সাইবার জালিয়াতি (Cyber Crime) ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেউ আবার অজান্তেই সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে, সারা দেশের বিভিন্ন শহরে যতবার সাইবার প্রতারণা হয়েছে, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এই শহরে প্রায় ৭১ লক্ষ বার সাইবার প্রতারণার জাল বিছানো হয়েছে। তাতে পা দিয়ে বহু মানুষ তাদের সর্বস্ব খুইয়েছেন।
সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কুইক হিল টেকনোলজিস লিমিটেড গোটা দেশে একটি সমীক্ষা চালায়। দেশের কোন শহরে সাইবার প্রতারণা বেশি হচ্ছে, কী কী কৌশলে প্রতারকরা লোক ঠকাচ্ছে তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। তাতেই ধরা পড়ে, দেশের মেট্রো শহরগুলির মধ্যে সাইবার জালিয়াতিতে কলকাতা অনেক এগিয়ে। তারপর জায়গা করে নিয়েছে যথাক্রমে পুনে ও দিল্লি।
প্রসঙ্গত, সাইবার অপরাধ ক্রমশ ঢুকে পড়ছে ব্যক্তিগত পরিসরেও। দেখা যাচ্ছে, প্রতারকরা অজানা অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে গ্রাহকদের জানাচ্ছে যে তারা দিল্লি বা মুম্বইয়ের সাইবার বিভাগ থেকে অথবা কাস্টমস থেকে ফোন করছে। নিজেের সরকারি আধিকারিক পরিচয় দিয়ে নানাভাবে ফাঁসানো হচ্ছে গ্রাহকদের। তাদের থেকে ব্যাঙ্ক বা আধার-প্যানের ডিটেলস চেয়ে নেওয়া হচ্ছে অথবা ভয় দেখিয়ে বলা হচ্ছে যে তাদের অনেক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট ধরা পড়েছে বা তারা বেনামে অজস্র সিমকার্ড রেখে প্রতারণা করছে।গ্রাহকরা বিশ্বাস না করলে তাদের আরবিআই বা কাস্টমসের স্ট্যাপ দেওয়া ভুয়ো সরকারি নথি দেখিয়ে বিশ্বাস করানো হচ্ছে। এরপর চেয়ে নেওয়া হচ্ছে তাদের জরুরি ও ব্যক্তিগত তথ্য। পরিচয় পত্র, ব্যাঙ্ক, আধারের ডিটেলস নিয়েই প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হচ্ছে গ্রাহকদের।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এয়ারটেলের ভাউচার ভরাতে গিয়ে নিজের লক্ষাধিক টাকা খুইয়েছিলেন কলকাতারই এক ব্যক্তি। তাকেও একইভাবে এয়ারটেলের স্ট্যাপ মারা কাগজ দেখিয়ে, ইমেল পাঠিয়ে প্রতারণা করা হয়েছিল। নিজের ক্রেডিট কার্ড থেকে বিল মেটানোর পরেই তিনি দেখেন তার অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষাধিক টাকা বেরিয়ে গেছে। কলকাতা পুলিশের সাইবার বিভাগ সেই টাকা উদ্ধার করে। কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, অজানা নম্বর থেকে কোনও লিঙ্ক এলে বা ইমেল করা হলে তা একেবারেই খুলে দেখবেন না। জানবেন এগুলো সবই কন্ট্রোল করছে কোনও না কোনও হ্যাকাররা।