গোরক্ষপুরের হোটেলে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৬ পুলিশ কর্মী

নিউজ ডেস্ক: গতমাসে গোরক্ষপুরের এক হোটেলে মণীশ গুপ্তা নামে এক ব্যবসায়ীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ অকারণে মণীশকে পিটিয়ে খুন করেছে। যথারীতি পুলিশ…

policemen have been arrested for beating a businessman to death in a hotel in Gorakhpur

নিউজ ডেস্ক: গতমাসে গোরক্ষপুরের এক হোটেলে মণীশ গুপ্তা নামে এক ব্যবসায়ীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ অকারণে মণীশকে পিটিয়ে খুন করেছে। যথারীতি পুলিশ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশ।

মণীশ গুপ্তা হত্যার ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছিল। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, যোগীর আমলে উত্তরপ্রদেশে জঙ্গল রাজ কায়েম হয়েছে। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী। কারণ তিনি এই খুনের ঘটনায় দোষী পুলিশ অফিসারদের রীতিমতো আড়াল করছেন।

   

এরই মধ্যে আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং একটি ভিডিয়ো টুইট করেন। ওই ভিডিয়ো সামনে আসার পর এই খুনের ঘটনা নতুন মোড় নেয়। ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, রাজ্য পুলিশের এক পদস্থ কর্তা মৃত ব্যবসায়ী মণীশ গুপ্তার পরিবারকে অভিযোগ দায়ের না করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

ভিডিয়োতে দেখা যায়, গোরক্ষপুরের জেলাশাসক বিজয়কিরণ আনন্দ মৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে বলছেন, তাঁরা যেন আদালতে মামলা দায়ের না করেন। কারণ এ ধরনের মামলাগুলি বছরের পর বছর চলতেই থাকে। একই সঙ্গে পুলিশ আধিকারিক বিপিন টাডাকে বলতে শোনা যায়, আপনার স্বামীর সঙ্গে তো পুলিশের কোনও শত্রুতা ছিল না। তাহলে পুলিশ কেন তাঁকে মারবে। তবে আপনি বলেছিলেন বলেই আমি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের সাসপেন্ড করেছি। তারা যতক্ষণ না নির্দোষ প্রমাণ হয় ততক্ষণ তাদের কোনওভাবেই কাজে ফেরানো হবে না। তাই আপনাকে অনুরোধ আপনি এটা নিয়ে বেশি হইচই করবেন না।

এই ভিডিয়ো এই রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বিজেপি তথা যোগী সরকারকে আক্রমণের এক নতুন হাতিয়ার পেয়ে যায় বিরোধীরা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিরোধীদের সেই অস্ত্রকে ভোঁতা করে দিতেই যোগী সরকার ওই ছয় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার করল। সামনে নির্বাচন না থাকলে পুলিশকর্মীরা একজন নিরীহ মানুষকে খুন করার পরেও নিশ্চিতভাবেই বহাল তবিয়তেই ঘুরে বেড়াতেন।

বিরোধীরা বারেবারেই অভিযোগ করছে যে, যোগীর আমলে উত্তরপ্রদেশের জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে। এ ঘটনার যেন আরও একবার সেটাই প্রমাণ করল। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে দুষ্কৃতীদের রমরমা বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি জেলাতেই ঘটেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর খুন ও ধর্ষণের ঘটনা। কিন্তু কোন ক্ষেত্রেই দোষীরা সাজা পায়নি। হাথরসের ঘটনায় দোষীদের বিচার আজও হয়নি। এসব ঘটনায় যথেষ্টই ব্যাকফুটে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসব ঘটনা দলের বিপক্ষে যেতে পারে বুঝেই যোগী সরকার তড়িঘড়ি করে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় পুলিশ কর্মীদের গ্রেফতার করল।