আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে স্বঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছে। এর মাঝেই দলভিত্তিক রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের আহ্বান জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দিলেন নবান্ন অভিযানের ডাক। তবে, এই অভিযানের জন্য নির্যাতার পরিবারের কাছে বিশেষ শর্ত দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। বলেছেন, বলেছেন, ‘বিজেপি, সিপিএম ইত্যাদি প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই কিছু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই আমরা এই পদক্ষেপ করতে পারছি না। নির্যাতিতার বাবা একবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিন, সবাই বেরোবে। তাঁকে আসতে হবে না, তিনি বয়স্ক মানুষ, শোকাতুর অবস্থায় রয়েছেন। জাতীয় পতাকা নিয়ে একবার শুধু ডাকটা দিন তিনি। বাকিটা আমরা করে দেব জাতীয় পতাকা নিয়ে।’
ইতিমধ্যেই আরজি করের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। দোষীর ফাঁসির সাজার দাবি করেছে শাসক দল তৃণমূল। সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় তৃণমূলকে বিপাকে ফেলতে ‘রাম-বাম’ উস্কানির অভিযোগ তুলেছেন। নবান্নের তরফে অফিসে রাতে মহিলাদের ডিউটি নিয়ে নির্দেশিকার কতা বলা হয়েছে। অবশ্য, আরজি করের ঘটনা ও পুলিশি তদন্ত নিয়ে জোড়-ফুলের অন্দরেই বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে। যা নিয়েও মুখ খুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
মমতার পুলিশের হাতেই গ্রেফতারির আশঙ্কা! এবার হাইকোর্টে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর
সোমবার শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘রাজ্য সরকার বলছে, রাত মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়। এই লজ্জা রাখার কোনও জায়গা আছে? যেখানে সংসদে, বিধানসভায় মহিলাদের আসন সংরক্ষণ বিল পাস হচ্ছে, নারী সশক্তিকরণের কথা বলা হচ্ছে, রাজ্যগুলিতে নারীকেন্দ্রিক জনকল্যাণমূলক নানা কর্মসূচি নিচ্ছে কেন্দ্র, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় মহিলাদের বাড়ির মালিকানা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এই রাজ্য সরকার বলছে মহিলাদের রাতে ডিউটি করার প্রয়োজন নেই? মহিলাদের যে রাতে নিরাপত্তা নেই, সেটা সরকার নিজেই বলছে নবান্ন থেকে? এর পরে হয়তো বলবে দিনের বেলাতেও মহিলারা বাড়ি থেকে বেরোবেন না।’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘নির্যাতিতার বাবা কী করবেন, সেটা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। কে দলমত নির্বিশেষে আন্দোলন করবেন, সেটাও তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু শুভেন্দুর মতো নেতারা ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছেন। জাতীয় পতাকা যে কেউ বহন করতে পারে। তবে জাতীয় পতাকা নিয়ে কোনও দুষ্কৃতীদের তোল্লাই দেওয়াটা কোনও সচেতন রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। এই জাতীয় পতাকা নিয়েই তো শুভেন্দুবাবুরা তাঁদের দুষ্কৃতীদের আরজি কর হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। জাতীয় পতাকার এভাবে অবমাননা করা যায় না। শুভেন্দুবাবুরা কি সেটা ভুলে গিয়েছেন?’ ‘‘ তাঁরা আন্দোলনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।’