মমতার কড়া সিদ্ধান্তেই জোগান বাড়িয়ে সস্তা হচ্ছে আলু ?

মাছে-ভাতের’ পরে বাঙালিকে যদি আর কোনও নামে ডাকা যায় তাহলে সেটা অবশ্যই হবে ‘আলু-ভাতে’ বাঙালি (Mamata Banerjee)। কিন্তু ক্রমবর্ধমান আলুর দামে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম…

Image of Mamata Banerjee, the Chief Minister of West Bengal, with a serious or determined expression, accompanied by a caption indicating she has issued an order or directive to her cabinet or government officials.

মাছে-ভাতের’ পরে বাঙালিকে যদি আর কোনও নামে ডাকা যায় তাহলে সেটা অবশ্যই হবে ‘আলু-ভাতে’ বাঙালি (Mamata Banerjee)। কিন্তু ক্রমবর্ধমান আলুর দামে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সবাইকে (Mamata Banerjee)। মাসকয়েক আগেও যে আলুর দাম ছিল ২৫-২৬ টাকা, এখন তাই ৪০ ছুঁই ছুঁই। নবান্নের সভাতে মুখ্যমন্ত্রীও (Mamata Banerjee) এই বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উৎপাদন থেকে যোগান সবই ঠিকঠাক থাকলেও কেন এভাবে আলুর দাম বাড়ছে? কৃষি আধিকারিকদের কাছে জবাব চেয়েছিলেন তিনি।

আর এবার, আলু মজুতকারী কোল্ড স্টোরেজের সংগঠন এই বিষয়ে বড় পদক্ষেপ নিল। ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে। প্রস্তাব অনুযায়ী তাঁরা রাজ্য সরকারকে ২৬ টাকা কিলো দরে আলু সরবরাহ করবে। বুধবার এই বিষয়ে একটি বৈঠকে বসেন সমিতির সদস্যরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় ৫০ কেজি বস্তা প্রতি ১৩০০ টাকা দরে তাঁরা রাজ্য সরকারকে আলু সরবরাহ করবেন।

   

BJP West Bengal: সৌমিত্রর নজরে ‘ব্যর্থ মুখ’ কে? কাকে সরানোর পক্ষে রায় বিষ্ণুপুরের সাংসদের!

সমিতির হুগলি ইউনিটের এক আধিকারিকের মতে, এই মুহূর্তে তাঁরা ২৮ থেকে ২৯ টাকা কেজি দরে আলু সরবরাহ করছেন। তাঁর বক্তব্য যে, নিজেদের মতো করে ডিস্ট্রিবিউশন করবার মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই। কিন্তু তাঁরা সরকারের জন্য প্রতিদিন ৩ লক্ষ কুইন্টাল আলু গোটা রাজ্য থেকে ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। কলকাতার বাজারে বেশিরভাগ আলুই আসে হুগলি কিংবা তার আশেপাশের অঞ্চল থেকে। ফলে এই তিন লক্ষ কুইন্টাল আলুর বেশিরভাগটা হুগলির বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ থেকেই আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বর্তমানে খুচরো বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৭ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। তবে রাজ্য সরকারের সুফল বাংলা স্টোরে দামটা বেশ কিছুটা কম। এখানে ২৯ টাকা দরে আলু এবং ৩৯ টাকা কিলো দরে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সুফল বাংলা স্টলে কিন্তু আপনি যত ইচ্ছা তত আলু বা পেঁয়াজ নিতে পারবেন না। পরিবার পিছু তিন কেজি করে আলু এবং এক কেজি করে পেঁয়াজ পাওয়া যায় এই সরকারি স্টলগুলিতে।

রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী বেচারাম মান্না জানান, গত সপ্তাহেই আরও ২৫ টি নতুন সুফল বাংলার স্টল খোলা হয়েছে রাজ্যজুড়ে। এর আগে থেকেই রাজ্যে প্রায় ৪০০ এরও বেশি সুফল বাংলা স্টল রয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা নগণ্য বলেই মত সাধারণ মানুষের। তবে সুফল বাংলা স্টলের আলুর দামের প্রভাব খোলা বাজারেও পড়বে বলে মত কৃষি আধিকারিকদের।

চোর সন্দেহে মধ্যযুগীয় বর্বরতা, মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কাটা হল বাবা, মা, ভাইয়ের চুল

রাজ্যে প্রায় ৫৮৮টি কোল্ড স্টোরেজ আছে।যেখানে বছরে গড়ে প্রায় ৬০ লাখ টনেরও বেশি আলু মজুত রাখা যায়। গড়ে প্রতিবছর বাংলায় আলুর উৎপাদন প্রায় ১১০ লক্ষ কুইন্টালেরও বেশি। এছাড়াও আরো ১৭ টি নতুন কোল্ড স্টোরেজের ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। যেখানে চাষীরা প্রায় ১৭ হাজার মেট্রিক টন আলু অতিরিক্ত মজুত করতে পারবেন। তা সত্ত্বেও বাজারে কেন দাম বাড়ছে আলুর? নবান্নের সভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা।

এইসঙ্গে তিনি তাঁর আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে কোনভাবেই মজুত করার সময়ের এক্সটেনশন দেওয়া না হয়। এবার কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের নতুন সিদ্ধান্ত কী তারই ফলাফল? সেই সম্ভাবনা কিন্তু একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সুফল বাংলা স্টলে আলুর যোগান আরও বাড়লে কিছুটা হলেও হয়তো সুরাহা মিল। আলু প্রিয় আমজনতার বাজারের থলে হাতে নতুন গন্তব্য হয়ত হতে চলেছে সুফল বাংলার স্টল।