Bengali Theatre: বাংলা থিয়েটারে ‘মোলেস্টাররা’ দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে: দামিনী বেণী বসু

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: তিনি নিজেকে ‘নাটকের বাড়ির মেয়ে’ বলে উল্লেখ করলেন! যতক্ষণ কথা হলো, ততক্ষণই তিনি নিজেকে একবারের জন্য অভিনেত্রী কিংবা অভিনয় প্রশিক্ষক বলে উল্লেখ করলেন…

benny basu

আদিত্য ঘোষ, কলকাতা: তিনি নিজেকে ‘নাটকের বাড়ির মেয়ে’ বলে উল্লেখ করলেন! যতক্ষণ কথা হলো, ততক্ষণই তিনি নিজেকে একবারের জন্য অভিনেত্রী কিংবা অভিনয় প্রশিক্ষক বলে উল্লেখ করলেন না। এপ্রিলের ভ্যাপসা গরমে তখনও বিকেল নামেনি, সেই অস্বস্তিকর পরিবেশে বেশ খাটাখাটনির পরে তাঁর নম্বর জোগাড় করে কথা বলা গেল। প্রথমে ভেবেছিলাম তিনি বুঝি পাবলিক ফোরামে মুখ খোলার জন্য ভয় পেয়েছেন কিন্তু পরে বুঝলাম তিনি ভয় পাওয়ার মানুষ না! ভয় তাঁকে গ্রাস করতে পারবে না।

একটু পিছনে ফিরে যায়, গত বৃহস্পতিবার একটি বাংলা দৈনিকের অনলাইন পোর্টালে তাঁর একটি লেখা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই আলোড়ন পরে যায় । টিনের তলোয়ার নাটকে সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের প্রবেশ নিয়ে তিনি সরব হন। কে এই সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়? একজন শিক্ষক তথা নাট্যভিনেতা এবং নাট্য পরিচালক! কিন্তু তিনি কেন শিরোনামে ? ২০১৯-এ ধর্ষণের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে ফুলবাগান থানার পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি ছিল, জেরার মুখে ওই নাট্য ব্যক্তিত্ব স্বীকারও করেছিলেন ধর্ষণের ঘটনা। বিষয়টি এখন আদালতের অধীনে। এবার আসি তাঁর প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে! ‘টিনের তলোয়ার’ নাটকে প্রথম উপস্থাপনার দিন সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের মঞ্চে ফেরা নিয়ে ডামাডোল শুরু হয়। আর এই নাটকের নির্দেশক হলেন সুমন মুখোপাধ্যায় যাকে বাংলা থিয়েটার লাল নামে ডেকে থাকে।

দামিনীর কথায়,” এই মানুষগুলো কেন ফিরবে ? এদের ফেরার অধিকার কে দিয়েছে?” কথাগুলো যখন বলছিলেন তখন তাঁর ভেতরের ক্ষোভটা স্পষ্ট বেরিয়ে আসছিল। তিনি আরও বললেন, ” কত কত মেয়েদের চিৎকার, আত্মসম্মান এরা নষ্ট করে বসে আছে!” একটু থেমে তিনি আরও বললেন, ” বাংলা থিয়েটারে ‘মোলেস্টাররা’ দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে!” জিজ্ঞাসা করলাম, ” আপনি কাদের কথা বলছেন?” তিনি উত্তর দিলেন, ” আসলে আমরা দু’এক জনের নাম জানি যারা আলোর নীচে এসেছে! আসলে তাঁরা তো বিদেশ ফেরত তাই তাঁরা নাম পেয়েছে। এদের বাইরেও আরও কত কেউ আছে, যারা মেয়দের শরীর নিয়ে ছেলেখেলা করেছে।শুধু মেয়ে কেন, ছেলেরাও বাদ যায়না।” উনি কথাগুলো একটানা বলে গেল। শেষে একটু হাঁপ ছেড়ে দীর্ঘশ্বাস নিলেন।

তিনি বিরক্তিপ্রকাশ করে কলকাতা ২৪*৭কে ফোনে জানালেন, ” লালদার মতো মানুষ কী করে এটা করল ?” একটু থেমে তিনি আরও বললেন, ”ব্যক্তিগত পরিসরে উনি বন্ধুত্ব দেখাতেন সেটা আলাদা ব্যাপার! কিন্তু এটা থিয়েটারের মঞ্চ! এটা একটা বাড়ি।” জিজ্ঞাসা করলাম, ” আপনি কি চাইছেন ?” তিনি বললেন , ” এই খেলা বন্ধ হোক। থিয়েটারের নামে অশ্লীলতা বন্ধ হোক। সুযোগ পেলে গায়ে হাত দেওয়া বন্ধ হোক। মেয়েদের যেন আর চিৎকার না করতে হয়।”

দামিনী আরও অভিযোগ করেন, তিনিও একটা সময় মোলেস্ট হয়েছেন! তবে সেই সময় তিনি চিৎকার করতে পারেননি। ভয়ে লজ্জায় চুপ ছিলেন। কারণ যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছিল তাঁদের তিনি কাকু, জ্যেঠু বলে ডাকতেন। তাই তিনি কষ্টটা জানেন। তাই তিনি চান সেই চিৎকার আর যেন কোনও মেয়েকে না করতে হয়।প্রসঙ্গত এই বিষয়ে সুমন মুখোপাধ্যায়কে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তর দেননি। সবশেষে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, ” আপনি কি গত ২৪ ঘণ্টায় আপনি কোনও থ্রেট কল পেয়েছেন ?” তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ” আমাকে কে থ্রেট দেবে ?”