মমতার অভিযোগের সপাটে জবাব দেবাংশু

তমলুকে পরাজিত হয়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর বিপরীতে জয়ী হয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর তৃণমূলের কাছে এই পরাজয় অনেকটা প্রেস্টিজ ফাইটের মতো ছিল। কারণ বিচারপতি…

mamata debanshu

তমলুকে পরাজিত হয়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর বিপরীতে জয়ী হয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর তৃণমূলের কাছে এই পরাজয় অনেকটা প্রেস্টিজ ফাইটের মতো ছিল। কারণ বিচারপতি থাকাকালীন ঘাসফুলের নেতা মন্ত্রীদের চোখের জলে নাকের জলে করে ছেড়েছেন ভগবান অভিজিৎ। আর সেই অভিজিৎকে হারাতে মাঠে নামানো হয় যুব তৃণমূল নেতা দেবাংশুকে। কিন্তু তিনি হেরে যান। আর এই হারের পর্যালোচনা করতে গত শনিবার কালীঘাটে বৈঠক করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সূত্রের খবর সেই বৈঠকে দিদির বকা খেয়ে অভিমান হয় দেবাংশুর আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই লম্বা ফেসবুক পোস্ট করেন যুব নেতা।

সূত্রের খবর শনিবারের বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, দেবাংশুর বয়সে তিনি সকাল ৭টা থেকে রাস্তায় থাকতেন। বেলা ১২টার সময় বেরোতেন না। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের কাছে তমলুক থেকে  অভিযোগও এসেছিল যে, দেবাংশুকে সকাল সকাল প্রচারে পাওয়া যেত না। শনিবার তা নিয়েই তরুণ নেতাকে ‘ভর্ৎসনা’ করেছিলেন মমতা। কিন্তু রবিবার দুপুরে ফেসবুক পোস্টে দেবাংশু লিখেছেন, ‘‘সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে টয়লেট সেরে, স্নান করে, এক বাটি ছাতুর সরবত খেয়ে রোজ বেরিয়ে পড়তাম সকাল ৮–টার মধ্যে।’’ অর্থাৎ দেবাংশুর কথায়, তিনি যথাবিধি পরিশ্রম করেছেন এবং যথাসময়ে প্রচারেও বেরিয়েছেন। ” তাহলে প্রশ্ন উঠেছে তিনি কি নেত্রীর উপর ক্ষুদ্ধ হয়েই এই পোস্ট করেছেন। তবে এখানেই শেষ নয়।

   

তিনি আরও দাবি করেছেন মার্চে ওজন ছিল ৮৩ কিলো। যা আজ কমে ৭৭.. সৌজন্যে শেষ আড়াই মাস। এই ৬ কিলো ওজনের বিনিময়ে ৬ লক্ষ ৮৭ হাজার মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, আশীর্বাদ পেয়েছি। সেটাই আমার কাছে এই নির্বাচনের নির্যাস..।’’ তবে এইখানেই ক্ষান্ত হননি এই যুব নেতা। তাঁর হারের পিছনে তুলে ধরেন টাকার তত্ত্ব। পরিশ্রমে নিজের ১০১% দিয়েছি। যা করতে পারি তার বেশি করেছি।… নিজেদের সবটা দেওয়ার পরেও অর্থের কাছে হেরে গিয়েছি। এত কোটি কোটি টাকার বিরুদ্ধে আমাদের স্বল্প ক্ষমতার লড়াই ব্যর্থ হয়েছে।” আবার অন্যদিকে দুষছেন তৃণমূলের সংগনকেই।

তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন নন্দীগ্রাম-ময়নার বাকচা অঞ্চলে তৃণমূল নাম উচ্চারিত হলে মারধর, এমনকি প্রাণহানিও সেখানে নতুন নয়। দলের ঝান্ডা বাঁধার লোক অবধি সেখানে নেই। সেই পরিস্থিতে সবটা এতটা একপেশে হয়ে গিয়েছিল, এক সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল এই নির্বাচন এখন লড়া, না লড়া সমান ব্যাপার। তবুও আমরা হাল ছাড়িনি! পরিস্থিতির সুযোগে আমার বিপরীতের প্রার্থী আধা বেলা প্রচার না করেও জিতে গিয়েছেন.. আর আমি পাগলের মত বুথ বুথ ঘুরেও জিততে পারিনি।’’

যদিও এই পোস্ট প্রকাশ্যে আসার পরই ঘরে বাইরে সমালোচনার মুখে যুব নেতা। প্রসঙ্গত বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে ৭৭ হাজার ৭৩৩ ভোটে হেরেছেন। তারপরেই দিদির বকা খেয়ে ফোঁস করে উঠেছেন তিনি। আর তাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও তৃণমূল এই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ।