Exclusive: অতীত বিতর্কিত হলেও সময় কম, তাই যশবন্ত সিনহাকে বেছে নেওয়া হল: দীপঙ্কর ভট্টাচার্য

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এবারে বিরোধীদের প্রার্থী বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা (Yashwant Sinha)৷ তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস সহ সভাপতি হন। কিন্তু প্রাক্তন এই বিজেপি…

CPIML general secretary Dipankar Bhattacharya

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এবারে বিরোধীদের প্রার্থী বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা (Yashwant Sinha)৷ তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস সহ সভাপতি হন। কিন্তু প্রাক্তন এই বিজেপি নেতার নাম রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত হওয়ায় বেজায় ক্ষোভ বেড়েছে বাম কর্মীদের মধ্যে।

এরই মধ্যে কলকাতা ২৪X৭ কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন সিপিআইএমএল (লিবারেশন) এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, যশবন্ত সিনহার রাজনৈতিক অতীত যথেষ্ট বিতর্কিত৷ কিন্তু সময় কম থাকায় তাঁকেই বিরোধী ঐক্যের প্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়া হল৷

   

দীপঙ্কর বাবু বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচন একটি বড় বিষয়। দুঃখের যেটা ব্যাপার, আমাদের ভারতবর্ষের বিরোধী শিবির অসংগঠিত, তাই এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছিল অনেক দেরিতে। মাত্র দুটি বৈঠক হয়েছে দিল্লিতে৷ একটা ১৫ তারিখ এবং একটি ২১ তারিখ৷ ফলে ১৫ তারিখের বৈঠকে এটুকু ঠিক হয় যে, বিরোধী শিবির থেকে ঐক্যবদ্ধ একক প্রার্থী নির্বাচিত করা হোক। এইটুকু কথা বলেই বৈঠক শেষ হয়। ২১ তারিখের বৈঠকে আমরা বুঝতে পারি সমস্ত দলের মধ্যেই যশবন্ত সিনহার নাম নিয়ে প্রস্তাবনা তৈরি হয়েছে। আমাদের কাছে মূল বিবেচ্য বিষয় এই যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী দাঁড় করিয়ে লড়াই করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

Yashwant Sinha Presidential Election
Presidential Election: ‘বাবরি ভাঙা পার্টির লোক যশবন্তকে সমর্থন কেন’, প্রশ্নবাণে ঘেঁটে ঘ সিপিআইএম

দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “লড়াইয়ে হার জিত সংখ্যার ব্যাপার। কিন্তু এটা শুধুমাত্র সংখ্যার ব্যাপার নয়৷ এটা রাজনৈতিক লড়াই। যে লড়াই সারা দেশজুড়ে চালানোটা জুড়ে খুব দরকার। সেই জায়গা থেকে যেহেতু বিরোধী শিবির প্রার্থীকে মেনে নিয়েছে৷ তাই আমরাও গ্রহণ করেছি৷ যদিও অবশ্যই যশবন্ত সিনহা দীর্ঘ সময় বিজেপির সঙ্গে ছিলেন৷ বাজপেয়ী জমানার বড় নেতা। সেকারণে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত৷ আমার মনে হয় এই মুহুর্তে যেটা প্রশ্ন, সেটা মোদী জমানাটা এমনই, যেখানে আমরা দেখছি বাজপেয়ী জমানার কিছু মানুষজন তাঁরা আজকে মোদী জমানায় বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে। যশবন্ত সিনহা তার একটা উদাহরণ। তো আমার মনে হয় এই জায়গা থেকে নির্বাচনটাকে দেখা উচিত৷ যদি প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু সময় থাকত, তাহলে আমরা অন্য প্রার্থী ভাবতেই পারতাম।”

তিনি বলেন, “হয়তো এমন কোনও একজন ব্যক্তি যিনি কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত৷ অথবা দেশজুড়ে যে বিভিন্ন আন্দোলন চলছে তার কোনও পরিচিত মুখ৷ কিন্তু আমার মনে হয় এখন এমন দেরি হয়ে গিয়েছিল, যে আমাদের কাছে এধরনের কোনও সুযোগ ছিল না। ২৭ তারিখ মনোনয়ন জমা দিতে হবে। ২৯ তারিখ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। আসলে মনোনয়ন জমা দেওয়াটাও জটিল প্রক্রিয়া। একটি মনোনয়নের ক্ষেত্রে ৫০ জন প্রপোজাল (সাংসদ অথবা বিধায়ক) এবং ৫০ জন সেকেন্ডার (সাংসদ অথবা বিধায়ক) থাকতে হয়৷ আমরা ৪ টে সেট আলাদা করে ভেবেছি। সেখানে ৪০০ জনের সই দরকার। পুরো ব্যাপারটা খুব জটিল৷ তাই বিরোধী শিবিরের তরফে এবার নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

যশবন্ত সিনহার সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকে একটা প্রাথমিক বিবৃতি যশবন্ত সিনহার অফিসের তরফে দেওয়া হয়েছে সেই বিবৃতি যদি কেউ পড়ে দেখা সরকার। সেখানে বর্তমানে এই অবস্থা বিজেপির বিরুদ্ধে লেখা হয়েছে। যেখানে গণতন্ত্রের ওপরে, সংবিধানের ওপরে ভারতবর্ষের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ওপরে ধর্ম নিরপেক্ষতার ওপরে একটা সর্বাত্বক আক্রমণ নামিয়েছে। সেই আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোটা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ এটা আসলে মতাদর্শগত লড়াইয়ের প্রশ্ন৷ এবং আমি সেই কথাটাই দেখলাম৷ তাই আমি মনে করি বামপন্থী কর্মীবাহিনী অবশ্যই অনেক প্রশ্ন তুলবে। এতদিন ধরে তাঁর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক৷ এতদিন ধরে তৃণমূলের সহ-সভাপতি ছিলেন৷ বিহারের কোবরাপোস্টের ক্যাম্পে রণবীর সেনার সঙ্গে যোগাযোগের খবর ছিল৷ ফলে তাঁর রাজনৈতিক অতীত যথেষ্ট বিতর্কিত। সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই৷ এই মুহুর্তে বামপন্থী কর্মীরা এই প্রশ্নে একমত হবেন, এই লড়াই বড় লড়াই। এই গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের জন্য বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে বিরোধীদের প্রাণ পেতে হবে৷ এই মুহুর্তে বিরোধী শিবির অসংগঠিত। আগামী দুই বছরে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।”