TMC-BJP: পার্থ অর্জুন যুদ্ধ দেখতে প্রস্তুত ব্যারাকপুর

পার্থর বিরুদ্ধে অর্জুন। তবে এটা কুরুক্ষেত্র না। আবার কোনও সিনেমার প্লটও নয়। এটা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র। আর এই কেন্দ্র নিয়ে আবার শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। একটু…

arjun singh and partha bhowmik

পার্থর বিরুদ্ধে অর্জুন। তবে এটা কুরুক্ষেত্র না। আবার কোনও সিনেমার প্লটও নয়। এটা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র। আর এই কেন্দ্র নিয়ে আবার শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। একটু পিছনে ফিরে গেলে মনে পড়বে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গ। সেইবারও দলের টিকিট না পেয়ে বেঁকে বসেন তৃণমূলের তৎকালীন দাপুটে নেতা অর্জুন সিং। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তারপরের ঘটনাগুলো আরও একবার পাল্টে দেখা যাক। দীনেশ ত্রিবেদীকে পরাস্ত করেন অর্জুন সিং। তারপরে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র কার্যত বারুদের গন্ধে ভরে যায়। অভিযোগ একের পর এক তৃণমূল কর্মী ঘরছাড়া হতে শুরু করেন। প্রতিদিন খবরে ভরে উঠে ভাটপাড়া, কাকিনাড়া, জগদ্দল, নৈহাটির বহু অলিগলি।

৩০শে মে, ২০১৯ নৈহাটিতে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগ নেয় ঘাস্ফুল শিবির। সেই সময় নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের চোখের জলে স্পষ্ট লেখা তৃণমূল কর্মীদের যন্ত্রণার কথা। তিনি বলেছিলেন অর্জুন সিংকে উৎখাত করেই ছাড়বেন। তারপর কাট টু ২০২৪। এর মধ্যে নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। পার্থ বাবু মন্ত্রী হয়েছেন। নেত্রীর গুড বুকে উঠে এসেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক বলে পরিচয় পেয়েছেন। অন্যদিকে দাপুটে নেতা তথা গরীবের রবীন হুড অর্জুন সিংও ঘাসফুলে ফিরেছেন। তবে বজায় রেখেছিলেন একটা লক্ষ্মণরেখা।

জগদ্দলের সোমনাথ শ্যাম বারাবারে তাঁকে আক্রমণ করেছেন। অর্জুন গোষ্ঠী এবং সোমনাথ গোষ্ঠী খবর বারবারে শিরোনামে উঠে এসেছে। উত্তপ্ত হয়েছে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র। অবেশেষে অর্জুন সিং আবারও বেঁকে বসলেন। মুখ ভার করে গর্জনসভা ছাড়লেন। যখন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নাম ঘোষণা হলো তখন অনেকেই হয়ত ভাবতে পারেনি যে এইবার লোকসভা নির্বাচনে ঘাসফুলের মন্ত্রী তথা নাট্য অভিনেতা পার্থ ভৌমিককে মাঠে নামানো হবে। তবে একটা সূত্র বেশকিছু দিন ধরে পরিচালক তথা ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর নাম শোনা গেলেও তা ধোপে টিকল না। ঘাসফুল তাঁদের পুরোনো ঘোড়াকে মাঠে নামাল।

আর সেইদিন থেকেই বাহুবলী নেতা আবার বিজেপি মুখো। তবে এখনও অসমর্থিত সূত্রে খবর বিজেপির টিকিতেই তিনি আবার ব্যারাকপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হতে চলেছেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, ” পার্থ ভৌমিকের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়াব। ছোটবেলা থেকে কখনও বিনা টিকিটে কখনও ট্রেনে উঠিনি।” এখানেই শেষ নয় তিনি আরও জানালেন যে, ”পার্থ ভৌমিক কখনও কারুর ভাল করেনি।” যদিও এই বিষয়ে জানার জন্য পার্থ ভৌমিককে ফোন করা হলে তিনি ফোনের উত্তর দেননি।

তবে ঘাসফূলের এক যুব নেতাকে ফোন করা হলে তিনি কলকাতা ২৪*৭কে বলেন, ”পার্থ ভৌমিক বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। অর্জুন সিং-এর মতো বাজে লোকের কোনও জায়গা নেই।” তিনি আরও যুক্ত করেন, ”পার্থ ভৌমিক ভগবান।” তবে বিষয়টা তাই কি ? ভাটপাড়ার আশেপাশে কান পাতলে শোনা যায়, অর্জুন সিং গরীবের মসিহা। তিনি নাকি রবীন হুড!

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছিল যে অর্জুন সিংকে বরানগরে উপনির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয় তাঁকে রাজ্য মন্ত্রীসভায় জায়গা দেওয়ার কথা বলে হলেও তাঁর মান ভাঙেনি। তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তাঁকে সাংসদ আসনেই টিকিট দিতে হবে।

তবে এখন থেকেই এলাকা গরম হতে শুরু করেছে বলে খবর। উত্তাপ ফুটছে সর্বত্র। অর্জুন কি আবার পাসা খেলায় জিতবেন ? নাকি পার্থ ভৌমিক হাসিমুখে চাল উল্টে দেবেন।  এই লড়াই এখন প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে উঠেছে। দাদা ভাইয়ের লড়ায়ে এসে ঠেকছে। তবে বিজেপির শাখা সংগঠন কিন্তু সিং সাহেবের উপরে তেমন ভরসা রাখছে না বলেই খবর। তবুও তিনি বাহুবলী।