বিষ্ণুপুরের সদ্যজয়ী সাংসদ সৌমিত্র খান বিজেপির (BJP West Bengal) সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন। বললেন, ‘ব্যর্থ মুখ কেউ দেখতে চায় না, নতুনদের সুযোগ দিতে হবে’ (BJP West Bengal)। ব্যর্থ মুখ বলতে তিনি কী নাম না করে বিরোধী দলনেতার দিকে ইঙ্গিত করছেন? সায়েন্স সিটিতে বিজেপির (BJP West Bengal) বর্ধিত কার্যকরণী সভাতে যোগ দিতে এসেছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। আর সেখানেই সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য।
বিজেপির (BJP West Bengal) এই বর্ধিত কার্যকরণী সভা আদতে নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের পর প্রথম বড় সভা। সেখানেই সৌমিত্রর বক্তব্য যে নির্বাচনে এই ফলাফল তাঁর কাছে অন্তত প্রত্যাশিত ছিল। সৌমিত্রর এই বক্তব্যের সম্পূর্ণ উল্টো কথাই শোনা গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। একাধিক কেন্দ্রে শোচনীয় পরাজয় নিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য ছিল যে, তাঁদের কল্পনারও বাইরে ছিল এই পরাজয়। অপরদিকে সংগঠনের পরিচালক হিসাবে নতুনদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেছেন সৌমিত্র। যা প্রকারান্তরে যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল রাজনৈতিক মহল।
যোগীকে কোণঠাসা করতে উত্তরপ্রদেশ থেকেই সভাপতি চাইছেন মোদীরা?
বিজেপির এই সভায় নির্বাচনী পরাজয়ের দায় নিজের ঘাড় থেকে কার্যত ঝেড়েই ফেলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সাংগঠনিক বিষয়ে তিনি কোন সিদ্ধান্ত নেন না, এই বলেই তিনি সমস্ত দায় সারতে চেয়েছেন বলেই অনেকের অভিমত। অপরদিকে সংগঠনের বিষয় বক্তব্য নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল কে দিল্লিতে গিয়ে যা জানাবার জানিয়েছেন বলে বলেছেন। ফলে রাজনৈতিক মহলের কাছে এটা পরিষ্কার যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অভিযোগের একটা আবহাওয়া তৈরি হয়েছিল শুভেন্দুর বিরুদ্ধে, তা কার্যত নস্যাৎ করতে চেয়েছেন তিনি।
কিন্তু বঙ্গের বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দিকে বরাবরই অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র। ব্যর্থ মুখ দেখতে না চাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে নাম না করে আদতে শুভেন্দুকেই খোঁচা বলে বলছেন অনেকে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বিষয়ে দলের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ বা অসন্তোষের কথা বলেছেন তিনি। তবে তাঁর পরিষ্কার বক্তব্য যে নির্বাচনের এই ফলাফলকে মোটেও খারাপ ফলাফল বলা যাবেনা। উদাহরণ হিসেবে তিনি ২০০৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তার পরিষ্কার বক্তব্য এই ফলাফল প্রত্যাশিতই ছিল, ২০২৬ এর বিধানসভার লক্ষ্যে সামনে এগোতে হবে।
Amit Shah: “বেনিয়ার ছেলে আমি, সব হিসেব রাখি” – শাহর হিসেব পারবে রাজ্যের বিজেপিকে বাঁচাতে?
যদিও লোকসভা নির্বাচনের পরপরই সৌমিত্রকে নিয়ে বঙ্গের রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়। তৃণমূলে নেতাদের কথাতে সৌমিত্রর তৃণমূলে যোগদানেরও জল্পনা ছড়ায়। যদিও সৌমিত্র বরাবরই সমস্ত বিষয়কে গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এটাও ঠিক যে একসময় তৃণমূলে থাকার সুবাদে তৃণমূল সুপ্রিমোরও খুব ভরসার পাত্র ছিলেন তিনি।
কিন্তু বিষ্ণুপুরের সদ্যজয়ী সাংসদ সংসদে গিয়েই বিজেপির হয়ে ভালো পারফরমেন্স দেখিয়েছেন বলে বলছেন অনেকে। সংসদে রীতিমতো তৃণমূলকে তুলোধোনা করে তাঁর সাম্প্রতিক বক্তৃতা সবারই নজর কেড়েছে। এবার বিজেপির এই বিশেষ সভায় সংগঠন ঢেলে সাজানোর পক্ষে তাঁর সওয়াল, দিল্লির নেতাদের কতটা নজর কাড়বে, সেটাই দেখার বিষয়।