স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা চলছে। একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই (CBI) তদন্তও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অনেককেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এতদিনের প্রাপ্ত বেতনও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের এই অবস্থানে বিরোধীরা রাজ্য সরকারকেই নিশানা করেছে। উল্টোদিকে স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্য সরকারও কিছুটা কোনঠাসা।
২০১৬ সালের নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠতেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়নি। তাই আদালতের সেই নির্দেশ পালন হয়নি। পরিবর্তে কমিশনের আইনজীবী জানান, সিবিআইয়ের হেফাজতে এসএসসির সার্ভার রুম। তাই অনুমতি না পেলে তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণীর ভুগোল শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই সংক্রান্ত শুনানি ছিল বুধবার। অভিযোগ, ভুগোলে অনেক কম নম্বর পেয়েও অনেকে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। তাই সকল চাকরি প্রার্থী প্রাক্ত নম্বর প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছিল। ৭ জুনের মধ্যে সেই রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল। কিন্তু তা না হয়নি।
কমিশনের আইনজীবী বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের সার্ভার রুমের দায়িত্ব এখন সিবিআইয়ের হাতে। তাই সিবিআইয়ের অনুমতি ছাড়া সেই তথ্য হাতে পাওয়া সম্ভব নয়। এরপরেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে হাজিরা দিতে বলে আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে। সিবিআইকে এবিষয়ে চিঠি চেওয়া হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনে একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের ওপর তদন্তভার দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআই দফতরে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন এসএসসির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর কথা সামনে আসতেই আচার্য সদনে বসানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা। চাকরী প্রার্থীদের অনুমান, সমস্ত তথ্য দ্রুত বিকৃত করা হতে পারে। যা নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তখন থেকেই সিবিআইয়ের নজরাদারিতে রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সার্ভার রুম।