আবেগের সুনামিতে ধর্মতলায় ৫ হাজারের টুপিও বিকোচ্ছে ঝড়ের বেগে!

ধর্মতলায় তৃণমূলের শহীদ সমাবেশ (21st July) ঘিরে যেন আবেগের বিস্ফোরণ। একদিকে যেমন উৎসবের মেজাজ, তেমনি জমিয়ে চলছে কেনাকাটা (21st July)। আর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে,…

ধর্মতলায় তৃণমূলের শহীদ সমাবেশ (21st July) ঘিরে যেন আবেগের বিস্ফোরণ। একদিকে যেমন উৎসবের মেজাজ, তেমনি জমিয়ে চলছে কেনাকাটা (21st July)। আর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, হকাররা এদিন এসে উপস্থিত হন ধর্মতলায় (21st July)। বেচাকেনা ভালো হবে দু পয়সা লাভ হবে তারই আশায়। সেরকমই টুপি বিক্রেতাদের যেন এবছর একেবারে পোয়াবারো। ব্যবসার বহর দেখে ফেলুদার লালমোহন বাবুর সেই বই বিক্রির উক্তির কথা মনে পড়ে যাবে অনেকেরই। ‘সেলিং লাইক হট কচুরিজ ‘!

এমনিতেই আকাশ জুড়ে এখন রোদ বৃষ্টি লুকোচুরি চলছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর একুশের ধর্মতলায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনাও আছে। যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো থেকে শুরু করে দলের সমর্থক থেকে নেতাকর্মীরা একুশের বৃষ্টিকে নিজেদের জন্য শুভ বলেই মানেন। কিন্তু রোদ হোক বা বৃষ্টি, বক্তৃতা শোনার সময় তো আর ছাতা খুলে দাঁড়ানো যায় যায় না সবসময়। অগত্যা শিরস্ত্রাণ মানে টুপিই ভরসা। আর সেই কারণেই ধর্মতলা চত্বরে টুপি বিক্রেতাদের বেশ ভালোই কেনাকাটা চলছে।

   

সাধারণ টুপির সাথে তৃণমূলের লোগো, মমতা ব্যানার্জি অভিষেক ব্যানার্জির ছবি সম্বলিত বিশেষ টুপিও আছে। এছাড়াও হাতের কারিগরিতে নিপুনভাবে তৃণমূলের ঘাসফুল ফোটানো টুপির কদরও যথেষ্ট। মোটামুটি ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে এই সমস্ত টুপি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সব থেকে বেশি নজর কেড়েছে পাঁচ হাজারি টুপি। লক্ষীর ভান্ডার এর ঘটের আদলে সুদৃশ্য টুপিতে তৃণমূলের প্রতীক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের লোগো নিপুণভাবে বানানো হয়েছে। সেই টুপি দেখতে একেবারে ভিড় জমে গিয়েছে। কিন্তু পাঁচ হাজারের টুপি কে কিনতে যাবে এই বাজারে? কারণ রাস্তাঘাটে তো পড়ে বেড়ানো সব সময় সম্ভব নয় এই টুপি।

তমলুকে হার, মমতার সামনে হাউ হাউ করে কান্না দেবাংশুর!

বিক্রেতাদের সহজ সরল উত্তর, ‘তৃণমূলের আবেগ’ই ঝড়ের বেগে বিক্রি হচ্ছে এই টুপি। বিক্রেতাদের থেকে জানা গেল যে প্রায় তিন মাস সময় লেগেছে তাদের এই সমস্ত টুপি বানাতে। মূলত রঙিন ফোম শীট কেটেই বানানো হয়েছে এ টুপিগুলোকে। বাঁকুড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মেদিনীপুরের এই সমস্ত শিল্পীদের অনেকেই আবার কট্টর তৃণমূল সমর্থকও। নিজেদের দলের জন্য তাই মন প্রাণ ঢেলেই তারা হাতের কাজ করেছেন।

আদৌ তৃণমূলে যোগ, নাকি বিভীষণের ভূমিকায় দুই বিজেপি সাংসদ? নজরে একুশের মঞ্চ

তবে বিক্রেতাদের আবেগের দাবি যে খুব একটা ভুল নয় তার প্রমাণ পাওয়া গেল ধর্মতলা চত্বর ঘুরে। অনেক কর্মী সমর্থকদের মাথাতেই ২০০ বা ৫০০ টাকা দামের সুদৃশ্য টুপির দেখা মিলেছে। তবে ৫ হাজারী টুপি সংখ্যায় কম বললেই চলে। বেশ কয়েকজন দরদাম করছেন এমনকী কেনাকাটাও করছেন। কিন্তু তাদের অনেকেরই বক্তব্য যে মাথায় পড়ার জন্য নয়, সাজিয়ে রাখার শোপিস হিসেবেই তারা টুপি কিনে নিচ্ছেন। নৈহাটি থেকে আসা এক তৃণমূল কর্মী নিজেদের পার্টি অফিসের সাথে সাজিয়ে রাখার জন্য রীতিমতো চাঁদা তুলে কিনেছেন পাঁচ হাজারি টুপি।

আপাতত গোটা রাজ্যের তৃণমূল সমর্থকদের একটাই ডেস্টিনেশন সেটা হল ধর্মতলা। ধর্মতলায় শহীদ সমাবেশের সেই মঞ্চ ঘিরে এই যেন এখন আবেগের বিস্ফোরণ হতে চলেছে। লোকসভা জয়ের পর বিধানসভা উপনির্বাচনেও চূড়ান্ত সাফল্য। একুশে জুলাই আর শুধু শহীদ স্মরণের সমাবেশ নয়, তৃণমূলের বিজয় সমাবেশও বটে। আর সেই সমাবেশে তৃণমূলের সৈনিকরা নিজেদের পছন্দের শিরস্ত্রাণও সাজিয়ে নিচ্ছেন বিজয়োল্লাসে মাতবার আগে।