Kolkata: তিস্তার বন্যায় জলপাইগুড়িকে নিয়ে আশঙ্কিত বললেন মমতা

সিকিমে বিপর্যয়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে সিকিমে লোনক হ্রদ ফেটে তিস্তায় হড়পা বান! যার জেরে উত্তরবঙ্গে তিস্তায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি গাজোলডোবা ব্যারেজ…

সিকিমে বিপর্যয়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে সিকিমে লোনক হ্রদ ফেটে তিস্তায় হড়পা বান! যার জেরে উত্তরবঙ্গে তিস্তায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি গাজোলডোবা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় নিমতলা বস্তিতে অপরিচিত এক মহিলার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রাজগঞ্জ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা পঙ্কজ কর্নার জানান, ইতিমধ্যে দুটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সংকেত জারি করা হয়েছে। তিস্তার ডাউন স্টিমে বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে মাইকিং করে, হুইসেল বাজিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।

সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে জরুরি বৈঠক। বৈঠকে রয়েছেন মুখ্যসচিব, উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই মন্ত্রী, আইএএস আধিকারিকদের পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তিস্তার জলে তিন জনের দেহ ভেসে এসেছে। তা নিখোঁজ জওয়ানদের হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ডিভিসি আগেই ১ লক্ষ ৭০ হাজার জল ছেড়েছে। আমরা একটু জল ছাড়ার পরিমাণ কমাতে বলেছি। জল আসতে তিন দিন সময় লাগে। সেই জলই এবার উদয়নারায়ণপুর, খানাকুল ১,২, বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা, মেদিনীপুর পশ্চিমের অনেকটা অঞ্চল বিধ্বস্ত।

আমরা ইতিমধ্যেই এসডিআরএফ, এনডিআরএফ-কে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি। আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে অফিসারদের একটা টিম সব এলাকা ঘুরে দেখবে। এসডিও, জনপ্রতিনিধিরা গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবেন।”

শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও কাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমার পায়ে একটা চোট রয়েছে, সারেনি। আমি এখান থেকে সর্বক্ষণের জন্য গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। অনেকগুলো রিলিফ ক্যাম্প ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। নীচু এলাকা থেকে হাজার দশেক মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “মৎস্যজীবীরা এখন সমুদ্র, নদীতে যাবেন না। আগামী ৩-৪ দিন যাবেন না। মুকুটমনিপুরেও বাঁধ প্রায় ভেঙে যাওয়ার মতো অবস্থা। ৬-৭টা জেলা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অ্যাডিশন্যাল চিফ সেক্রেটারির নেতৃত্বে একটা টিম পাঠাচ্ছি।এছাড়াও পঞ্চায়েত, পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতকেও নজর রাখতে বলেছি। জলপাইগুড়ি নিয়ে একটা শঙ্কা রয়েছে। উদয়ন গুহকে ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছি। সেচ দফতর, বিপর্যয় মোকাবিলায় দফতরও সক্রিয়। PWD, রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর, স্বাস্থ্য দফতরকেও সতর্ক করা হয়েছে। আপাতত সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বাংলাটা অনেকটা নৌকার মতো। বিহার, ঝাড়খণ্ড, সিকিম জল ছাড়লে আমরা ডুবে যাই।বৃষ্টি বাড়লে বিহারের জল না মালদহে ছেড়ে দেয়। সতর্ক থাকতে হবে। প্রশাসনের দিক থেকে সব রকম ব্যবস্থা রাখতে হবে।

এখনও পর্যন্ত তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এটা সেনা জওয়ানদেরও হতে পারে। ওদের ২৭জন তলিয়ে গিয়েছে। এখনও শনাক্তকরণ করা সম্ভব হয়নি।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, উদ্ধার কার্যের জন্য যা যা প্রয়োজন, মেডিসিন সব প্রস্তুত রয়েছে। চিন্তার কারণ নেই। ব্যবসাতেও ক্ষতি হয়। এমনিতেও একশো দিনের কাজ বন্ধ। তবুও রাজ্য সরকারের তরফে একশো দিনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।