SUCI-এর জন্য ঢালাও ‘ডিম্ভাত ব্যবস্থা’ তৃ়ণমূলের, নেতৃত্বের একাংশ বলছেন ‘উপরের নির্দেশ’

ব্রিগেডে ‘একক ক্ষমতায় সমাবেশ’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন SUCI দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। তবে সমাবেশে ঢালাও ‘ডিম্ভাত ব্যবস্থা’ করেছে শাসক দল তৃণমূল…

ব্রিগেডে ‘একক ক্ষমতায় সমাবেশ’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন SUCI দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। তবে সমাবেশে ঢালাও ‘ডিম্ভাত ব্যবস্থা’ করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি শাসকদলের একাংশ নেতার। দেড় হাজার ডিমের ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে এসইউসিআইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখছে সিপিআইএম, বিজেপি, কংগ্রেস।

তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে লাগাতার সিপিআইএমকেই নিশানা করেছেন SUCI সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। তুলনায় তিনি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে তেমন আক্রমণ করেননি। সমাবেশের পর তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ SUCI-কে অভিনন্দন জানান। তাঁর শুভেচ্ছা নিয়েও রাজনৈতিক বিতর্ক প্রবল।

SUCI

এদিকে সমাবেশে ঢালাও সাহায্যের বিষয়ে SUCI-এর দাবি, লক্ষ লক্ষ সমর্থক আসবেন ধরে নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রশাসনিক সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। কারণ, সমাবেশে আসা সমর্থকদের থাকার জন্য যে যে স্টেডিয়াম নেওয়া হয়েছিল তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হয়। এটাই নিয়ম। SUCI আরও জানিয়েছে, এর আগে বাম জমানার সময় সমাবেশ উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তবে হাজার হাজার ডিম সরবরাহ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি SUCI নেতৃত্ব। তৃ়নমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের একাংশের দাবি, শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশ অনুযায়ী যা করার তা করা হয়েছে।

১৯৮৮ সালের পর ২০২৩ সালে SUCI দ্বিতীয় দফায় তাদের ব্রিগেড জনসভা করেছে। দলটির প্রতিষ্ঠাতা শিবদাস ঘোষের জন্মশতবার্ষিকীতে এই সমাবেশ বলে দাবি করা হয়। ২৬টি রাজ্যের প্রতিনিধি ও সমর্থকরা এসেছিলেন। এই সমাবেশ থেকে লাগাতার সিপিআইএম ও বামফ্রন্টের বাকি শরিকদলগুলিকে (আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই) লাগাতার আক্রমণ করেছেন SUCI সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। তিনি বলেন,  ‘সিপিএম, সিপিআই এর ভূমিকা সম্পূর্ণ মার্কসবাদ বিরোধী। বন্ধু সেজে শত্রু শিবিরে ঠেলে দেয়। এরা আপন করতে জানেনা। এই পার্টির গোড়ায় গলদ। এদের নেতারা জ্ঞান, সৎ, পান্ডিত্য থাকা সত্ত্বেও মার্কাসবাদের মধ্যে নেই।’

SUCI

সমাবেশ থেকে শাসকদল তৃ়নমূলকে বিঁধলেও রাজনৈতিক পর্যালোচনায় উঠে আসছে যতটা সিপিআইএমকে নিশানা করেছেন প্রভাস ঘোষ ততটা আক্রমণাত্মক তিনি ছিলেন না তৃণমূলের প্রতি। 

সমাবেশে প্রভাস ঘোষের ভাষণে বারবার সিপিআইএমকে নিশানা আর তৃণমূল সম্পর্কে ‘নরম’ কেন এসইউসিআই? এই বিতর্কে উঠে আসছে তৃণমূলের সাথে এসইউসি জোটের পুরনো প্রসঙ্গ। এই জোট করেই ২০০৯ সালে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ পেয়েছিল এসইউসি। পরে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনে প্রথম নামে দলটির ছাত্র যুব সংগঠন। পরে তাদের মদত নেয় তৃণমূল কংগ্রেস।

SUCI

শনিবার SUCI দলের ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক চর্চা চলেছে। কারণ এই ‘ছোট’ দলটি ষাটের দশকে রাজ্যে প্রথম অ-কংগ্রেসি যুক্তফ্রন্ট সরকারের শরিক ছিল। পরে সরকার ছেড়ে বেরিয়ে যায় তারা। এরপর টানা সাড়ে তিন দশকের বামফ্রন্ট জমামায় লাগাতার বিরোধী আন্দোলন করে নিজেদের দুটি বিধানসভা আসন ধরে রেখেছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ও জয়নগর দুটি কেন্দ্র ছিল এসইউসিআইয়ের ঘাঁটি।  এর বাইরে আর না বাড়লেও দেশজুড়ে সংগঠন আছে। রাজ্যে রাজনৈতিক মহলে এসইউসিআই ‘কুলতলি জয়নগরের পার্টি’ বলেও একসময় কটাক্ষের শিকার হতো। বাম জমানায় ১৯৮৮ সালে প্রথম ব্রিগেড মিটিং। আর ২০২৩ সালে হলো দ্বিতীয় ব্রিগেড।