ভারতের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড আর বাংলাদেশে ফাঁঁসির আসামী জঙ্গি নেতা পরেশ বড়ুয়া গোপন্ ডেরা থেকে শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানালেন। জঙ্গি সংগঠন আলফা (স্বাধীনতা) / ULFA (I) গোষ্ঠীর প্রধান চিনে নাকি মায়ানমারে আত্মগোপনে আছেন তা স্পষ্ট নয়।
মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা গুয়াহাটির সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, ভারত সরকার, অসম সরকার ও আলফা (আলোচনাপন্থী) নেতাদের মধ্যে যে শান্তি চুক্তি হয়েছে তাকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। ওই নেতাদের সাথে আমার কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে প্রাক্তন আলফা জঙ্গিদের সাথে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি হয়েছে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই চুক্তি সম্পাদনের সময় প্রাক্তন আলফা জঙ্গিদের মধ্যে ছিল অরবিন্দ রাজখোয়া, অনুপ চেতিয়া সহ কয়েকজন। অনুপ চেটিয়ার নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চুক্তি সম্পাদনে প্রতিনিধিত্ব করে।
আলফার আত্নসমর্পণকারী নেতাদের সাথে শান্তি চুক্তি অনুষ্ঠিত হবার পর থেকে প্রশ্ন উঠেছিল কেন্দ্র ও অসম সরকারের দাবি করা শান্তি চুক্তি আদৌ কি মেনে নেবে পরেশ বড়ুয়া? শনিবার নীরবতা ভেঙে গুয়াহাটির সংবাদমাধ্যমে পরেশ বড়ুয়া এই শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানায়। এরপরেই আলোচনা তীব্র, এবার কি মোস্ট ওয়ান্টেট জঙ্গি নেতা আত্মসমর্পণ করবে? তবে এ বিষয়ে কিছু ইঙ্গিত দেয়নি বড়ুয়া।
শান্তি চুক্তিতে অংশ নেওয়া প্রত্যেকেই আত্মগোপনকারী জঙ্গি নেতা পরেশ বড়ুয়ার সাথে অহম জাতিসত্তার দাবিতে একাধিক নাশকতায় জড়িত। ১৯৯০ দশকে অসমে সেনা অভিযানের জেরে বড়ুয়া সহ আলফা জঙ্গি নেতারা বাংলাদেশে আত্মগোপন করেছিল। পরে বড়ুয়া বাদ দিয়ে বাকিরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। বাংলাদেশ সরকার তাদের ভারতে পাঠিয়ে দেয়। এই আত্নসমর্পণকারী জঙ্গি নেতৃত্ব বারবার দাবি করেছে পরেশ বড়ুয়া শান্তি চুক্তির বিষয়ে নরম হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে পরেশ বড়ুয়ার ভারতে হামলার ছক: আলফা শীর্ষ জঙ্গি নেতা পরেশ বড়ুয়া বাংলাদেশ গোপনে থাকাকালীন ভারতে হামলার বিরাট ষড়যন্ত্রে জড়িত। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম থেকে দশটি ট্রাকে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ভারতে পাঠানোর আগেই ধরা পড়ে যায়। তৎকালীন বাংলাদেশের সরকারে থাকা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ও জামাত ইসলামির জোটের দুই মন্ত্রী এই আগ্নেয়াস্ত্র পাচারে জড়ুিয়ে যায়। এই দুজনের একজন মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি হয়েছে। আর ফাঁসির আসামী হয়ে জেলে বন্দি তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুতফুজ্জামান বাবর। একই মামলায় পরেশ বড়ুয়াও বাংলাদেশে ফাঁসির আসামী।
সম্প্রতি পরেশ বড়ুয়ার ঘনিষ্ঠ কেএলও জঙ্গি প্রধান জীবন সিংহ আত্মসমর্পণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গে গণহত্যা ও নাশকতা ঘটানোয় জড়িত জীবন সিংহ। ২০০৩ সালে ভুটান সরকারের সেনা অভিযানে সেদেশে থাকা কেএলও এবং আলফা জঙ্গি শিবিরগুলি ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর থেকে আলফা শীর্ষ নেতা পরেশ বড়ুয়া চিন ও মায়ানমারে থাকে বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।