বিশেষ প্রতিবেদন: চিন পাহাড় দিয়ে সীমান্তে হামলা চালায়, করোনার উৎসস্থল চিন , তারা নাকি মেঘ চুরি করে, চিনা মাঞ্জায় কলকাতার মা ফ্লাইওভারে প্রায়ই গলা কেটে যায় বাইক আরোহীর, বাংলাতে তারা বৃষ্টিও পাঠায়। পঞ্চম কথাটি পরে চমকে গেলেন তো? হ্যাঁ, তারা এই ‘বজ্জাতি’ করতেও সক্ষম। এবং তার ফল দ্রুতই পেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। একেই বৃষ্টিতে নাকাল রাজ্য এবার উটকো চিন্তা আরও বাড়াচ্ছে চিনা বৃষ্টি।
হ্যাঁ, চিনা মাঞ্জার মতো একে চিনা বৃষ্টি বলা যেতেই পারে৷ কারণ, দক্ষিণ চিন সাগরে ঝড়ের (Cyclonic) জন্য একসঙ্গে দুটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে শীঘ্রই, যার কুফল বাংলা বুঝবে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকেই। ওডিশার আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এই ঘূর্ণাবর্তদ্বয়ের সম্ভাব্য অভিমুখ বাংলা-ওডিশা উপকূল।
চিনা বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে কীভাবে ? আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণ চিন সাগর থেকে টাইফুন তৈরি হয়, যেমন সম্প্রতি চানচু নামে এমনই একটি টাইফুন তৈরি হয়েছিল সেখানেই। এই ডিপ্রেশন বা নিম্নচাপের অবশিষ্ট অংশ বঙ্গোপসাগরে চলে আসার ঘটনা ঘটে থাকে। তেমনই একটি ঝড় আবারও তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ চিন সাগরে। যা ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মায়ানমার দিয়ে যাবে। স্থলভাগে এলে শক্তি হারাবে। আবার সেটি জলের স্বাদ পাবে বঙ্গোপসাগরে পড়লেই। আর এর সম্ভাবনা বেশি। সেখান দিয়েই তা পূর্ব উপকূল বরাবর যাবে। ফলে ভুগবে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওডিশা। ২৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ রবিবার থেকেই হইহই করে বাড়বে বৃষ্টি।
পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নতুন একটি ঘূর্ণাবর্তের তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে যা ওডিশা-বাংলা উপকূলের দিকেই সরার ইঙ্গিত মিলেছে। দুয়ে মিলে আবারও নাস্তানাবুদ অবস্থা হতে চলেছে বাংলার তা স্পষ্ট।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গনেশকুমার দাস জানিয়েছেন, “উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে থাকা ওই বিশাল ঘূর্ণাবর্ত এখন বাংলাদেশ উপকূলের দিকে বেশিরভাগটাই সরে গিয়েছে তবে মৌসুমী অক্ষরেখা এখনও কিছুটা দক্ষিণবঙ্গের দিকে , পাশাপাশি আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত আবারও সাগরে তৈরি হচ্ছে, যা বাংলা-ওডিশা উপকূল দিয়ে আসতে পারে। সাগরে আরও একটি অন্য ঘূর্ণাবর্তও আসতে পারে। তাই আবারও আর্দ্র বাতাস রাজ্যে ঢুকছে তাই বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছেই। পাশাপাশি বৃষ্টি কম হলে থাকবে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি।”
মঙ্গলবার দিনভর ৮৪.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। বুধবার সারাদিনে ১৭.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ১৬.৬ মিলিমিটার। বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক রয়েছে কলকাতার তাপমাত্রা। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি কম। আর্দ্রতার পরিমান সর্বোচ্চ ৯৮ শতাংশ, সর্বনিম্ন ৯১ শতাংশ।