আদুরে রোদের বড়দিন, গির্জা-কথা জেনে নিন

News Desk: বড়দিনের আমেজ গায়ে মেখে নিয়েছে কলকাতা। ক্রিসমাস ট্রি আর আলোর মালায় সেজেছে পার্ক স্ট্রিটও। বড়দিন মানেই দেদার মজা, দিনভর বেড়ানো আর কেটে খাওয়া। …

News Desk: বড়দিনের আমেজ গায়ে মেখে নিয়েছে কলকাতা। ক্রিসমাস ট্রি আর আলোর মালায় সেজেছে পার্ক স্ট্রিটও। বড়দিন মানেই দেদার মজা, দিনভর বেড়ানো আর কেটে খাওয়া। 

 

কলকাতায় এই বড়দিনের উৎসব ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছিল, তা অনুমান করা না গেলেও খ্রিস্ট ধর্মালম্বীরা এদেশে আসার পর থেকে উপাসনার জন্য চার্চ বা গির্জা নির্মাণ করেন। আর ধীরে ধীরে বঙ্গ সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ে চার্চ ভ্রমণের রীতি। আবারও বড়দিন আসছে, তাহলে দেখে নেওয়া যাক শহর কলকাতার বিখ্যাত চার্চগুলির ইতিহাস আর ঠিকানা। 

 

সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ : কলকাতার ক্যাথিড্রাল রোগে অবস্থিত  সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল তৈরির কাজ শুরু হয় ১৮১৯ সালে, তৎকালীন বাংলার গভর্নর জেনারেল মারকুইসের নির্দেশে। পরে আর্থিক সংকটে থমকে যায় কাজ। পরবর্তীতে আবার ১৮৩২ সালে এই চার্চের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৭একর জমির ওপর ইন্দো-গথিক রিভাইভাল শৈলিতে তৈরি হয় চার্চ। যদিও আধুনিক রীতির আইরন ফ্রেম ওয়ার্কের কাজও লক্ষ্য করা যায় চার্চের নকশাতে। ৮ অক্টোবর ১৮৪৭ সালে এই চার্চের দরজা খুলে দেওয়া হয় ইংরেজদের জন্য। সেইসময় রানি ভিক্টোরিয়া এই চার্চের জন্য ১০টি রুপোর প্লেট উপহার স্বরূপ পাঠিয়েছিলেন। 

 

সেন্ট জনস চার্চ: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, শহর কলকাতায় রাজত্ব কায়েম করার শুরুর দিকে জনসাধারণের জন্য প্রথম যে ‘পাবলিক বিল্ডিং’ তৈরি করেছিল, সেটাই আজকের সেন্ট জনস চার্চ। একসময়ে ইংরেজদের বারুদের কারখানাই আজকের ডালহৌসির ব্যস্ত অফিসপাড়ার মধ্যে ইতিহাসের নানা আকর বুকে নিয়ে সবুজ মরুদ্যানের মত দাঁড়িয়ে। এই চার্চের জমি দান করেন রাজা নবকৃষ্ণ দেব। চার্চের বাগানে শায়িত রয়েছেন কলকাতার তথাকথিত প্রতিষ্ঠাতা জোব চার্নক। রয়েছে বাংলা তথা তৎকালীন বম্বের গভর্নর লর্ড ব্রেবোর্ন-এর সমাধি। লেডি ক্যানিং-এর সুসজ্জিত স্মৃতিসৌধ আছে চার্চের উত্তরের বারান্দায়। তারই মাঝখানে বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ডোরিক থামের বারান্দা, স্টেনড গ্লাসের জানলা আর পিরামিডের মত বেলটাওয়ার নিয়ে হলুদ রঙের সেন্ট জনস চার্চ। একসময় এই চার্চকে স্থানীয়রা বলছেন ‘পাথুরে গির্জা’। আজও চার্চের প্রতি কোণায় সেই ব্রিটিশ কলকাতার ইতিহাস যেন বড়ই জীবন্ত। 

 

খ্রিস্ট দ্য কিং চার্চ : শহর কলকাতার বুকে আরও এক অনবদ্য চার্চ এটি। বহুদিন ধরে কলকাতার চরাই উতরাই দেখে এই চার্চটি। বড়দিন উপলক্ষ্যে এখানেও ভক্তরা প্রার্থনা করতে উপস্থিত হন। সইয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউর এই চার্চ খোলা থাকে ভোর ৬ টা ১৫ মিনিট থেকে সন্ধে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।  

 

আর্মেনিয়ান চার্চ: এই চার্চটি প্রতিষ্টিত হয়েছিল ১৭২৫ সালে। এটি কলকাতার সব থেকে পুরনো চার্চ। এই চার্চে পুরনো দিনের অনেক পেইন্টিং সংরক্ষণ করা রয়েছে। আর্মেনিয়ান স্ট্রিটের এই চার্চটিও সেজে ওঠে বড়দিন উপলক্ষ্যে। 

 

সেন্ট থমাস চার্চ : পার্কস্ট্রিটের এই চার্চটি রোমান ক্যাথসিক চার্চ। কলোনিয়াল আকৃতির এই গির্জা কলকাতার অন্যতম গির্জার মধ্যে এটি একটি। এখানেই শায়িত ছিলেন মাদার টেরেজা। এই চার্চটিও বড়দিনে সেজে ওঠে অনবদ্য লুকে। 

 

সেন্ট অ্যান্ড্রেউ চার্চ:  ব্রাবন রোডে অবস্থিত কলকাতার এটি একটি জনপ্রিয় চার্চ। ১৮১৮ সালে তৈরি করা হয় চার্চটি। 

 

বড়দিনের সকালে একবার সেই সময়ের কলকাতার ইতিহাসকে চাক্ষুষ করতে এই চার্চগুলিতে ঘুরে আসতেই পারেন আপনি।