নাসিকের পেঁয়াজে এত পেয়ার কেন? দামের ঝাঁঝে অতিষ্ঠ মমতার বড় নির্দেশ!

এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) থেকে সাধারন মানুষ, সবার রান্নাঘরে যে জিনিসটা সবথেকে বেশি কাঁদাচ্ছে তাহলে পেঁয়াজ। এমনিতেই বছরের বিভিন্ন সময়ে পেঁয়াজের দামের ওঠানামা দেখা…

এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) থেকে সাধারন মানুষ, সবার রান্নাঘরে যে জিনিসটা সবথেকে বেশি কাঁদাচ্ছে তাহলে পেঁয়াজ। এমনিতেই বছরের বিভিন্ন সময়ে পেঁয়াজের দামের ওঠানামা দেখা যায়। তবে এবার দামের হাফ সেঞ্চুরির ঝাঁজে আমবাঙালির চোখে জল (Mamata Banerjee)।

পরিস্থিতি এমন জায়গাতে পৌঁছেছে যে অনেকেই ডালে, তরকারিতে পেঁয়াজের বদলে অন্য কিছু দিয়ে ফোঁড়ন দিয়ে কাজ সারছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও (Mamata Banerjee) পেঁয়াজের এই মূল্য বৃদ্ধির ঝাঁঝে অতিষ্ঠ। আর তাই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ে তাঁর বক্তব্যের প্রথমেই সুরে উঠে এলো পেঁয়াজের দাম।

   

মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) পরিষ্কার প্রশ্ন কেন নাসিকের পেঁয়াজের প্রতি এত পেয়ার আমাদের? সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে প্রশ্ন কেন রাজ্যের কৃষক যারা পেঁয়াজ উৎপাদন করছেন তাদের থেকে বেশি বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ নেওয়া হচ্ছে না? যুক্তি দেখাতে গিয়ে উল্টে ধমক খেয়েছেন এক আধিকারিক। মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) পরিষ্কার দাবি চার হাজারেরও বেশি পেঁয়াজের সংরক্ষণের কেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সংখ্যাটা খুব একটা কম নয়। তা সত্ত্বেও কেন প্রতিবছর পেঁয়াজের দামের ঝাজে চোখে জল আসবে?

রাজ্যপালের আনন্দ কেড়ে নিল আদালত? মমতার মুখে যুদ্ধ জয়ের হাসি সুপ্রিম অর্ডারে

বঙ্গে ব্যবহৃত পেঁয়াজের একটা বড় অংশই আসে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে। নাসিকের পেঁয়াজের দামের যদি তারতম্য ঘটে, কপাল পোড়ে বাংলার। কৃষি আধিকারিকদের দাবি নাসিকের পেঁয়াজের দাম বাড়াতেই বাংলায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কিন্তু দু সপ্তাহ আগে যা ছিল ৩৫ টাকা, তা কি করে এখন ৫০ ছুঁয়ে ফেলল,? মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা।

মুখ্যমন্ত্রীই এক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের জন্য সাজেশন দিয়েছেন। স্থানীয় কৃষকদের থেকে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ কিনুক সরকার এমনটাই মুখ্যমন্ত্রীর সাজেশন। সেই পেঁয়াজ প্রায় ৪৭৬টি সুফল বাংলা স্টোর থেকে বিক্রি করা হোক। এমনিতেই এখন সুফল বাংলা স্টলে বাজারদরের থেকে গড়ে ৮ থেকে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যদি জোগান আরও বেশি পরিমাণে বাড়ানো যায়, তাহলে দাম এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে। সেক্ষেত্রে যদি কোনও অসাধু ব্যবসায়ী যদি দাম বাড়ায় বাড়াবারও চেষ্টা করে, কোনওভাবেই সফল হবে না।

ভাতের সাথে একটু পেঁয়াজ খেতে যাব, সেটাও শান্তি মত খেতে পারব না? মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশ্নে স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়ে যান আধিকারিকরা। তবে শুধু পেঁয়াজ নিয়ে নয়, একাধিক সবজির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে যে তিনি চিন্তিত তা পরিষ্কার বলেছেন মমতা। তবে পেঁয়াজের দামের অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধি তার চোখ এড়ায়নি। এমনকি আলুর মজুত নিয়েও মুখ খোলেন মমতা। আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ, হিমঘরে আলু রাখার জন্য অতিরিক্ত এক্সটেনশন টাইম দেওয়া যাবে না।

‘ভোটে আমার হয়ে কাজ করুন’, কুণালকে ফোনে প্রস্তাব মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী কল্যাণের

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি টম্যাটোর মত সবজির দাম যেখানে এখন নাগালের মধ্যেই আছে, এখানে বাকি সবজির দাম এভাবে বাড়ছে কেন? ডিমের জন্য হায়দ্রাবাদ, পেঁয়াজের জন্য নাসিকের দিকে মুখ চেয়ে থাকতে হবে কেন? প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর ডিম নিয়ে নির্ভরতা কমাতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এর আগেই নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল ডিসেম্বর মাসে মধ্যেই ডিমে স্বনির্ভর হবে বাংলা।

তবে পেঁয়াজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই কড়া পদক্ষেপের পর বাজারে পেঁয়াজের দাম কী কমবে? গোটা বাজারের চাহিদা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা যে মাত্র ৪৭৬টি সুফল বাংলা স্টলের নেই, এটা মানছেন অনেকেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও যদি বাংলায় পেয়াজ উৎপাদন ক্রমশ আরও বাড়তে শুরু করে তাহলে স্থানীয় বাজারেও তার একটা বড় প্রভাব পড়বেই। পেঁয়াজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পর সেই আশা অনেকটাই বেড়েছে বলে মনে করছেন কৃষক মহল। সে ক্ষেত্রে হয়তো আগামী দিনে নাসিকের পেঁয়াজের প্রতি বাংলার আর এই পেয়ার নাও থাকতে পারে।