সিআইডি রাশিয়ান রাসায়নিক স্প্রে করেছে, সেই সন্দেহে চিকিৎসকের কাছে অর্জুন

বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ (Arjun Singh) শনিবার এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ভবানী ভবনে সিআইডি তাঁকে জেরার সময় ‘রাশিয়ান রাসায়নিক’ প্রয়োগ করে…

Arjun Singh visits the doctor on suspicion of CID using Russian chemical spray.

short-samachar

বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহ (Arjun Singh) শনিবার এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ভবানী ভবনে সিআইডি তাঁকে জেরার সময় ‘রাশিয়ান রাসায়নিক’ প্রয়োগ করে থাকতে পারে। আর এর ফলে তাঁর শরীরে বিষক্রিয়া ঘটে থাকতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। সেই কারণে তিনি শনিবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন।

   

অর্জুন সিংহের কথায়, “শরীরে যদি কোনো বিষক্রিয়া ঘটে থাকে, তা পরীক্ষা করে দেখতে চাই। এমন কিছু হয়, যা সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না। তবে যদি কিছু ঘটে থাকে, সেটা জানিয়ে নিতে হবে।” এ দিন হাসপাতালের দিকে রওনা দেওয়ার সময় বারাসতের প্রাক্তন সাংসদ বলেছেন, “আজ টেস্টটা করিয়ে নিই। কী আছে না আছে শরীরে, দেখি।”

মেডিক্যাল কলেজের শিশু ওয়ার্ডে ভয়াবহ আগুনে ১০ নবজাতকের মৃত্যু

সেইসঙ্গে তাঁর দাবি, যদি তাঁর শরীরে বিষক্রিয়ার কোনো প্রমাণ মেলে, তবে তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। তিনি আরও বলেন, “যদি রাশিয়ান রাসায়নিকের ব্যবহার প্রমাণিত হয়, তবে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অর্জুন সিংহের অভিযোগ, সিআইডি তাঁকে টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় জেরা করার জন্য ভবানী ভবনে ডেকে পাঠিয়েছিল।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর অর্জুন সিংহ বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে চার কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, যা সিআইডি তদন্ত করছে। তবে অর্জুনের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ৩৬৫টা মামলা করেছে তৃণমূল। কিন্তু ৩৬৫ মিনিটও তাঁকে জেলে রাখতে পারেনি।

২০২৫ সালেই অর্থনীতিতে জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত, রিপোর্ট Japan Times’র

বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, “তৃণমূলে তো আমি গুডবয় ছিলাম। স্বয়ং মমতাদিই বলেছেন। আর আজ বিজেপি করায় দুর্নীতিবাজ? চারশো কোটি টাকা হলে দেখা যেত, মাত্র চার কোটি টাকার দুর্নীতি মামলায় কিনা অর্জুন সিংহকে তলব!” অর্জুন সিংহ আরও দাবি করেছেন, সিআইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার সময় তিনি চা-কফি তো খাননি এমনকি জলও স্পর্শ করেননি।

কারণ তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যে, চা বা জলে বিষ মেশানো থাকতে পারে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, “বাইরে থেকে আনা রাশিয়ান রাসায়নিক বা অন্য কোনো কেমিক্যাল পানীয়তে মিশিয়ে দেওয়া থাকতে পারে, যার ফলে ধীরে ধীরে মৃত্যু হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “এমনকি, চেয়ারের পাশে কিছু স্প্রে করা হলেও কিছু দিন পর মারা যেতে পারেন ওই ব্যক্তি।”

বিয়ের মরশুম শুরুর আগেই বাড়ল হীরের চাহিদা, কলকাতায় কত রেট জানেন?

অর্জুনের দাবি, তার শরীরে কোনো বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিললে তিনি সেসব তথ্য আদালতে তুলে ধরবেন। এমন একটি অস্বাভাবিক অভিযোগের পর তৃণমূল শিবির থেকেও প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অর্জুন সিংহের অভিযোগ নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, “কোন কেমিক্যাল মানুষের জন্য ক্ষতিকর, কোনটা কীভাবে ক্রিয়া করে, এই বিষয়টি অর্জুন সিংহ ভালোই জানেন।”

তবে অর্জুন সিংহ তাঁর বক্তব্যে আরও জোর দিয়ে বলেন, “রাশিয়ান রাসায়নিকের স্মাগলিং নিয়ে অনেকেই জানেন, কিন্তু সাহস করে কেউ কিছু বলেন না। যারা পড়াশোনা করে, তারা জানে এই ব্যাপারে।” এখন প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি অর্জুন সিংহের শরীরে কোনো ধরনের রাসায়নিক মেশানো হয়েছিল? নাকি তাঁর এই অভিযোগের পেছনে লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোন বিষয়?

৪০ বছর পর হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বন্ধ যান চলাচল

তাঁর অভিযোগ তদন্তের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হবে। তবে একথা নিশ্চিত যে, এই বিষয়টি রাজ্য রাজনীতিতে নতুন এক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। অর্জুন সিংহের এমন অভিযোগের পর চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি শারীরিক পরীক্ষার পর যদি কিছু প্রমাণ মেলে তাহলে তা রাজনৈতিক মহলে আরেকটি বড় আলোড়নের সৃষ্টি করবে।