‘কে ক্ষমতায় আছে জানে না’! মৌলবাদীদের যোগী হুঙ্কার

লখনৌ ২৭ সেপ্টেম্বর: নবরাত্রির শুভ মুহূর্তে রাজ্যের মানুষকে নয়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Yogi Adityanath)। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যবাসীকে বার্তা দিয়েছেন যে বা যারা সাম্প্রদায়িক…

Yogi Adityanath

লখনৌ ২৭ সেপ্টেম্বর: নবরাত্রির শুভ মুহূর্তে রাজ্যের মানুষকে নয়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Yogi Adityanath)। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যবাসীকে বার্তা দিয়েছেন যে বা যারা সাম্প্রদায়িক হিংসাকে উস্কানি দেবে তাদের ছেড়ে কথা বলা হবে না। এই সুস্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি রাজ্যের শান্তি-স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, রাজ্যের যেকোনো জেলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার চক্রান্তকারীদের একটিও ছাড় দেওয়া হবে না।

Advertisements

বরেলি, কানপুর এবং বারাণসীর মতো জেলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনার পর এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই কঠোর অবস্থান রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া একটি পদক্ষেপ। গতকাল বরেলিতে একজন মৌলানার ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ স্লোগানের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় ২৫ জনেরও বেশি গ্রেফতার হয়েছে।

   

মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনাকে ‘সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, “বরেলিতে গতকাল একজন মৌলানা ভুলে গিয়েছেন যে রাজ্যে কে ক্ষমতায় আছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, দশেরা অশুভ শক্তি নির্মূলের উৎসব হিসেবে পরিচিত, এবং রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করতে হবে।

বৈঠকে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, সাম্প্রদায়িক টেনশন প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং নির্দেশনাগুলো অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত করতে হবে। দুর্গাপুজো এবং রাবণ দহন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা সর্বোচ্চ স্তরে রাখার জন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেমন অতিরিক্ত বড় মূর্তি এড়ানো এবং বিকল্প বিসর্জন স্থানের ব্যবস্থা।

এই সতর্কতা উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রদায়িক ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ইতিহাস দীর্ঘ, যেমন ১৯৪৭-৪৮ সালের সাম্ভল দাঙ্গা যাতে ১৮৪ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার ২০১৭ সাল থেকে এই ধরনের ঘটনা দমনের জন্য কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে।

সমাজবাদী পার্টির মতো বিরোধী দলগুলোকে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তারা দশকের পর দশক ধরে হিন্দুদের উপর সহিংসতা উপেক্ষা করে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাহরাইচ এবং সাম্ভলের দাঙ্গায়ও মুখ্যমন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যেখানে একটি হত্যাকাণ্ডের পর ভুক্তভোগীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, বাড়ি এবং চাকরির সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, গ্যাংস্টার অ্যাক্টের অধীনে ১৪,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা অপরাধীদের উপর শক্তিশালী চাপ সৃষ্টি করেছে।

যোগী সরকারের এই নীতি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে। ২০১৭ সালের পর অপরাধের হার ৮৫ শতাংশ কমেছে, এবং মাফিয়া নেটওয়ার্কের উপর কঠোর অভিযান চালানো হয়েছে। মিশন শক্তি ৫.০-এর অধীনে শারদীয়া নবরাত্রিতে মহিলা নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, এবং গারবা-ডান্ডিয়া অনুষ্ঠানে ছদ্মবেশী অপরাধীদের প্রবেশ প্রতিরোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বক্স অফিসে ‘রঘু ডাকাত’কে কি জব্দ করল রক্তবীজ ২

মুখ্যমন্ত্রী গরু পাচার এবং স্লটারহাউসের বিরুদ্ধেও কঠোরতা অবলম্বন করেছেন, যাতে পুলিশের অধীনস্থ কর্মকর্তারা অকস্মাৎ পরিদর্শন করবেন। সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি এবং গুজব ছড়ানোদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, জাতিগত সংঘাতের চেষ্টা প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।