Behala Accident: উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রীর ফোন মুখ্যসচিব-সিপি কে, দিলেন কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

সকাল থেকেই রণক্ষেত্র বেহালা (Behala Accident)। বেহালার স্কুল ছাত্র এবং তার বাবাকে পিষে দিয়ে পালিয়ে যায় লরির চালক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই শিশুর। এরপরই এলাকার…

সকাল থেকেই রণক্ষেত্র বেহালা (Behala Accident)। বেহালার স্কুল ছাত্র এবং তার বাবাকে পিষে দিয়ে পালিয়ে যায় লরির চালক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই শিশুর। এরপরই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর সাঁতরাগাছির কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ধরা হয় ঘাতক লরির চালককে। পরিস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিব (Chief Secretary) হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনার (Kolkata Police Commissioner) বিনীত গোয়েলকে ফোন করেন। এছাড়াও জানা গিয়েছে যে এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন। আলাদা করে রিপোর্ট চেয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতরও।

শুক্রবার সকালে বেহালার উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশ কমিশনার এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্তারা। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন যে কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল এবং কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কলকাতার অন্যতম বেহালা চৌরাস্তা মোড়ের চারিদিকে শুক্রবার সকালে আতঙ্কিত জনতার দৌড়। পুলিশের উপর হামলারও অভিযোগ ওঠে। দুর্ঘটনায় (Behala Accident) জোড়া মৃত্যুর প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত ব্যস্ত বেহালা চৌরাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ থাকেই না। তারা আরও বলছেন, আজ যে গাড়িটা ধাক্কা মেরে পালিয়েছে সেটা ইচ্ছে করলেই আটকাতে পারত পুলিশ। টাকা খেয়ে সব চেপে দিতে চায় পুলিশ। জানা যাচ্ছে বেহালা থেকে বেরিয়ে গেলেও ঘাতক লরিটি ও চালককে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাবলাতলা থেকে আটক করেছে হাওড়া ট্রাফিক পুলিশ। এদিকে বেহালায় তীব্র উত্তেজনা।

উত্তেজনা বাড়ে পুলিশের লাঠিচার্জে। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়তে থাকে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মহিলা, শিশু সবাইকেই লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছে। কোনও মহিলা পুলিশও এলাকায় নেই। পরে ঘটনা বেগতিক দেখে মহিলা পুলিশ আনানো হয়।

সাত সকালে কলকাতায় লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় ৫ বছরের শিশু ও তার বাবার। বেহালার চৌরাস্তার কাছে বড়িশা স্কুলের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। বেপরোয়া গতির বলি হতে হয় বাবা-ছেলেকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি হয় বেহালায়। ডায়মন্ড হারবার রোড সহ আশপাশের সব রাস্তাই অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা আগুন লাগিয়ে দেয় পুলিশের গাড়িতে। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিরাট পুলিশ বাহিনী।বেহালা চৌরাস্তার মতো এলাকায় এমন একটি দুর্ঘটনায় পুলিশের দিকেই আঙুল তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার সকালে ঘটনার পর স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার মানুষ ও বড়িশা স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। স্কুলের সামনে পড়ুয়াদের সুরক্ষা কোথায়, এই প্রশ্ন তুলেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা।

অভিযোগ, ওই রাস্তায় ট্রাফিকের কোনও নিয়ম মানা হয় না, সে দিকে কোন নজরই নেই পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগও জানাচ্ছেন তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ টাকা নেয় বলেই ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায় লরি। তার জেরেই আজকের এই ঘটনা ঘটেছে। অভিভাবকরা প্রশ্ন করেন, “আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা কোথায়? তারা জানিয়েছেন, একদিন নয়, বারবার এমন ঘটনা ঘটছে, পুলিশ প্রশাসনের ভ্রুক্ষেপ নেই।”

পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। প্রথমে পুলিশ ভ্যান ও পরে বাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ভাঙচুর চালানো হয় বাসে। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় লাঠিচার্জ করে পুলিশ। নামানো হয় র্যা ফ। কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়েও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খায় পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।