Tata Nano: টাটাকে দেব না ৭৬৫.৭৮ কোটি ক্ষতিপূরণ, মমতার সরকার গেল মামলা করতে

সিঙ্গুর তাড়া করছে মমতার সরকারকে। ন্যানো কারখানা (Tata Nano) বিদায়ের ১৫ বছর পর টাটাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। এমনই নির্দেশ…

tata_nana_mamata

সিঙ্গুর তাড়া করছে মমতার সরকারকে। ন্যানো কারখানা (Tata Nano) বিদায়ের ১৫ বছর পর টাটাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। এমনই নির্দেশ দিল আরবিট্রাল ট্রাইবুনাল।সিঙ্গুরের টাটার কারখানা না হওয়ায় এবার টাটাকে সুদ সমেত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে WBIDC-কে। টাটা মোটরসের পক্ষে সর্বসম্মত রায় মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনালের। এমনই জানিয়েছে টাটা মোটরস। সুদ সহ মোট ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসিকে। ২০১৬ সাল থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার খরচের জন্য আরো এক কোটি টাকা দিতে হবে। এবার সিঙ্গুর ক্ষতিপূরণ মামলায় সালিশি আদালতের রায়কে চ‍্যালেঞ্জ জানাতে চলেছে মমতা সরকার।

সোমবার টাটা গোষ্ঠীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশের পর রাজনৈতিক মহল সরগরম হয়। মঙ্গলবার ট্রাইবুন্যালের নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যেতে আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করে রাজ্য সরকার। এদিকে দেশের অন্যতম সেরা আইনজীবী ও সিপিআইএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কটাক্ষবাণে জর্জরিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকাশরঞ্জন বলেছেন, টাটা কারখানা না করতে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তো দেউলিয়া হয়ে গেল। তাঁর এমন মন্তব্যের পর মমতা ও রাজ্য সরকারপক্ষ নীরব। তবে বিকাশবাবু গতকালই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার ফের আদালতে যাবে।

   

এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন সিপিআইএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ায় টাটাকে সুদসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে। এই প্রসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্য সরকার তো দেউলিয়া হয়ে গেল। এবার টাটা মোটর তাদের ক্ষতিপূরণ পাবেন। এরপর হলদিয়া নিয়েও প্রসুন চ্যাটার্জির গ্রুপ রয়েছে। তাও বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকা’।

এর সঙ্গেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘মমতা ক্ষমতায় আসার জন্য যত অপকর্ম করেছেন তার দগদগে ক্ষত এখন আস্তে আস্তে বেরোচ্ছে। কোথা থেকে এই টাকা দেবে পশ্চিমবঙ্গ তো দেউলিয়া হয়ে গেল। এরা যদি এখন আইনি পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের সমস্ত টাকা নেওয়ার উদ্যোগ নেয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গ তো দেউলিয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে দাঁড় করিয়ে দেবে মমতা সরকার’।

বাম আমলে সিঙ্গুরে টাটা আসা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছিল। এখনকার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস তখন বিরোধী দলের। জমি নিয়ে বিতর্কে তাদের লাগাতার আন্দোলন চলে। নেতৃত্বে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, মমতার সেই আন্দোলনের সামনে ততকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নরম মনোভাব দেখানোয় কারখানা চালু হতে পারেনি। কারখানা না চালু করেই রতন টাটাকে চলে যেতে হয়েছিল বাংলার মাটি থেকে।

এই ঘটনার এতদিন পরে নির্দেশ এবং তা রায় দিয়েছেন মধ্যস্থতা ট্রাইব্যুনাল। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ আদায় হচ্ছে তখন থেকে সুদ সহ টাকা দিতে হবে। তিন সদস্যের ট্রাইবুনালের সঙ্গে এই মামলাটি পেন্ডিং ছিল। এক্ষেত্রে টাটা মোটরস লিমিটেড কোম্পানি মামলাকারি এবং রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগম প্রতিপক্ষ। দুপক্ষের সাওয়াল জবাব সমস্ত কিছু হওয়ার পর তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল সর্বসম্মতভাবে একটি নির্দেশ দিয়েছেন। এনআইএ সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা সুদ সহ রাজ্য সরকারকে ফেরত দিতে হবে রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের। এছাড়া মামলার প্রক্রিয়া বাবদ এক কোটি টাকা দিতে হবে।