালিবানদের নিয়ে কাশ্মীর দখলের হুমকি হিজবুল মুজাহিদিন প্রধানের
গোটা আফগানিস্তান জুড়ে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে তালিবানদের আক্রমণ এবং তার সঙ্গে আতঙ্ক। এবার সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল ভারতেও। সৌজন্যে জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান সৈয়দ সালাহউদ্দিন। তালিবানরা আফগানিস্তান দখল করার পরেই ভারতকে হুমকি দিয়ে একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন এই জঙ্গিনেতা। জম্মু ও কাশ্মীরে সক্রিয় একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। এরা মূলত জম্মু ও কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের পক্ষে।
অডিও বার্তায় তিনি তালেবান জঙ্গিদের জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর জন্য সাহায্যের অনুরোধ জানান। অনলাইনে পোস্ট করা ওই বিবৃতিতে হিজবুল মুজাহিদিন প্রধান সৈয়দ সালাহউদ্দিন বলেন, “আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যে তিনি আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতকে শক্তিশালী করুন যাতে তারা ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের সমর্থন করতে পারে।”
এদিকে, তালিবানিদের শান্তির আশ্বাস সত্ত্বেও, আফগান এবং বিদেশীরা কাবুল থেকে পালিয়ে চলেছে। মার্কিন জেনারেল বলেছেন, আগস্ট থেকে তালিবানি শাসন শুরুর পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৭০০০ জনকে অন্য দেশে সরিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি। মৃত্যুর পর তাঁর দেহকে পাকিস্তানি পতাকায় মুড়ে ঘোরানো হয় উপত্যকায়। সেই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন কাশ্মীরের প্রচুর মানুষ, যারা প্রত্যেকেই সমর্থন করেন সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনকে। সেই বুরহান ওয়ানির বাবা মোজাফফর ওয়ানি সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতীয় তেরঙ্গা উত্তোলন করেছেন।
হিজবুল মুজাহিদিনের ‘পোস্টার বয়’ ছিলেন বুরহান ওয়াদি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিয়মিত কাশ্মীরি যুবকদের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য অস্ত্রের ছবি পোস্ট করতেন এই কমান্ডার। ২০১০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর প্রায় ছ’মাস ব্যাপক অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল কাশ্মীরজুড়ে।
গতকালও সেনার গুলিতে নিহত হয় দুই হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার পম্পোরে এনকাউন্টার শুরু হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমান অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম। ঠিক তার পরেই মুজাহিদিন কমান্ডারের এই ভিডিও বার্তা চিন্তা বাড়িয়েছে সরকারের।