একই সঙ্গে নন্দিত-নিন্দিত, ব্যতিক্রমী হিসাবেই বুদ্ধদেব চিরস্মরণীয় বঙ্গ রাজনীতিতে

ধুতি-পাঞ্জাবি এবং চপ্পল, ছাত্রাবস্থা থেকেই এই পোশাকেই চিরপরিচিত তিনি। পশ্চিমবঙ্গের ১১ বছরের মুখ্যমন্ত্রী। আপাদমস্তক বাঙালি ভদ্রলোক, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রয়াত হলেন বৃহস্পতিবার সকালে। বাঙালিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন…

praised and condemned at the same time Buddhadev Bhattacharya will always be remembered in the politics of Bengal , একই সঙ্গে নন্দিত-নিন্দিত, ব্যতিক্রমী হিসাবেই বুদ্ধদেব চিরস্মরণীয় বঙ্গ রাজনীতিতে

ধুতি-পাঞ্জাবি এবং চপ্পল, ছাত্রাবস্থা থেকেই এই পোশাকেই চিরপরিচিত তিনি। পশ্চিমবঙ্গের ১১ বছরের মুখ্যমন্ত্রী। আপাদমস্তক বাঙালি ভদ্রলোক, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রয়াত হলেন বৃহস্পতিবার সকালে। বাঙালিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি, আবার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে গিয়ে ধাক্কাও খেয়েছিলেন। ৩৪ বছর শাসনের পর সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যূত হয়। দায় পড়ে মূলত তাঁর কাঁধেই। সেই বেদনা বুকে নিয়েই চিরঘুমের দেশে কমরেড বুদ্ধদেব।

দিন বদল, সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আগো-গোড়া সেই বাম আদর্শেই ভরসা রেখেছিলেন। ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। পরে যোগ দেন সিপিাইএমে। সামলেছেন দলীয় নেতৃত্বের পথ। মন্ত্রিত্বভার সামলে শেষে পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি। বাংলায় বদলের হাওয়া বওয়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। জোর দিয়েছিলেন শিবল্পায়ণে। যা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব হয়ে উটেছিলেন ‘ব্র্যান্ড বুদ্ধ’। কিন্তু তাতেই কাল হল!

   

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বুদ্ধদেবের শেষকৃত্য, ঘোষণা মমতার, কী জানালেন সেলিম?

ক্ষমতা খুইয়েছেন। কিন্তু, রাজনীতিতে তাঁর সম্মান আরও বেড়েছে। তাঁর সাদা পাঞ্জাবিতে দুর্নীতির কালো কাদার দাগ লাগেনি। বাংলার সাম্প্রতিক রাজনীতিতে যা সোনার পাথর-বাটির মতই।

বুদ্ধ-প্রয়ামে অভিভাবকহীন বামপন্থীরাও। শেষপর্যন্ত তিনি হয়তো রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রয়েছেন, ভোটের আগে বার্তা দিচ্ছেন সেটাই ছিল কমরেডদের কাছে যথেষ্ট। ২৩শে শ্রাবণের পর সেটাও মিলিয়ে গেল। ফের শূন্যতা বামপন্থীদের কাছে।

‘আবার আসবেন…’ বলেছিলেন বুদ্ধবাবু, ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনা শোকাচ্ছন্ন

বঙ্গ বামপন্থীদের ‘শেষ আইকন’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজনীতির চেনা বৃত্তের বাইরে বুদ্ধবাবু ঘোরতর একজন সংস্কৃতি মনস্ক মানুষ। নন্দন, বই, বইমেলা এবং বাঙালির সাংস্কৃতিক অভিযাত্রায় তাঁর জড়িয়ে থাকা ‘ব্র্যান্ড বুদ্ধ’-র আরও এক সত্ত্বা। বইমুখো বাঙালির অন্যতম ‘উজ্জ্বল’ প্রতিনিধি তিনি। মায়াকভস্কি থেকে রবীন্দ্রনাথ, কামু-কাফকা হয়ে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলো সর্বদাই ছিল তাঁর সঙ্গী। বইয়ের পাশাপাশি সিনেমা-নাটকেও তাঁর ছিল অবাধ বিচরণ।

আজ সবই ইতিহাস। ঘুমের দেশে বুদ্ধদেব। নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন, তিনি একই সঙ্গে নন্দিত ও নিন্দিত। তবুও ব্যতিক্রমী হিসাবেই বুদ্ধদেব চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বঙ্গ রাজনীতিতে।