Dengue: মহামারীর রূপ নেবে ডেঙ্গু ? বাংলাদেশের গবেষণায় ‘ডেন ফোর’ অস্তিত্ব মিলল

কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বে মহামারীর আকার নিয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের। এবার কি করোনার মতো ডেঙ্গু (dengue) মহামারীর আকার নেবে ? অন্ততঃ তেমটাই আশঙ্কা করলেন…

কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বে মহামারীর আকার নিয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের। এবার কি করোনার মতো ডেঙ্গু (dengue) মহামারীর আকার নেবে ? অন্ততঃ তেমটাই আশঙ্কা করলেন বাংলাদেশের আইসিডিডিআরবির ভাইরোলজি ল্যাবরেটরির প্রধান ড. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

চলতি বছরে বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে হুহু করে। ভেঙেছে সমস্ত রেকর্ড। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার। আর মৃতের সংখ্যাও প্রায় সাড়ে তেরশো। চলতি মাসে প্রতিদিনই প্রায় দুই হাজার নতুন রোগী আর মৃতের সংখ্যা দুই অঙ্কে ছিল।তারপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন থেকে চিকিৎসক, গবেষকরা।

ঢাকা মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ সহ বেশকিছু হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু রোগীর নমুনা সংগ্রহের পর গবেষণা শুরু করেছে আইসিডিডিআরবি। ওই

বাংলাদেশের এই ডেঙ্গু গবেষণায় উঠে আসে এবারের বেশিরভাগ আক্রান্তের মধ্যে ডেঙ্গুর ধরণ ডেন টু আর থ্রির সংখ্যা বেশি। তবে গত কয়েক বছর ডেন থ্রির প্রাদুর্ভাব থাকায় কিছুটা হলেও এন্টিবডি তৈরি হয়েছিল এ ধরণে। তাই গুরুতর রোগীর অধিকাংশই শনাক্ত হয়েছে ডেন-টু। আবার মৃতের নমুনাও বলছে এ ধরণে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। তবে হঠাৎ করেই নতুন ধরন ডেন ফোরের অস্তিত্ব মিলেছে আইইডিসিআর এর ল্যাবে।

আইসিডিডিআরবির ভাইরোলজি ল্যাবরেটরির প্রধান ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে রোগীদের নুমনা সংগ্রহ করে গবেষণা করা হয়েছে। সেখানে আমরা ডেঙ্গুর ধরণ ডেন ফোর পেয়েছি। তবে মাত্র একটি পাওয়া গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে এ ডেঙ্গু ফোর আসবে না, তা কে বলতে পারে? পরবর্তী বছরে যদি ডেঙ্গু ফোর আসে তাহলে সেটা খুবই ভিন্ন ধরনের। শঙ্কা থেকেই যায়।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ডেঙ্গু ফোর মহামারি আকারে দেখা দিতে পারে, সেজন্য প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে, প্রয়োজনে মনিটরিং বাড়াতেও হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়ো কিংবা কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণের মত কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে নজির আহমেদ বলেন, আমাদের গ্রামের মানুষগুলো যেহেতু সবগুলো সেরোটাইপ দ্বারা আক্রান্ত হয়নি, সুতরাং তারা সেরাটাইপ ১ এবং ফোরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই তাদের।পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্ভর নানা পরিকল্পনা নিয়ে বছরজুড়েই এডিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করার তাগিদ দেন তিনি।

বাংলাদেশে রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় হাসপাতালে ভর্তি হন এক হাজার ৭০৮ জন ডেঙ্গুরোগী। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৪১ জনে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৬৯ হাজার ৩৮৮ জন। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ঐ বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।