ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে পারে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। এমন খবর রয়েছে কলকাতা পুলিশের কাছে। এই মর্মে, বুধবার বিবৃতি দিয়ে কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা জানান, আগামী ২ মাস ৫ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। শহরের একাংশে ৫ জনের উপর, বা বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা পুলিশ। বৌবাজার থানা, হেয়ার স্ট্রিট থানা এবং ধর্মতলা এলাকায় কে সি দাস ক্রসিং থেকে ভিক্টোরিয়া হাউসের দিকের এলাকায় কোনও রকমের বড় জমায়েত করা যাবে না। এমনকি লাঠি, বা কোনও অস্ত্র দেখতে পেলেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁর বিরুদ্ধে।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা মেনে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করছে পুলিশ। এই নিয়ম লাগু ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে, চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এই দু’মাস কোনওরকমের জমায়েতেরই অনুমতি পাওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল পুলিশ। এদিকে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এখনও দফায় দফায় প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। দুর্গাপুজোর ভিড়ে, কোনওরকমের অস্বস্তিকর ঘটনা এড়াতেও কোমর বাঁধছে পুলিশ।
পুলিশের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছে সিপিএম-এর ছাত্র-যুব-মহিলা সংগঠন। তাদের দাবি, আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদ, আন্দোলন ঠেকাতেই এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আর জি করের ঘটনায় এযাবৎ যত প্রতিবাদ, মিছিল সংগঠিত হয়েছে, তার গন্তব্য বহু ক্ষেত্রই ধর্মতলা। আবার ধর্মতলা থেকে বহু মিছিল শুরুও হয়েছে। তাই ধর্মতলায় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হল বলে দাবি সিপিএম-এর।
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, বিজ্ঞপ্তির প্রথম অংশে তিনটি এলাকার কথা বলা হয়েছে, হেয়ার স্ট্রিট, বউবাজার থানা এবং ট্রাফিক গার্ডের সদর দফতরের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি হয়েছে। কোনও জমায়েত, মিটিং-মিছিল করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সিপিএম পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, পুজো আসছে। ওই এলাকাগুলিতেও বেশ কিছু বড় এবং মাঝারি পুজো হয়। পুজোর সময়ও কি মানুষ ওই এলাকায় ভিড় করতে পারবেন না? গল্প করা যাবে না প্যান্ডেলে বসে? যাঁরা উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত করেন, এই বিজ্ঞপ্তির ফলে তাঁদেরও সমস্যা হবে বলে মত সিপিএম-এর। শুধু তাই নয়, আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, বিজ্ঞপ্তিটি সমস্ত ডিসি অফিস এবং কলকাতা পুরসভার দফতরে পাঠাতে হবে। বিজ্ঞপ্তি যদি তিনটি এলাকার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ হয়, তাহলে সব জায়গায় কেন পাঠাতে হবে, সেই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
আর জি করের ঘটনায় দেশের শীর্ষ আদালত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার নির্দেশে দিয়েছে। তাহলে এ ধরনের নির্দেশিকা জারি করে প্রসাশন সাধারন মানুষের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করেছে বলে মত অনেকের। এর নেপথ্যে কুমতলব রয়েছে বলে মত একাংশের।