মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতী (Uma Bharti) সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিও-র (Viral Video) কারণে সমস্যায় পড়েছেন। এই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মহিলা আইপিএস অফিসার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতীকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করছেন। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে উমা ভারতীর ব্যক্তিগত সচিব উমেশ গর্গ ক্রাইম ব্রাঞ্চে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বিস্তারিত:
উমেশ গর্গের অভিযোগের ভিত্তিতে, ক্রাইম ব্রাঞ্চ ভারতীয় দণ্ডবিধির 336(4) এবং 356(2) ধারায় অজ্ঞাত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভিডিওটির মাধ্যমে উমা ভারতীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। গর্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, এই বিষয়টি তদন্তের আওতায় এসেছে।
ভিডিওতে কি দেখা গেছে?
ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ৪৫ সেকেন্ড। এতে বলা হয়েছে, “এটি এমন একজন আইপিএস অফিসার যিনি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পরিচারিকা হিসেবে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতীর অন্ধকার কাজগুলো দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু পরে যা ঘটেছে, তা আপনাকে অবাক করে দেবে। ৪০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।”
ভিডিওতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, “যে রাজ্যে ২০০০ ব্যাচের আইপিএস অফিসার দীপা দিবাকর মুদগিল বা ডি রূপা কাজ করেন, সেখানে কেউ আইন লঙ্ঘন করতে পারে না। তিনি লাইমলাইটে আসেন যখন জানতে পারেন যে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতী জোর করে ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা চাচ্ছেন।”
এতে বলা হয়েছে, “মুখ্যমন্ত্রীকে ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার সাথে সাথে সবাই হতবাক হয়ে যায়, যখন রূপা জি তাঁর আসল চেহারা দেখান। আইপিএস অফিসার ডি রূপা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেন। এখন প্রত্যেক আইপিএস অফিসারের উচিত তাঁর কাজ সততার সাথে করা।”
ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের অভিযোগ:
এদিকে, উমা ভারতীর সেক্রেটারি অভিযোগ করেছেন যে এই ভিডিওটি ইচ্ছাকৃতভাবে ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা। তাঁর মতে, ভিডিওটিতে ছবি ও ভিডিও এডিট করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা উমা ভারতীর মানহানি করছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
এই ঘটনার পর, রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। উমা ভারতীর সমর্থকরা ভিডিওটি নিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাঁরা বলছেন, এটি একটি ষড়যন্ত্র এবং এ ধরনের অপপ্রচার নিন্দনীয়। অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষের সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং দাবি করছেন যে, এ ধরনের অভিযোগের পেছনে বাস্তবতা থাকতে পারে।
উমা ভারতী একটি পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগগুলি সাধারণ জনগণের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে। এই ঘটনাটি যে শুধু তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলবে তাই নয়, বরং মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করবে বলেও মনে করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হবে, তা সময়ই বলবে।