Rajeev Kumar: বাঘে ছু়ঁলে আঠারো ঘা, রাজীব কুমার ছুুঁলে…

বাংলাদেশি গ্যাং স্টার-খুনি সুব্রত বাইন হোক অথবা আমেরিকান সেন্টারে হামলার চক্রী আফতাব আনসারি কে গ্রেফতার, কিংবা খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জেএমবি জঙ্গি চক্রের হদিস পেতে অভিযানের অম্তরাল…

Rajeev Kumar police operation

বাংলাদেশি গ্যাং স্টার-খুনি সুব্রত বাইন হোক অথবা আমেরিকান সেন্টারে হামলার চক্রী আফতাব আনসারি কে গ্রেফতার, কিংবা খাগড়াগড় বিস্ফোরণে জেএমবি জঙ্গি চক্রের হদিস পেতে অভিযানের অম্তরাল ‘নায়ক’ রাজীব কুমার। এবার তিনি (Rajeev Kumar) পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ মহানির্দেশক। তিনটি দেশ-ভারত-নেপাল-বাংলাদেশের অপরাধ জগত তোলপাড় করা রাজীব কুমার এমনই এক নাম।

কলকাতা পুলিশের ইতিহাস যে নামগুলি বারবার আলোচিত হয় তাদের মধ্যে অন্যতম পরাধীন ভারতে চার্লস টেগার্ট আর স্বাধীনতার পর দেবী রায়, রুণু গুহনিয়োগী, নজরুল ইসলাম, পঙ্কজ দত্ত। এদের পরবর্তী সময়ে আলোচিত অফিসার রাজীব কুমার। এই পুলিশ অফিসারদের নাম রোমহর্ষক একটির পর একটি ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছে। কেউ নিজেকে গোপনীয়তায় মুড়ে রেখে অতীতে চলে গেছেন, কারোর কিছু কথা চর্চিত হয়েছে।

   

বিতর্ক-সাফল্যের রেশ ধরে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে আসা রাজীব কুমারের কিছু তদন্ত খতিয়ান থাকল। তদন্তের অলি গলিতে ঘোরা শুরু হয়েছিল বাম আমলে-১৯৮৯ সালে। দীর্ঘ বাম জমানার পর তৃণমূল জমানায় আরও চর্চিত রাজীব কুমার।

বাম জমানা-পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণের পর ‘খদ্দের’
পুরুলিয়ায় আকাশ থেকে ফেলা হয়েছিল বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র সম্ভার। নাষকতার পরিকল্পনা দেখে বিশ্ব কেঁপে গেছিল। নব্বইয়ের দশকের শেষে তখন বীরভূমের পুলিশ সুপার রাজীব কুমার একদিন জানতে পারেন পুরুলিয়ায় ফেলা আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি করা হচ্ছে৷ তিনি হলেন খদ্দের। পরুলিয়া জেলা পুলিশের নজরে পড়ে গেলেন। তদন্তের স্বার্থে রাজীব কুমারকে ‘স্পেস’ দিল পুরুলিয়ার পুলিশ। আবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর চেম্বারে পৌঁছে গেল অযাচিত অন্য জেলায় প্রবেশ করার জন্য রাজীব কুমারের নামে অভিযোগ।

বাংলাদেশের ‘দাউদ’ জয় গ্রেফতার
বাংলাদেশের অপরাধ জগতের শিহরণ জাগানো নাম এরশাদ শিকদার, তানভিরুল ইসলাম, সুব্রত বাইন। এছাড়া আছে একাধিক জঙ্গি নেতা। সেদেশের অপপাধ জগতে রাজীব কুমারের নাম প্রথম চর্চিত হয় ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তানভিরুল ইসলাম জয়কে গ্রেফতারের কারণে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাউদ ইব্রাহিমের সমতুল্য জয়। বাগুইআটি থেকে সৌদি আরবে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে ফোনে টাকা চেয়ে হুমকি দিত জয়। তাকে ২০০৭ সালে রাজীব কুমার বাগুইআটির একটি ফ্ল্যাট থেকে ধরেছিলেন।

গ্যাংস্টার সুব্রত বাইনের খোঁজে নেপাল কনট্যাক্ট
বাংলাদেশের শীর্ষ অপরাধী সুব্রত বাইন ২০০৮ সালে কলকাতার পাম অ্যাভিনিউ থেকে ধরা পড়েছিল।পরে সে জামিনে মুক্ত হয়ে নেপাল পালায়। সেখানে ধরা পড়ে জেলে সুড়ঙ্গ তৈরি করে ফের পালন। তাকে ফের গ্রেফতার করতে ভূমিকা নেন রাজীব কুমার। নেপালে অভিযান চলাকালীন কলকাতা পুলিশ কূটনৈতিক সীমা লঙ্ঘন করে বলে অভিযোগ। পরে সেটি কূটনৈতিক স্তরে মেটানো হয়।

আফতাব আনসারি গ্রেফতার
কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গি হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আফতাব আনসারিকে ট্র্যাক করে ধরার অন্যতম কৃতিত্ব রাজীব কুমারের। আমেরিকান সেন্টারে হামলা ও খাদিম কর্তা পার্থ রায়বর্মণকে অপহরণ করে মুক্তিপণের তদন্তে পুলিশকর্তা রাজীব কুমার নিয়েছিলেন বড় ভূমিকা।
জঙ্গি নেটওয়ার্কের সমতুল্য সোর্স জাল তৈরির কারিগর রাজীব কুমার একথা আলোচিত হয় জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) মহলেও।