নিউজ ডেস্ক: রবিবার রাতে যখন গোটা দেশ ঘুমচ্ছে সে সময় হ্যাকাররা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (narendra modi) টুইটার অ্যাকাউন্ট (twitter account) হ্যাক করে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর (pmo) এই হ্যাক করার খবর স্বীকার করে নিয়েছে।
পিএমও জানিয়েছে, কিছু সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইটার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণই অন্য কারও হাতে চলে গিয়েছিল। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণই ফেরত পাওয়া গিয়েছে। বিষয়টি টুইটার কর্তৃপক্ষকেও সঙ্গে সঙ্গেই জানানো হয়। টুইটার কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।
শনিবার (saturday) রাত ৩টে ১৮ মিনিট নাগাদ হঠাৎই প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে একটি টুইট করা হয়। ওই টুইটে জানানো হয়, ভারতে বিটকয়েনকে আইনি স্বীকৃতি দিচ্ছে। তাই বিনামূল্যে দেশবাসীর মধ্যে ৫০০ বিটকয়েন বিতরণ করা হবে। এজন্য সরকার ৫০০ বিটকয়েন কিনেছে। শুধু তাই নয়, বিটকয়েন সংগ্রহের জন্য একটি লিংকও দেওয়া হয় মোদীর টুইটারে। উল্লেখ্য, ভারতে বিটকয়েনকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই করেনি মোদী সরকার। এমনকী, কয়েক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী বিটকয়েন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
মাঝরাতে করা এই টুইটি সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেরই নজরে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই টুইটি ভাইরাল হয়ে যায়। পিএমও বুঝতে পারে প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। এরপরই দ্রুত টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পিএমও। টুইটার কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণই ফেরত পায় পিএমও।
রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। পিএমওর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার মাঝরাতে প্রধানমন্ত্রী টুইটার অ্যাকাউন্ট কিছু সময়ের জন্য হ্যাক করা হয়েছিল। তবে টুইটার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় দ্রুত ওই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণই ফিরে আসে। টুইটার কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টটি আরও সুরক্ষিত করেছে। মধ্যবর্তী ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে যে সমস্ত টুইট করা হয়েছে সেগুলি উপেক্ষা করার জন্য মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিটকয়েন নিয়ে যে টুইট করা হয়েছিল সেটিও মুছে দেওয়া হয়েছে। যদিও ওই টুইটের স্ক্রিনশট ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি, টুইটারের সিস্টেমের মধ্য দিয়ে নয়, প্রধানমন্ত্রী অ্যাকাউন্টকেই সরাসরি নিশানা করেছিল হ্যাকাররা। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বিষয়টি জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই সংস্থার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট আরও সুরক্ষিত করা হয়েছে। টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি, ভারত সরকারের আর কোনও মন্ত্রী বা শীর্ষ কর্তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার কোনও খবর নেই। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাঁরা নিয়মিত প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ বিভিন্ন দেশের একাধিক শীর্ষ নেতার টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সেবার হ্যাকাররা যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছিল এবার আর সেভাবে টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা হয়নি। এবার শুধুমাত্র মোদীর টুইটার অ্যাকাউন্টই হ্যাক করা হয়েছে। কারা এবং কোথা থেকে এই হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করেছে তা জানতে তদন্ত চালাচ্ছে ইলেকট্রনিক্স ও কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম।