মুখ্যমন্ত্রীর ‘রাজভবন ধর্না’ হুঁশিয়ারিকে হাসিমুখে স্বাগত রাজ্যপালের

মঙ্গলবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে সরাসরি আক্রমণ করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনে ধর্নায় বসে রাজ্যপালকে আর্থিক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের…

মঙ্গলবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে সরাসরি আক্রমণ করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনে ধর্নায় বসে রাজ্যপালকে আর্থিক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের পাল্টা মুখ খুললেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনকে স্বাগত জানালেন রাজ্যপাল। দিল্লি থেকে কলকাতায় বুধবার ফেরেন রাজ্যপাল। রাজভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে বিমানবন্দরে দু-হাত জোড় করে রাজ্যপাল বলেন, “আমার সাংবিধানিক সহকর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত তাঁর প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্য।করজোড়ে রাজভবনের ভেতরেই তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি।“

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে আক্রমণ করে বলেন, “আপনি যদি মনে করেন, আমি চিফ মিনিস্টারের থেকেও বড়! কিন্তু মনে রাখবেন সমস্ত পলিসি ঠিক করে রাজ্য সরকার, আপনি নন। আপনি যদি কোনও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন, আর কোনও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় আপনার কথায় চলে, আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। কারণ আমি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে দেব না।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজভবনের তরফে অনেকগুলি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তার মধ্যে একটিতে রাজ্যপাল তথা আচার্য দাবি করেন যে সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নেই, তাতে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি নিজেই। এরপর রাজভবনের তরফে থেকে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হয়।

মুখ্য়মন্ত্রী এদিন বলেন, “এখন আমাদের এখানে বসে রয়েছেন একজন মাননীয় রাজ্যপাল। তিনি বলছেন, আমি স্কুল দেখব, আমি কলেজ দেখব, আমি বিশ্ববিদ্যালয় দেখব। আমি বলি, আইন মেনে চলুন, আমার কোনও আপত্তি নেই। টাকা দেব আমরা, পলিসি করব আমরা, আর আপনি খবরদারি করবেন।আমরা ইলেক্টেড, আপনি কনভেনশন্যাল নমিনেটেড পোস্ট। উনি কী ভাবছেন? মুখ্যমন্ত্রীর থেকেও বড়? সে উনি বড় হতেই পারেন।”

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এরকম যদি চলতে থাকে, যদি কোনও বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর কথা মতো চলে, তাহলে আমি বলে রাখছি আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। এই রাজভবনের টাকা আমরা দিই। কেরল থেকে রোজ প্লেন ভাড়া করে লোক আনেন, আমরা দিই। টাকা যখন আমরা দিই, তাই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।”

গত ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন কার্যত সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাতে প্রয়োজনে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসব।” মুখ্যমন্ত্রীর সেই হুঁশিয়ারিকে কার্যত হাসিমুখে স্বাগত জানালেন রাজ্যপাল। শিক্ষায় রাজভবন-নবান্ন সংঘাতে তাই এবার নয়া মোড়।